সারাদেশের সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ১ হাজার ৩ শ’৭৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। সহকারী শিক্ষক পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হওয়ায় প্রথমবারের মতো এসব পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে সরকারি কর্মকমিশন।
আগামি সোমবার (৩ সেপ্টেম্ববর) বা মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্ববর ) সহস্রাধিক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে কমিশন। এর আগে বিসিএস চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে ৩৫ তম বিসিএসে ৭ শ’৭ জন ও ৩৬তম বিসিএসে ৩শ’৪১ জনকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করেছে পিএসসি।
এ প্রসঙ্গে সরকারি কর্মকমিশন চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘আগামি সপ্তাহে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। সারাদেশের সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ১ হাজার ৩শ’৭৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হবে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশে পুরনো ও সদ্য জাতীয়করণসহ ৩শ’৪৭টি সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে সহকারী শিক্ষকের পদ আছে ১০ হাজার ৩শ’৪৪টি। এর মধ্যে ১ হাজার ৬শ’ ৯১টি পদই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।
এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীর পদও শূন্য রয়েছে প্রায় ২ হাজার। প্রধান শিক্ষক নেই প্রায় ১শ’র ওপর স্কুলে। ৪শ’৭১টি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের মধ্যে ৪শ’৬৩টি পদ শূন্য। মাধ্যমিক স্কুলে তীব্র শিক্ষক সংকট কমাতে একসঙ্গে বড় ধরনের নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। এ ছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষক থেকে সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পর্যন্ত বিভিন্ন পদে ৪শ’২৩ জনকে পদোন্নতির তালিকাও প্রায় চূড়ান্ত করেছে কমিশন।
মাউশির তথ্যানুযায়ী, ২০১২ সাল থেকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে কারিকুলাম ও সিলেবাস পরিবর্তন করা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি, শারীরিক শিক্ষা, কর্মমুখী শিক্ষা, চারু ও কারুকলা নতুন এ ৪টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে এক বিষয়ের শিক্ষককে পাঠদান করতে হচ্ছে অন্য বিষয়ে। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের শূন্যতা রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত দুরূহ হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে মামলা জটিলতায় ২০১৪ সালের ৬ জুন থেকে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। গত বছরের ৯ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট পদোন্নতির বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছেন। ওই রায়ে বলা হয়েছে, চাকরিতে যোগদানের তারিখ থেকে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করে পদোন্নতি দিতে হবে। তবে অবশ্যই বিএড ডিগ্রি থাকতে হবে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী চাকরি বিধিমালায় পদোন্নতির বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে।
পদোন্নতির ক্ষেত্রেও জটিলতা কেটে গেছে। এর পরই এপ্রিল মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা সভা করে পদোন্নতির তালিকা পিএসসিতে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।
২০১২ সালের ১৫ মে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড মর্যাদায় উন্নীত হওয়ায় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা মাউশি থেকে পিএসসিতে চলে যায়।
সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে সহকারী শিক্ষক পদে সরাসরি নিয়োগ দিতে ১১ ফেব্রুয়ারি শিক্ষকদের চাকরি বিধামালার গেজেট জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গুণগত মাধ্যমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অবসরে যাওয়া শিক্ষকদের পদ হিসাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষকদের চাহিদা পাঠিয়েছে মাউশি। যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয় তালিকাটি পিএসসিতে পাঠিয়েছে।
বার্তা কক্ষ
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৪:২০ পিএম,৩১ আগস্ট ২০১৮,শুক্রবার
এজি