চাঁদপুর

সরকারি খাতায় হাজিরা থাকলেও রোগী দেখেন ক্লিনিকে

চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের মেডিকেল অফিসার ডা. আঞ্জুম আরা ফেন্সি প্রতিদিন হাজিরা খাতায় সাক্ষর দিয়ে মাসিক সরকারি বেতন ভোগ করলেও প্রতিদিন নিয়মিত রোগী দেখছেন প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

যেখানে একজন সরকারি চাকরিজীবী চিকিৎসকের দায়িত্ব পালনের কথা সরকারি প্রতিষ্ঠানে, সেখানে তিনি তা না করে শুধুমাত্র সরকারি হাজিরা খাতায় সাক্ষর দিয়ে প্রতিমাসে নিয়মিত সরকারি বেতন ভোগ করছেন। দিনের পর দিন তিনি তার নিজের মতো করেই স্বাধীন ভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠান রেখে প্রাইভেটে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।

একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানাযায়, ডা. আঞ্জুম আরা ফেন্সি দীর্ঘ দিন ধরে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদে জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেশথেশিয়া) পদে নিয়োগ লাভ করেন। এই সরকারি প্রতিষ্ঠানে তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন ছাড়াই।
কর্মরত আছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী যেখানে তিনি প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ডিউটি করার কথা। সেখানে ডা. আঞ্জুম আরা ফেন্সি তা না করে সরকারি নিয়ম ভঙ্গ করে নিয়মিত রোগী দেখছেন চাঁদপুর শহরের শহীদ মুক্তিযুদ্ধা সড়কস্থ আমিন প্লাজার দি কমফোর্ট প্যাথলজিকাল ল্যাবে।

উপজেলা পরিষদে নিয়মিত ডিউটি করার কথা থাকলেও তিনি সেখানে না থেকে সকালে অফিসে গিয়ে শুধুমাত্র হাজিরা খাতায় সাক্ষর দিয়ে কিছুসময় সেখানে অবস্থান করে রোগী দেখার জন্য চলে দি কমপোড প্যাথলজিকাল ল্যাবে। দিনের বাকি সময় টুকু সেখানে তার সেখানেই কাটে।

সরজমিনে গিয়ে দেখাযায়, দি কমফোর্ট প্যাথলজিকাল ল্যাবে টানানো অন্যান্য চিকিৎসকদের সাইনবোর্ডের সাথে ডা. আঞ্জুম আরা ফেন্সির নামে ও সাইনবোর্ড টানানো রয়েছে। ওই সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, প্রসুতি ও গাইনী এবং আল্ট্রসনোগ্রাফী বিশেষজ্ঞ ডা. আঞ্জুম আরা ফেন্সির প্রতিদিন নিয়মিত রোগী দেখার কথা।

প্রায় ১৫/১৬ দিন ধরে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে সদর উপজেলা পরিষদের মেডিকেল অফিসারের দায়িত্ব রেখে ডা. আঞ্জুম আরা ফেন্সি সকাল ১১ টা কি সাড়ে ১১ টার পর থেকেই ওই প্রাইভেট ডায়াগনস্টিকে প্রতিদিন নিয়মিত রোগী দেখছেন।
সর্বশেষ গত ৪ ফেব্রæয়ারি সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে প্রথমে ওই ল্যাবে একজন রোগীকে পাঠানো হয়। তারপর এ প্রতিবেদক নিজেই তার কাছে বক্তব্যের জন্য যান।
তার এ অনিয়মের বিষয়ে কথা হলে আঞ্জুম আরা ফেন্সি বলেন, আমার তো সদর উপজেলায় রোগী দেখার নিয়ম নেই। সেখানে কাজ হলো বিভিন্ন মিটিং, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, টিকাদান কর্মসূচী, উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন মিটিংয়ে অংশ নেয়া এবং পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালন করা। তাই সেখানে তেমন কাজ না থাকাতে বাকি সময়টুকু সুযোগ পেলে এখানে রোগীদের সেবা করি।

ওইদিন বেলা সাড়ে ১১ টায় তিনি সেখানে কেনো এমন অনিয়মের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার একটি স্কুলে পরীক্ষার হলে ডিউটি পড়েছে তাই এসেছি । কিন্তু প্রশ্ন হলো পরীক্ষার হলে যদি ডিউটি থাকে তার তো ওই পরীক্ষার হলে থাকার কথা, তাহলে তিনি প্রাইভেট ল্যাবে কেনো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্কুলে বসার জায়গা না থাকার কারনে তিনি ল্যাবে গিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, আমার নামে যদি আপনারা পত্রিকায় কিছু লিখেন তাহলে আমি আর কর্মস্থলেই বসবো না।

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সে যেই হোকনা কেনো, তার কর্মস্থলে যদি কোন কাজ না ও থাকে তারপরও তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠান রেখে এমন অনিয়ম করতে পারেন না।

কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:০৩ পিএম, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Share