সারাদেশের সড়কের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খানের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। রোববার রাজধানীর বনানীতে নবনির্মিত বিআরটিএ ভবনে সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের আগের দুই মেয়াদে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী ছিলেন শাজাহান খান। দল টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর নানা কারণে বিতর্কিত ও সমালোচিত শাজাহান খান বাদ পড়েন মন্ত্রিসভা থেকে। এবার সেই শাজাহান খানকে আনা হলো সড়কের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গঠিত কমিটিতে।
ওবায়দুল কাদের জানান, সড়ক নিরাপত্তা আইন বাস্তবায়নে তিন সদস্যের একটি পৃথক কমিটিও করা হয়েছে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এই কমিটিতে রয়েছেন।
ওবায়দুল বলেন, সড়কের দুর্ঘটনা রোধ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সাবেক নৌ-মন্ত্রী শাজাহান খানকে প্রধান করে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, ব্র্যাক এর প্রতিনিধি, ট্রাক কাভার্ড ভ্যান থেকে দু’জন প্রতিনিধি, বিআরটিএ, ডিআইজি হাইওয়ে, ডিআইজি অপারেশন, এ আর আই বুয়েট, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ডিএমপি, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে একজন করে।
সেতুমন্ত্রী জানান, এই ১৫ সদস্যের কমিটি সড়ক পরিবহনের শৃঙ্খলা, দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪ কর্ম দিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেবেন।
সড়ক পরিবহন আইন সংসদে পাস হওয়ার পর শ্রমিক মালিকদের দাবি-দাওয়ার উপর ভিক্তি করে বাস্তবসম্মত উপায় খুঁজতে স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনকে নিয়ে বৈঠক থেকে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন আইন সংসদে পাস হয়েছে এবং নির্বাচনের আগে স্টেইক হোল্ডারদের পক্ষ থেকে কিছু কমেন্ট অ্যান্ড অভজারবেশন ছিল, কিছু সংশোধনের দাবি-দাওয়া ছিল। আইন প্রণয়নের পর আইনটা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় কোনো বিধি-বিধান করে, বাস্তবতার সঙ্গে যতটা সঙ্গতি রাখা যায় সেই বিষয়টা খতিয়ে দেখার জন্য আইন সংশ্লিষ্ট তিনজন মন্ত্রীকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি।
কাদের বলেন, তারা আইনটা প্রয়োগ করতে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করবেন। যেহেতু আইনের বিধি এখনও প্রণয়ন হয়নি, তাই স্টেইক হোল্ডারদের দাবির দিক বিবেচনা করে কিছু একটা করা যায় কিনা, সেটা পর্যালোচনা করে দেখবেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিক্তিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ট্রাফিক ইনডেস্ক জরিপের রিপোর্টে বিশ্বের ২০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ যানজটে শীর্ষে অবস্থান করছে- বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ‘কত রিপোর্ট বের হচ্ছে! টিআইবিরও একটি রিপোর্ট বের হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশকে যেভাবে চিত্রিত করা হয়েছে, এটা বাস্তব চিত্র নয়।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের আজকের উন্নয়ন এবং উচ্চতাকে খাটো করার জন্য, ছোট করার জন্য এবং বাংলাদেশের জন্য যারা ঈর্ষান্বিত তাদের একটি সিন্ডিকেট এখানে কাজ করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিবহনে শৃঙ্খলায় আমরা অন্যদের থেকে পিছিয়ে থাকবো এমন নয়, কিছুটা সমস্যা পরিবহনে আছে। আমার বিশ্বাস সকলের সহযোগিতায় পরিবহনের সংকট আমরা কাটিয়ে উঠবো।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, ব্র্যাক, ট্রাক কাভার্ড ভ্যান, বিআরটিএ, ডিআইজি হাইওয়ে, ডিআইজি অপারেশন, এআরআই বুয়েট, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ডিএমপি, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা।
বার্তা কক্ষ
১৮ ফেব্রুয়ারি,২০১৯