প্রযুক্তি খাতের সম্মেলন নভেম্বরে শুরু হচ্ছে

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের অলিম্পিক খ্যাত ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব আইটি ২৫তম সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামি ১১ নভেম্বর। প্রথমবারের মতো এ সম্মেলনের আয়োজন করছে বাংলাদেশ। বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি এ সম্মেলনে যুক্ত হওয়া যাবে।

দ্য ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ,বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলএবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি যৌথভাবে এ সম্মেলন আয়োজন করছে। আয়োজনে পার্টনার হিসেবে থাকছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস,বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং বাক্কো,ই-ক্যাব এবং ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি।

আগামি ১১ থেকে ১৪ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চারদিনব্যাপি এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার ২৬ অক্টোবর রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল্লি যুক্ত হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ২০২১ সাল আমাদের জন্য গর্বের। এ বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। এ বছরই সুযোগ হয়েছে প্রথমবারের মতো তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এতো বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের।

এটি আমাদের জন্য গর্বের। আইসিটি খাতে বাংলাদেশকে ব্রান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিশ্বের শীর্ষ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। এ সম্মেলনের সফল আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এ খাতে আরও অনেক দূর এগোবে।

আয়োজকরা সংশ্লিষ্টরা জানান,“আইসিটি দ্য গ্রেট ইকুলাইজার”-স্লোগানে এ আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে অনলাইনে সম্মেলনে যুক্ত হওয়া যাবে। ডব্লিউসিআইটি ২০২১ সম্মেলনের সমান্তরালে একই সময়কালে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া এবং ওশেনিয়া অঞ্চলের আন্তর্জাতিক সম্মেলন অ্যাসোসিও ‘ডিজিটাল সামিট ২০২১’।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন,আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড.মো.আব্দুল মান্নান,পিএএ ও বিসিএসের সভাপতি মো.শাহিদ-উল-মুনীর। উইথজার সেক্রেটারি জেনারেল জেমস এইচ পয়সান্ট অনলাইনে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

চারদিনব্যাপি এ সম্মেলনে থাকছে ৩০টি সেমিনার,মিনিস্টারিয়াল কনফারেন্স,বিটুনি সেশন। অনলাইনে নিবন্ধিত হয়ে এ সেমিনারগুলোতে অংশ নেয়া যাবে।

১১ নভেম্বর মিনিস্টারিয়াল কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ভার্চুয়ালি যুক্ত হতে সম্মতি দিয়েছেন। প্রতিদিন সেমিনারের পাশাপাশি থাকছে বিশেষ আয়োজন।এ বিশেষ আয়োজনে প্রথম দিন থাকছে “ডিজিটাল বাংলাদেশ নাইট”। ডিজিটাল বাংলাদেশ নাইটে বাংলাদেশের বিগত ১২ বছরের তথ্যপ্রযুক্তিতে অগ্রগতির বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

আয়োজকরা আরও জানান, সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ১২ নভেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে স্বাধীন-সর্বোভৌম রাষ্ট্র ও তথ্যপ্রযুক্তিতে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নেওয়া উদ্যোগগুলো উপস্থাপন হবে। ওইদিন অ্যাসোসিও অ্যাওয়ার্ড নাইট অনুষ্ঠানে এশিয়া ওশেনিয়া অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হবে।

তৃতীয় দিন ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অগ্রগতি অর্জন গৌরবের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। ওইদিন ‘উইটজা আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড নাইট’ অনুষ্ঠানে সারা বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেয়া হবে।

আয়োজকরা জানান, ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে, ডব্লিউসিআইটির রজতজয়ন্তী উদযাপিত হবে। চারদিনব্যাপি এ বিশ্ব সম্মেলনের বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নেবেন বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান,আধুনিক ইন্টারনেটের অন্যতম জনক ভিন্টনগ্লেসার্ফ ও রবার্ট কান সেমিনারে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন। প্রথমবারের মত একই প্লাটফর্মে তাদের সঙ্গে যুক্ত হবেন আধুনিক ইন্টারনেটের অন্যতম জননী ড.রাদিয়া পারম্যান ও ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের উদ্ভাবক স্যার টিমোথি বারনার্স লি।

ইন্টেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান ওমর এস ইশরাক ও নাসার সদরদপ্তরের এজেন্সি ও পারফর্মেন্সের ডেপুটি সিএফও ডাউগ কমস্টক সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। অন্যভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের কমিশনার ভিক্টর ক্যালিস ভবিষ্যত স্মার্ট সিটি বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন।

এছাড়াও সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের চিফ স্টাডি গ্রুপস ডিপার্টমেন্টের বিলেল জামৌসি বক্তৃতা করবেন। আইএমডি স্মার্ট সিটি অবজারভেটরির সভাপতি ড.ব্রুনোপ্যানভিন একটি সেমিনারে অংশ নেবেন।

এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনলাইনে বিভিন্ন বক্তা একাধিক সেমিনারে সংযুক্ত হবেন।

বিগত প্রায় ১৩ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের যে অর্জন তা এ সম্মেলনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। সম্মেলনের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রদর্শনীর আয়োজন হবে।

এক্সপো উপভোগের জন্য অ্যাপ উন্মুক্ত করা হয়েছে। গুগল প্লে স্টোর ও আইফোনের অ্যাপ স্টোর থেকে wcit2021 নামের অ্যাপটি বিনামূল্যে ডাউনলোড করে ইন্সটল করা যাবে। তবে ব্যবহারের পূর্বে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। এছাড়াও www.wcit2021.com.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করে ভার্চুয়ালি সম্মেলন ও প্রদর্শনী ঘুরে আসা যাবে।

শারীরিকভাবে এবং অনলাইন রেজিস্ট্রেশনসহ ডব্লিউসিআইটি সম্মেলনের যাবতীয় www.wcit2021.org.bd ওয়েবসাইটটিতে পাওয়া যাবে।

 

বার্তা কক্ষ  , ২৬    অক্টোবর ২০২১

এজি

Share