হাজীগঞ্জে ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমির সীমানা দেয়াল ভাংচুর করে ইট ও গাছ কেটে নিয়ে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত সোমবার পৌরসভাধীন ৬নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ দিন দুপুরে ওই সম্পত্তির মালিক মনোয়ারা বেগমের স্বামী মো. বিল্লাল হোসেন স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে এমন অভিযোগ করেন। তিনি (মনোয়ারা বেগম) হাজীগঞ্জ উপজেলার ধড্ডা গ্রামের মৃত আলহাজ্ব আব্দুল লতিফের মেয়ে।
বিল্লাল হোসেন জানান, মকিমাবাদ মৌজার বিএস ১১১৪ দাগের ১৯শতাংশের অন্দরে (বাড়ী) সাড়ে চার শতাংশ ভূমি তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে দান করেন। যার ৩ শতাংশের দাতা হলেন, হাজীগঞ্জ উপজেলার ধড্ডা গ্রামের মৃত আলহাজ্ব আব্দুল লতিফের ছেলে মো. কামাল হোসেন ও মো. সাইফুল ইসলাম সেলিম। দলিল নং- ৯৭১। অপর দেড় শতাংশের দাতা হলেন, একই গ্রামের মৃত ফারুকে আজমের স্ত্রী হোসনেআরা বেগম, মেয়ে নুরজাহান আক্তার জেরিন, জান্নাতুল ফেরদাউস ও ছেলে নুর মোহাম্মদ জিহাদ। দলিল নং- ১৪০৯ ।
বিল্লাল হোসেন বলেন, এরপর থেকেই তারা ভোগ দখলে রয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সোমবার সকালে স্থানীয় মকিমাবাদ গ্রামের মনজিল হোসেন মজুমদার নামের একজন অন্যান্য লোকজনকে সাথে নিয়ে উল্লেখিত ভূমির দেয়াল ভাংচুর করে ইট ও গাছ কেটে নিয়ে যায়। ভূমি দখলের উদ্দেশ্যে ঘর নির্মাণ করার জন্য বেশ কয়েকটি বাঁশ দাঁড় করিয়ে রাখেন।
এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দাতাদের একজন সাইফুল ইসলাম উল্লেখিত ভূমি বিক্রি করার উদ্দেশ্যে স্থানীয় মনজিল হোসেনের সাথে ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই একটি বায়নাপত্র করেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে বায়নার শর্ত অনুযায়ী বাকি টাকা পরিশোধ না করায়, ওই বায়নাপত্রের মেয়াদ ওই বছরের ১৬ অক্টোবর শেষ হয়ে যায়। পরবর্তীতে উভয় পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু বৃদ্ধিকৃত মেয়াদের মধ্যেও বাকি টাকা পরিশোধ না করায়, শর্ত অনুযায়ী বায়নাপত্রটি বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। এর মধ্যেও এক বছর পার হয়ে গেছে।
এরপর উল্লেখিত ভূমির দাতাগণের কাছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে দুইটি দলিলমূলে উক্ত ভূমি আমার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ক্রয় করেন। যার পর থেকে আমরা ভোগ দখলে আছি। কিন্তু সোমবার জোরপূর্বকভাবে মনিজল হোসেন আমাদের ভোগদখলকৃত ভূমির দেয়াল ভাংচুর করে ইট এবং গাছ কেটে নিয়ে যায়। ভূমি দখলের উদ্দেশ্যে ঘর নির্মাণ করার জন্য বেশ কয়েকটি বাঁশ দাঁড় করিয়ে রাখেন।
এ ঘটনায় তিনি আইনের আশ্রয় নিবেন বলে বিল্লাল হোসেন জানান। এ বিষয়ে মনজিল হোসেন বলেন, ভূমি দাতা সাইফুল ইসলাম আমার সাথে বায়নাপত্র করার পর, অজানা কারনে বায়নাপত্রের বাকি টাকা গ্রহণ করে না করে আমাকে সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দেয়নি। এবং তিনি বিভিন্ন সময়ে তাল-বাহানা করে কালক্ষেপন করেন। বিষয়টি আমি উপজেলা চেয়ারম্যান, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতিসহ স্থানীয় গণ্যমান্যদের অবহিত করি। এরপরও সমাধানে না আসায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে আমি হাজীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেই।
মনজিল হোসেন বলেন, গত বছরের ২৪ নভেম্বর উল্লেখিত ভূমি নতুন করে খারিজের জন্য সাইফুল ইসলাম ও কামাল হোসেনসহ ভূমি দাতারা আমার ইমোতে ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠায়। যারপর আমি ওই ভূমি খারিজ করেছি। এ সময় তিনি দেয়াল ভাংচুর করে ইট ও গাছ কেটে নেয়া এবং ভূমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
এ দিকে এই ঘটনায় দাতা মো. সাইফুল ইসলাম সেলিম বলেন, বেশ সুযোগ দেয়া হয়েছে মনজিল হোসেনেকে। কিন্তু তিনি সুযোগকে কাজে লাগাতে পারেননি। যার ফলে শর্ত অনুযায়ী বায়নাপত্রটি বাজেয়াপ্ত হয়ে গেছে।
ভূমি দানের বিষয়ে বলেন, আমি ও আমাদের পরিবার ঢাকায় সেটেল (স্থায়ীভাবে বসবাস)। তাই মনোয়ারা বেগমকে উল্লেখিত ভূমি দান করে দিয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, তার (মনিজল হোসেন) অভিযোগ আইনিভাবে জবাব দেয়া হবে।
জহিরুল ইসলাম জয়,৩ মার্চ ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur