আমার মৃত্যুর জন্য আমিই দায়ী, আমি আমার স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের খুবই ভালোবাসি, তাদের ছেড়ে এক রাত্রেও কোথায়ও থাকি নাই। সমিতির টাকা জোগাড় করতে না পেরে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিলাম। কারন ঋণের টাকা দিতে না পারলে যে অপমানিত হবো, তার চেয়ে মৃত্যুই ভালো। চিঠিতে ছেলে মেয়েদের উপদেশ দিলেন তাদের মাকে সম্মান করতে, যত্ন করতে। এমন চিঠি লিখে নিজের বসতঘরের পানের পানদানিতে রেখে বাড়ির পাশের একটি কামরাঙা গাছের ডালে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মৃনাল (৬০) নামে এক ঋণগ্রস্থ।
সোমবার (৮ জুলাই) ভোররাতে চাদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কড়ৈতলী স্বর্ণকার বাড়িতে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মৃনালের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানার এস আই ইসমাইল হোসেন।
মৃনালের ছেলে কলেজ পড়ুয়া তমাল বলেন, আমার বাবা পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান ছিলেন, তিনি ইলেকট্রিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করার পাশাপাশি আমার দুই বোনকে বিয়ে দিয়েছেন। আমি ইন্টারে পরীক্ষার্থী। আমার বাবা বেসরকারি ঋণদান সংস্থা এনজিও আশা, ব্র্যাক, বার্ড, কোডেক, ঠেঙা মারা, টিএমএস ও প্রত্যাশী এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। সব গুলো এনজিও ও বিভিন্ন জন থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ঋণগ্রস্থ ছিলেন। প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল রাতে খাবার খেয়ে বাসায় ঘুমিয়ে পড়ে। ভোররাতে ঘর থেকে বের হয়ে তিনি আর ঘরে ফিরে আসেন নি। পরে আমার চাচাতো ভাই সজিবসহ অনেক খোঁজাখুজি করে বাড়ির পাশের কামরাঙা গাছে ফাঁস দেয়াবস্থায় দেখতে পাই। আমাদের ঘরে বাবার পানদানিতে বাবার নিজের হাতে লেখা চিরকুট টি দেখতে পাই।
স্থানীয় চেয়ারম্যান শেখ হোসেন আহমেদ রাজন বলেন, মৃনাল ফরিদগঞ্জ পল্লী বিদুৎ অফিসের নিবদ্ধিত ইলেলট্রিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার আত্মহত্যার বিষয়টি দুঃখজনক। তিনি ঋণের চাপে মানষিক যন্ত্রনায় চিরকুট লিখে আত্মহত্যার মত ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি দুঃখজনক। ঋণ দাতাও গ্রহিতার ক্ষেত্রে আমাদের আরো সচেতন হতে হবে।
ফরিদগঞ্জ থানার (ওসি) মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে মৃনালের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তার পরিবারের কাছ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তি আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ৮ জুলাই ২০২৪