চাঁদপুরের পুলিশ সুপার এসপি শামসুন্নাহার বলেছেন, ‘আমি আমার সাধ্যের সবটুকু দিয়ে কাজ করছি। সকলে মিলে এ জেলাকে আরো সুন্দর করতে চাই। বিশেষ করে মাদকের ব্যাপারে এ জেলাকে মডেল হিসেবে নিতে চাই। বাল্যবিবাহ, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং উঠতি বয়সী সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে জেলার সব কমিউনিটিকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। সাংবাদিকরা যখন সমস্যার কথা তুলে ধরেন তখন পুলিশের কাজে গতি বেড়ে যায়।’
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) চাঁদপুর প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা তিনি এসব কথা বলেন। পুলিশ সপ্তাহের প্যারেডে নেতৃত্ব দিয়ে এবং পিপিএম (সেবা) গ্রহণ করে চাঁদপুরে এসে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।
তিনি আরো বলেন, ‘সব কাজ এক সাথে করা যায় না। আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কাজ করতে চাই। বিশেষ করে মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কোনো ছাড় নেই। এর সাথে যতো বড় ক্ষমতাধরই সম্পৃক্ত থাকুক না কেনো আমরা এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। আপনারা আমাদের সাথে কাজ করলে কোনো অপপ্রচার বা ষড়যন্ত্রই আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’
এসপি বলেন, বিভিন্ন স্থানে আমি যখন কথা বলি তখন চাঁদপুরের এসপি পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। চাঁদপুরবাসী সহযোগিতা করেছে বলেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য পেতে শুরু করেছি। সবার দোয়া ও সহযোগিতা না থাকলে কোনো বড় সাফল্য পাওয়া যায় না। আমরা যদি সত্যিই সেবা দিতে চাই, তবে তা সম্ভব। আর সে লক্ষ্য নিয়েই আমার এবং আমাদের কর্মযজ্ঞ।
তিনি বলেন, আমার কার্যালয়ে যে ‘নারী ও শিশু সহায়ক সেল’ নামে একটি দপ্তর খোলা হয়েছে তা শুধুমাত্র সেবার ব্রত নিয়ে খুলেছি। আমরা গত এক বছরে ১ হাজার অভিযোগ আমলে নিয়ে ৭শ’টি নিষ্পত্তি করেছি। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ভিন্ন মত উপস্থাপন করেন তাহলে বুঝতে হবে এ পেছনে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
সভার শুরুতে তিনি চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ২০১৭ সালের কার্যকরী কমিটির নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেন। এরপর প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার দ্বিতীয়বারের মতো পুলিশ সপ্তাহের প্যারেডে নেতৃত্ব দেয়ায় এবং পিপিএম (সেবা) গ্রহণ করায় তাঁকে ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে অভিনন্দন জানান।
সভার শুরুতে ২০১৬ সালে চাঁদপুর জেলা পুলিশের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিবরণ তুলে ধরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘গত এক বছরে ৪৭৮টি মাদক মামলা রুজু করা হয়েছে। ৬শ’ ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১ কোটি ৬০ লাখ টাকার মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, নিরাপদ জেলা প্রতিষ্ঠা করা, মাদক সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা, জঙ্গি, বাল্য বিবাহ ও ইভটিজিং প্রতিরোধে আরো বেশি কার্যক্রম গ্রহণ করা। বর্তমান সেবার চেয়ে সেবার মান আরো উন্নত করাই আমাদের লক্ষ্য।’
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহীনের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব সভাপতি শরীফ চৌধুরী, বাংলাদেশ টেলিভিশনের চাঁদপুর প্রতিনিধি গোলাম কিবরিয়া জীবন, সাবেক সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, সাবেক সভাপতি বিএম হান্নান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী, দৈনিক চাঁদপুর সংবাদের সম্পাদক ও প্রকাশক আবদুর রহমান, সময় টিভির নিজস্ব প্রতিবেদক ফারুক আহমেদ, সাংবাদিক আবদুল আউয়াল রুবেল, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের প্রচার সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ, মানবকণ্ঠের চাঁদপুর প্রতিনিধি শাহাদাত হোসেন শান্ত, জিটিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি ও রিয়াদ ফেরদৌস, একাত্তর টিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি কাদের পলাশ, সাংবাদিক হাসান মাহমুদ, মতলবের আলো পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কেএম মাসুদ প্রমুখ।
করেসপন্ডেন্ট
।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ০৬ : ৪৬ পিএম, ০১ফেব্রুয়ারি ২০১৭ বুধবার
এইউ