Home / বিনোদন / সমকামিতার চাপেই দিশাহীন দিশা?
সমকামিতার চাপেই দিশাহীন দিশা?

সমকামিতার চাপেই দিশাহীন দিশা?

‎Saturday, ‎April ‎11, ‎2015  01:38:58 PM

বিনোদন প্রতিবেদক :

প্রায় প্রতিদিনই ছোটপর্দায় বাঙালির ড্রয়িংরুমে আসতেন তিনি৷ সেই মেয়েটিই যে এমন করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেবেন ভাবতে পারছেন না কেউ৷ কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন অভিনেত্রী দিশা গঙ্গোপাধ্যায়? প্রাথমিক অনুমানে জানা যাচ্ছে, সমকামী সম্পর্কের চাপেই হয়তো এ পথ বেছে নিয়েছেন তিনি৷

দিশার আত্মহত্যার খবর শুনেই আত্মহননের চেষ্টা করেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী সুচন্দ্রা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সুচন্দ্রার সঙ্গেই বিভিন্ন জায়গায় দেখা যেত দিশাকে৷ সে ‘অ্যাটলেটিকো দ্য কলকাতা’র খেলা দেখা হোক, কিংবা রেস্তরাঁয় বসে চুটিয়ে খাওয়া দাওয়া-তাঁরা ছিলেন হরিহর আত্মা৷ কিন্তু শুধুই কি বন্ধুত্ব?

জানা যাচ্ছে, বন্ধুতা পেরিয়েও আরও গভীর সম্পর্কের দিকে এগিয়েছিলেন দিশা-সুচন্দ্রা৷ তাঁদের আলাপ ‘মৌচাক’ নামে এক সিরিয়ালের সেটে৷ ক্রমে জমে ওঠে বন্ধুত্ব৷ সে বন্ধুত্ব গড়িয়ে যায় প্রায় অন্য সম্পর্কের খাতে৷ আর তাইই বোধহয় কাল হল দু’জনের জীবনেই৷

অনুমান করা হচ্ছে, সুচন্দ্রার সঙ্গে দিশা সমকামী সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন৷ কিন্তু বাধ সাধে দিশার পরিবার৷ পরিবারের চাপে কার্যত দিশাহীন দিশা সম্ভবত শেষমেশ বেছে নেন আত্মহত্যার রাস্তা৷ সেই খবর শুনে সুচন্দ্রাও একই পথ বেছে নেন৷

প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, দিশা ও সুচন্দ্রা একই ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন৷ দিশার বাবা অবশ্য কলকাতায় থাকেন না৷ মা থাকেন বেহালাতেই৷ মায়ের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মায়ের ফ্ল্যাট ছেড়ে দিশা উঠে গিয়েছিলেন পর্ণশ্রীতে নিজের ফ্ল্যাটে৷ সেখানেই আসতে থাকেন বরাহনগরের মেয়ে সুচন্দ্রা৷ তিনি নিজেও একজন অভিনেত্রীা৷ দিশার সঙ্গে সম্পর্কের জেরেই তিনি তাঁর পর্ণশ্রীর ফ্ল্যাটে একসঙ্গে থাকা শুরু করেন৷ মেয়ের এই সম্পর্কের খবর পেয়ে আসেন দিশার বাবা৷ দিশা ও সুচন্দ্রাকে আলাদা করার জন্য ভিভান ঘোষ নামে এক অভিনেতার সঙ্গে তাঁর বিয়েও ঠিক করে যান৷ বিয়ের সম্পর্কে দিশা খুশি ছিলেন না এমনটাই অনুমান৷ ঘটনার আগের দিন দিশার ফ্ল্যাটে আসেন ভিভান৷তারপরেই দিশা বোদহয় বুঝে যান পারিবারিক চাপে তাঁর ইচ্ছেকে দাম দেওয়া আর কিছুতেই সম্ভব নয়৷ এক বাচ্চা মেয়ের খাওয়া পরা, পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন দিশা৷ ঘটনার দিন সে স্কুলে যাওয়ার পর্যন্ত কোনও অস্বাভাবিকতা দেখতে পায়নি৷ সামাজিক ও পারিবারিক চাপের মুখে পড়ে আর কোনও রাস্তা দেখতে পাননি দিশা৷ তাই বোধহয় এ পথে গিয়ে নিজেকে শেষ করে দিলেন৷

দিশার এই রহস্যমৃত্যুর খবর শুনে হতবাক অভিনেতা ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়৷ ‘তুমি আসবে বলে’ সিরিয়ালে দিশার সঙ্গে কাজ করতেন তিনি৷ এ খবর শুনে তিনি অবাক৷ তাঁর চোখে কি দিশার কোনও অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েছিল? ফাল্গুনী জানালেন, ‘ স্টার জলসার একটা পার্টি হয়েছিল ক’দিন আগেই৷ সেখানে ওকে একটু টেন্সড দেখাচ্ছিল৷একটু কম কথা বলছিল খেয়াল করছিলাম৷ কিন্তু তার ফলে যে এরকম ঘটনা ঘটবে বুঝতে পারিনা৷’

দিশার মৃত্যুতে গোটা টেলি ইন্ডাস্ট্রিই প্রায় বাকরুদ্ধ৷ দিশার সঙ্গেই সুচন্দ্রার আত্মহত্যার চেষ্টা, দিশা ও ভিভানের বিয়ের সম্পর্ক ইত্যাদি বেশ কিছু বিষয় জট পাকিয়েছে তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে৷ তদন্তে নেমে পুলিশ দিশার কল লিস্ট ধরে সূত্র খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে৷ কেউ কি দিশাতে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছিল, নাকি মানসিক অবসাদেই এই সিদ্ধান্ত নিলেন অভিনেত্রী, সে প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে৷

সূত্র : কলকাতা 24×7 ডট কম 

চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/2015