ফিচার

সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ

এ হলো আমার দেশ, সব সম্ভবের বাংলাদেশ। নাচেগানে খেলায় ভরপুর সংসদ হবে আনন্দ মুখর। সংসদ হারাবে প্রাণ দেশ কি হবে আগুয়ান। ছন্দের মর্মকথা একজন রাজনীতিবিদ তিনি শুধুই রাজনীতিবিদ। একজন রাজনীতিবিদ ইচ্ছে করলেই নায়ক গায়ক হতে পারেন না।

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে একজন নায়ক, গায়ক, খেলোয়াড়, ব্যবসায়ী, মাদক ডন ইচ্ছে করলেই একজন বড় মাপের রাজনীতিবিদ হতে পারেন। বসে যেতে পারেন দেশের চালকের আসনে। একজন রাজনীতিবিদ তৃণমূল থেকে উঠে আসা পৌড় খাওয়া কর্মী যখন নেতা হয়, তিনি কিন্ত তার পূর্বসুরিদের অতি কাছ থেকে অনুসরণ করে দেশ চালানোর সকল ক্রীড়া কৌশল আয়ত্ব করে রাখতে হয়।

কিন্তু একজন ব্যবসায়ী, গায়ক, নায়ক, খেলোয়াড় শুধু ব্যাক্তিগত জনপ্রিয়তার যোগ্যতায় রাজনীতির জায়গাটি দখল করে, হয়ে যান এমপি মন্ত্রী। যা আলাদিনের চেরাগকেও হার মানায়। বিষয়টি কাউকে ছোট করার জন্যে বলছি না। যারা আসছেন তারা কিন্ত নিজ নিজ জায়গায় খুবই অভিজ্ঞ। কিন্ত অভিনয়, খেলা আর দেশ চালানো এক নয়। যার উদাহরণ এর আগে হয়ত কিছুটা আমরা পেয়েছি।

যদিও তিনি যে পেশা থেকে এসেছেন তাকে সে মন্ত্রণালয়টির দায়িত্ব দেওয়া হলেও সফলতার জায়গায় কতোটা পৌঁছেছেন প্রশ্নবিদ্ব রয়েই যায়। একজন মানুষ দীর্ঘ চেষ্টায় অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে সফলতার জায়গায় পৌঁছে এবং জনপ্রিয়তা অর্জন করে। আর এ জনপ্রিয়তার কারণে সবার টার্গেট সংসদে যাওয়ার। কেন? কি যাদু এখানে? ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি, পুলিশ পাহারায় থাকা, সরকারি স্যালুট,পদলেহনকারিদের তোষামোদি ইত্যাদি।

এসবই তাদের আকর্ষণ করে। দেখা যায় সেনাবাহিনীর প্রধান, মুখ্য সচিব, ক্যাবিনেট সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ওয়ারেন্ট অফ প্রেসিডেন্সিতে তাদের মার্যাদা একজন সংসদের উপরে। তারপরে ও সবাইর দৃষ্টি এখানে। হঠাৎ রাজনীতিবিদ হয়ে দেশ চালানোর মত এত বড় দায়িত্ব যখন গাঢ়ে উঠে তখন তিনি ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।

তাই অন্যের লেখে দেওয়া বক্তব্য দেখে দেখে পড়া ছাড়া বিকল্প থাকে না। আর এভাবে তারা রাজনীতির মাঠ দখল করার ফলে মাঠ থেকে পৌড় খাওয়া অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদরা রাজনীতি থেকে ক্রমশ দুরে সরে যাচ্ছে। নতুনরা আশার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে, কারণ অন্যের দ্বারা দখল করা বাড়িতে কেউ থাততে চায় না। যার ফলে রাজনীতি হয়ে যাচ্ছে রাজনীতি মেধাশূন্য।

অপরদিকে রাজনীতির ফাঁকা স্থানটি দখল করছেন কিছু অশিক্ষিত চরিত্রহীনরা। আবার যারা সফল পেশাটি ছেড়ে এসেছেন তার অভাবে ওই সংস্থাটি যেমন তার অবদান থেকে বঞ্চিত হল, অন্যদিকে অনভিজ্ঞতার কারণে নতুন পেশাটি ও ক্ষতিগ্রস্থ হলো। সমীকরণ হল আমচালা সব গেল।

আর পেশাদার লোক তার পেশাদারিত্বের জায়গায় না থাকায় ভবিষ্যৎ দেশ চলবে অদক্ষ ড্রাইভার দ্বারা এটা দেশের জন্য ভয়ংকর অশানি সংকেত।

তাই আসুন দলের চিন্তা, ক্ষমতার কথা চিন্তা না করে দেশের চিন্তা করে প্রত্যেককে প্রত্যেকের স্থানে অবদান রাখার সুযোগ দিন।

লেখক : খন্দকার ইসমাইল
উপ-পরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশ
১৫ নভেম্বর, ২০১৮

Share