সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দিবস পালনের নির্দেশ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দিবস উপলক্ষে দেশের সব ইংলিশ মিডিয়ামসহ স্কুল-কলেজে যথাযথ মর্যাদায় দিনটি উদযাপনের নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

এ দিবসে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাতে হবে। আর দিবসটি উদযাপনে ওইদিন বা সুবিধাজনক সময়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতা, কুইজ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ছড়া ও কবিতা পাঠের আয়োজন করতে হবে সব স্কুল-কলেজকে।

বৃহস্পতিবার ২ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সব স্কুল-কলেজে ৭ মার্চ দিবস উদযাপনে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এদিন জারি করা এক আদেশে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে অধিদপ্তর।

স্কুল-কলেজের কর্মসূচিগুলো নিয়ে অধিদপ্তর জানিয়েছে,৭ মার্চ সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানাতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। দিবসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্ব স্ব কর্মসূচি প্রণয়ন করে দিবসে বা সুবিধাজনক দিনে এ দিবস উদযাপন করতে হবে।

অধিদপ্তর আরও বলছে, শিক্ষার্থীদের নিয়ে ওইদিন বা সুবিধাজনক সময়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতা,ছড়াপাঠ,কবিতা পাঠ ও কুইজ প্রতিযোগিতা ইত্যাদির মধ্যে যেটি সুবিধাজনক তা আয়োজন করতে হবে। স্কুল পর্যায়ে অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইয়ের ওপর কুইজ এবং কলেজ পর্যায়ে কারাগারের রোজনামচা ও আমার দেখা নয়া চীন বইয়ের ওপর কুইজ আয়োজন করা যাবে।

অধিদপ্তর আরও বলেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আয়োজনে শিক্ষার্থীরা জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্যে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ স্ব স্ব উপস্থাপনার ভিডিও ধারণ করে পাঠাবে। ভিডিওগুলো থেকে নির্বাচিতদের পুরস্কার দেয়া হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহায়তায় স্মার্টফোন বা ক্যামেরা ব্যবহার করে ভিডিও ধারণ করতে হবে। ভিডিও ধারণ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইউটিউব চ্যানেলে বা গুগল ড্রাইভে আপলোড করে ই-মেইলে (৭সধৎপযফংযব@মসধরষ.পড়স) লিংক পাঠাতে হবে।
ই-মেইলে ভিডিও পাঠানোর শেষ তারিখ ১৪ মার্চ পর্যন্ত।

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রূপক রায় স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে অধিদপ্তরের আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয় কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এসব কর্মসূচি পালনের জন্যে বলা হলো।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপনে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের কর্মসূচি

চাঁদপুর জেলা প্রশাসন কর্তৃক ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রস্তুতিমূলক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

১ মার্চ বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। তিনি ৭ মার্চের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে বক্তব্যে বলেন,‘স্বাধীনতার জন্যে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলো। জাতীয় জীবনে ৭ মার্চ একটি ঐতিহাসিক দিন। আমাদের স্বাধীনতা আদায়ের সংগ্রাম শুরু হয় ।’

তিনি আরোও বলেন,‘যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। আমাদের প্রজন্মকে জানাতে হবে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের কথা,যে ভাষণের মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে জাতির পিতার দূরদর্শিতাসম্পন্ন চিন্তা-চেতনা। মার্চ মাস পুরোটাই আমাদের ঐতিহাসিক ও গৌরবের মাস।

প্রস্তুতি সভার শুরুতে বিগত সভার কার্যবিবরণ উপস্থাপন এবং সভা সঞ্চলনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেন।

সভায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য বর্ণনাপূর্বক দিবসটি পালনে করণীয় সম্পর্কে মতামত ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি পলাশ কুমার নাথ,জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ,সাধারণ সম্পাদক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল,জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ,স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা.সৈয়দা বদরুননাহার চৌধুরী,জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার প্রমুখ ।

এ সবায় জেলা কমিটি ও ৫টি উপ-কমিটি গঠন ও ৯টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়। কমিটি গুলো হলো :পুষ্পস্কবক অর্পণ,আইন শৃংখলা,সাংস্কৃতিক,আলোচনা ও সেমিনার প্রভৃতি ।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য ছাত্র-ছাত্রীদের জানানোর লক্ষ্যে কলেজ পর্যায়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ও মাধ্যমিক পর্যায়ে মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সেমিনারের আয়োজন এবং শিশু একাডেমি,জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও গণগ্রন্থগার একত্রিত হয়ে চিত্রাঙ্কন,কবিতা আবৃত্তি,৭ মার্চের ভাষণের উপর রচনা, কুইজ , নৃত্য ও সংগীত প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্যে পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসকে নির্ধারণ করা হয়।

৭ মার্চ উদযাপনে ৬ ও ৭ মার্চ রাত্রিকালীন জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে আলোকসজ্জাকরণ,৭ মার্চ সকাল ৯ টায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ,সকাল ১০ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ৭ মার্চের উপর আলোচনা সভা,পুরস্কার বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

এছাড়া জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনলাইনে যুক্ত হয়ে ৭ মার্চ বেলা ১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সকল কার্যক্রম দেখার ব্যবস্থা করা হবে বলে সভায় জানানো হয়। ৭ মার্চ পবিত্র শবে বরাতের দিন হওয়ায় রাত্রিকালীন ৭ মার্চের কোনো অনুষ্ঠান রাখা হয়নি বলে জানা যায় ।

আবদুল গনি
৪ মার্চ ২০২৩

Share