Home / জাতীয় / অর্থনীতি / ডিম-মুরগির সঙ্গে বেড়েছে সবজির দাম
vegetable bazar

ডিম-মুরগির সঙ্গে বেড়েছে সবজির দাম

সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে মুরগি, ডিম ও সবজির দাম আরও বেড়েছে। পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। আর বিভিন্ন সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা করে বেড়েছে।

১৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫০-১৫৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪০-১৪৫ টাকা। আর পাকিস্তানি কক বিক্রি করছেন কেজি ২৮০-৩০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৭০-২৮০ টাকা। এর দুই সপ্তাহ আগে ছিল ২২০-২৩০ টাকা।

মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী মো.লিয়াকত বলেন, খামারে মুরগির উৎপাদন কমেছে। অপরদিকে বাজারে বেড়েছে মুরগির চাহিদা। এ কারণেই দাম বেড়েছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সামনে দাম আরও বাড়তে পারে।

রামপুরার ব্যবসায়ী মো. আল মামুন বলেন, পাইকারিতে মুরগির দাম অনেক। কয়েকদিনের ব্যবধানে পাইকারিতে সোনালী মুরগির দাম কেজিতে ১০০ টাকার মতো বেড়েছে। ফলে যে মুরগি কয়দিন আগে আমরা ২২০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি এখন তা ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, সোনালী মুরগির দাম অনেক দিন তুলনামূলক কম ছিল। ফলে আমাদের বিক্রিও হয়েছে ভালো। কিন্তু দাম কম পাওয়ার কারণে খামারিরা মুরগি উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণে মুরগির দাম বেড়েছে বলে আমাদের ধারণা।

এদিকে মুরগির সঙ্গে বেড়েছে ডিমের দাম। ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০৫-১১০ টাকার মধ্যে। আর মুদি দোকানে গত সপ্তাহে এক পিস ডিম বিক্রি হয় ৯ টাকা, এখন তা বেড়ে ১০ টাকা হয়েছে। কোনো কোনো ব্যবসায়ী এক পিস ডিম ১১ টাকাও বিক্রি করছেন।

ডিমের দামের বিষয়ে মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো.জাহাঙ্গীর বলেন, বাজারে সবজি, মাছ, মুরগি সবকিছুর দাম বেড়েছে। এ কারণে কিছুটা চাপ পড়েছে ডিমের ওপর। তাছাড়া কয়েকদিন ধরে বাজারে ডিম কম আসছে। সবকিছু মিলে দাম বেড়েছে।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা গত সপ্তাহের মতো শীতের আগাম সবজি শিমের কেজি বিক্রি করছেন ১২০-১৪০ টাকা। গাজর ও টমেটোর কেজি বিক্রি করছেন ১০০-১২০ টাকা। এ দুটি সবজির দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

তবে দাম বেড়েছে ঝিঙে, চিচিঙ্গা, বরবটি, ঢ্যাঁড়শ, পটল, করলার। ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা। করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৭০ টাকা। চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা।

এছাড়া পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। ঢ্যাঁড়শের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৬০-৭০ টাকার মধ্যে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকার মধ্যে। বরবটির কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৭০ টাকা।

কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা, কাঁচকলার হালি ২-৩০ টাকা, লাল শাকের আঁটি ২০-৩০ টাকা, মুলা শাকের আঁটি ১৫-২০ টাক, কলমি শাকের আঁটি ৫-১০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সবুর আলী ব্যাপারী বলেন, বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে কিছুটা বেড়েছে সবজির দাম। তবে বাজারে শীতের আগাম সবজির সরবরাহ বাড়ছে। তাই আশা করা যায় কিছুদিনের মধ্যে দাম কিছুটা কমে যাবে।

মালিবাগের ব্যবসায়ী মিন্টু শেখ বলেন, আড়তে সবজির অনেক দাম। মাল আসছেও কম। আমরাই বাজার ঘুরে মন মতো সবজি কিনতে পারছি না। বাড়তি দাম দিয়ে সব ধরনের সবজি কিনতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, সবজির দাম বাড়ায় আমাদের লাভের বদলে ক্ষতি হচ্ছে। কারণ দাম বাড়ার কারণে বিক্রি কমে গেছে। আবার আগে কেজিতে যে হারে লাভ হতো, এখন তার থেকে কম লাভে বিক্রি করতে হচ্ছে।

এদিকে মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩৮০ টাকা। মৃগেল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৮০ টাকা। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজি দরে। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৬০০ টাকা। পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৬০ টাকা।

আগের মতো বাজারে ছোট-বড় সব ধরনের ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম এখনো তুলনামূলক বেশি। বড় (এক কেজির ওপরে) ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০-১৩০০ টাকা। মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকা কেজি। আর ছোটগুলো বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দরে। সপ্তাহের ব্যবধানে ইলিশের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।