সবচেয়ে বেশি গরম দিন দেখল বিশ্ব

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে আবহাওয়া যেমন বিরূপ হচ্ছে, তেমনি তাপমাত্রা নানামাত্রিক রেকর্ড গড়ছে। এবার বিশ্বের গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। 

গত সোমবার (৩ জুলাই) সবচেয়ে গরম দিন দেখেছে বিশ্ব। এদিন বিশ্বের গড় তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ড ভেঙে ১৭ দশমিক ০১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে। এর আগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৬ দশমিক ৯২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় ২০১৬ সালের আগস্টে। 

যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্রের (এনসিইপি) বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

তাপমাত্রা ও আবহাওয়া পরিস্থিতির স্যাটেলাইট মনিটরিং রেকর্ড শুরু হয় ১৯৭৯ সালে। তার পর থেকে ২০২৩ সালের ৩ জুলাই ছিল সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন। আর ২০২৩ সালের জুন মাস ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে গরম মাস।

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা বলছেন, ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে তাপমাত্রার যান্ত্রিক রেকর্ড রাখা শুরুর পর বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা আর এই পর্যায়ে ওঠেনি।

এল নিনো নামে পরিচিত আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতি এবং মানুষের কর্মকাণ্ডে পরিবেশে বাড়তে থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস মিলেই এই তাপমাত্রার সৃষ্টি বলে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস।

কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চীনে দীর্ঘদিন ধরে দাবদাহ বিরাজ করছে, তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকছে। উত্তর আফ্রিকা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি তাপমাত্রা দেখছে। 

এমনকি শীতের মৌসুম হলেও অ্যান্টার্কটিকায় বিরল উচ্চ তাপমাত্রা দেখা যাচ্ছে। বরফাচ্ছাদিত এই মহাদেশের কিছু দ্বীপের মালিক আর্জেন্টিনা। এগুলোতে সম্প্রতি জুলাই মাসের তাপমাত্রা নতুন উচ্চতায় উঠে ৮ দশমিক ৭ সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছে। 

ব্রিটেনের লন্ডন ইম্পেরিয়াল কলেজের গ্রান্থাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্টের গবেষক ফ্রেডেরিক অটো জলবায়ুর এমন পরিস্থিতিক ভয়াবহ বলে মনে করেন। এই জলবায়ু বিজ্ঞানী রয়টার্সকে বলেন, ‘এটি মানুষ ও ইকোসিস্টেমের জন্য মৃত্যুদণ্ড।’

বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে বাড়তে থাকা এল নিনো মিলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

বার্কলে আর্থের গবেষক জেকে হাউসফাদার এক বিবৃতিতে বলেন, গ্রিনহাউস গ্যাসের ক্রমবর্ধমান নির্গমন এবং ক্রমবর্ধমান এল নিনো ইভেন্ট তাপমাত্রাকে নতুন উচ্চতায় ঠেলে দিচ্ছে।

টাইমস ডেস্ক/০৫ জুলাই ২০২৩

Share