সাফল্যের পথে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা। তাদের সফলতার গন্ডি বাড়ছে। বাংলাদেশের নারীরা সফলতার স্বপ্ন ছড়াচ্ছেন বিদেশের মাটিতেও। তাদেরই একজন জাহিদা আক্তার রিতা। পড়ালেখার জন্য মালয়েশিয়ায় গিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন সফল উদ্যোক্তা। তার সফলতা এখন অনেকেরই কাছেই অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে।
চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলায় বাড়ি জাহিদার। তবে, বাবার ব্যবসার সুবাদে বেড়ে ওঠা ঢাকা শ্যামলীতে। ২০১৭ সালে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) হতে পাড়ি জমান মালয়েশিয়ার ম্যাথটিস কলেজে। এরপর তিলতিল করে গড়ে তোলেন নিজের শখের এবং স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান ‘ডিকে সেলুন’।
জাহিদা জানান, নিজেকে পরিপাটি রাখতে মাঝেমধ্যে তিনি মালয়েশিয়ান বিউটি পার্লারে যেতেন। ফেসিয়ালসহ বিভিন্ন কাজে তাকে গুনতে হতো বড় অংকের টাকা। একদিন হুট করেই চিন্তা এলো, এমন একটা প্রতিষ্ঠান যদি তিনি দেন, তাহলে তাকে আর অন্যের পার্লারে যেতে হবে না। নিজের এমন কাজের জন্য তাকে অর্থ ব্যয় করতে হবে না, বরং আয়ের একটা উৎস বের হবে। তখন থেকেই তার মাথায় চেপে বসে পার্লারের মালিক হওয়ার স্বপ্ন।
জাহিদার সাজগোজের শখ ছিল আগে থেকেই। ফলে কিছু অভিজ্ঞতাও ছিল। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে শুরু করেন তার সেলুনশপ নিয়ে যাত্রা। বর্তমানে সেটিই এখন ডিকে সেলুন নামে পরিচিত। এটি কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতানের সুঙ্গাই ওয়ান প্লাজায় অবস্থিত। এই সেলুনে প্রবাসী বাংলাদেশি নারীদের পাশাপাশি বিদেশিরাও ভিড় করেন সেবা নিতে। এর পাশাপাশি আছে আরও একটি সেলুনশপ। তার সেলুনে বর্তমানে মেয়ে ও ছেলেদের হেয়ারকার্ট, কালার, স্ট্রেইটেনিং, হেয়ার এক্সটেনশন, মেকাপসহ প্রায় চল্লিশ ধরনের সার্ভিস দেওয়া হয়।
রিতা বলেন, ‘আমার ছোটবেলা থেকেই একটা চাওয়া ছিল, নিজের পায়ে দাঁড়াব এবং সমাজে যারা অবহেলিত আছে, তাদের জন্য কিছু করব। যখন ঢাকাতে পড়াশোনা করতাম, নিজের জন্য করা ডিজাইন দেখে অনেকেই পছন্দ করে বানিয়ে দিতে বলত। তখন থেকেই মূলত আমার উদোক্তা হওয়ার ইচ্ছা শুরু।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন মালয়েশিয়াতে এসেছিলাম, অনেকেই অনেকভাবে মন্তব্য করেছে। শুরুটা ভালো ছিলো না। কিছু সমস্যা ছিল। একে তো মেয়ে, তার ওপর ভাষাগত দক্ষতা নেই। তার ওপর এদেশের নিয়মকানুন আমাদের দেশ থেকে অনেক আলাদা। তবুও হাল ছাড়িনি, কাস্টমারদের সঙ্গে মিশে তাদের বেস্ট সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
শুরুটা বিদেশের মাটিতে হলেও ভবিষ্যতে ঢাকাতেও একটা সেলুনশপ করার ভাবনা আছে বলে জানান রিতা। তিনি বলেন যে কাজ গুলো করেন এই কাজের জন্য অনেকেই ইন্ডিয়া, থাইলেন্ড, দুবাই, মালয়েশিয়াতে যায়। তাই দেশের মাটিতে এই সেবা দিতে পারলে বাংলাদেশি কাস্টমারদের বিদেশে সেবা নিতে যেতে হবেনা। সেলুনের পাশাপাশি এটার উপর প্রশিক্ষনও দিয়ে থাকেন তিনি।
সফলতার প্রশ্নে জাহিদা বলেন, ‘সফলতা সব কিছুতেই পেয়েছি। যা চেয়েছি তার চেয়ে বেশিই পেয়েছি। ছোটবেলা ইচ্ছে ছিল সাইকেল চালানোর, এখন ল্যান্ড ক্রুজার চালাচ্ছি। এসব কিছু সম্ভব হয়েছে আমার মা বাবার সহযোগিতার কারণে।’ -এনটিভি অনলাইন
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur