সন্ত্রাস দমন করতে না পারলে কোনো অর্জন টিকবে না : খালেদা

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, কে ক্ষমতায় থাকবে, কে ক্ষমতায় যাবে, সেটা আজ বড় কথা নয়। কোনো অর্জনই টিকবে না যদি আমরা সন্ত্রাস দমন করতে না পারি। এই আতঙ্ক, এই হত্যালীলা থামাতে হবে।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এ কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রিয় মাতৃভূমি আজ সন্ত্রাসের বিষাক্ত ছোবলে জর্জরিত। এটা এ দেশের জন্য নতুন এক ভয়াবহ জাতীয় সংকট।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজ আমরা যারা আছি, ভবিষ্যতে তারা কেউ হয়তো থাকব না। দেশ থাকবে, জাতি থাকবে। সেই দেশ ও জাতির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ আজ বিপন্ন। আমরা যে যাই বলি, আমাদের কিছুই থাকবে না, কোনো অর্জনই টিকবে না যদি আমরা সন্ত্রাস দমন করতে না পারি। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারি। তাই কাল বিলম্ব না করে, সব ভেদাভেদ ভুলে দলমত-নির্বিশেষে সন্ত্রাস বিরোধী ঐক্যের মাধ্যমে নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, শুধু শুক্রবার রাতের ঘটনাই নয়। সারা বাংলাদেশ আজ সন্ত্রাসের থাবায় ক্ষতবিক্ষত। মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন, মন্দিরের পুরোহিত, ধর্মগুরু ও যাজক, ভিন্ন মতের লেখক প্রকাশক-ব্লগার, খেটে-খাওয়া শ্রমজীবী মানুষদের নৃশংস ভাবে হত্যা করা হচ্ছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে সযত্নে লালিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য। কোথাও কেউ নিরাপদ নয়। এ আতঙ্ক, এই হত্যালীলা থামাতে হবে। বন্ধ করতে হবে রক্তপাত। সবাইকে একতাবদ্ধ হতেই হবে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রহীন দেশে, স্বৈরাচারী শাসন, অসহিষ্ণু রাজনীতি, দমন-পীড়নের রাষ্ট্রব্যবস্থা, অধিকারহীন সমাজ, আইনের শাসনের অনুপস্থিতি, অর্থনৈতিক বৈষম্য-বঞ্চনা এবং সুশিক্ষার অভাব ক্রমাগত চলতে থাকলে সেখানে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি পদক্ষেপের মাধ্যমে এই কারণগুলো দূর না করলে সমাজ থেকে সন্ত্রাস নির্মূল করা যায় না। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া এ ধরনের জাতীয় সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। কেবল গণতান্ত্রিক পরিবেশই জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হতে পারে।

খালেদা জিয়া বলেন, সন্ত্রাস মোকাবিলায় প্রথম কর্তব্য হচ্ছে দেশের সরকার ও জনগণের। বর্তমানে সন্ত্রাসের যে চিত্র দেখছি সেটা নিছক আইন-শৃঙ্খলা জনিত মামুলি কোনো সমস্যা নয়। কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান দিয়ে এই সন্ত্রাস মোকাবিলা করা যাবে না। এই সংকটের শেকড় আরও অনেক গভীরে। সন্ত্রাস দমন কার্যক্রমকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে গেলে এই সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করবে। এই বিষয়টির দিকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, কোনো সুস্থ ও বিবেকবান মানুষ এ ধরনের কাপুরুষোচিত হামলা ও নিরপরাধ মানুষের হত্যাযজ্ঞকে মেনে নিতে পারে না। এমন অযৌক্তিক, নিষ্ঠুর, হঠকারী ও ভুল পথে কোনো কিছুই অর্জন করা সম্ভব নয়। কোনো আদর্শ কিংবা ধর্মই এ ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অনুমোদন করে না। শান্তির ধর্ম পবিত্র ইসলাম নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা এবং সন্ত্রাসের ঘোর বিরোধী।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।(প্রথম আলো)

নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট ০৫:০৫ পিএম,০৩ জুলাই ২০১৬,রোববার

এইউ

Share