চাঁদপুর টাইমস বিনোদন:
বাংলা সিনেমার ঘোর অন্ধকারে প্রয়াত পরিচালক এহতেশামের হাত ধরে এক ‘চাঁদনী রাতে’ শাবনূরের আগমন ঘটে চলচ্চিত্রে। তারপর আলো ছড়াতে ছড়াতে হয়ে উঠেন ঢালিউডের নির্ভরযোগ্য নায়িকা। প্রায় ২০ বছরের ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে এসে শাবনূর হঠাৎ করেই যেন ক্লান্ত হয়ে পড়েন।
অনিয়মিত হয়ে পড়েন তিনি। সর্বশেষ ২০১৩ সালে মুক্তি পায় মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’। এ ছবিটি শেষ করেই ২০১৩ সালের অক্টোবরে তিনি পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ায়। আর এ সময়েই ফাঁস হয়ে যায় শাবনূরের গোপন বিয়ের খবর। এর কয়েক মাস পরেই ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর ছেলে সন্তানের মা হন শাবনূর।
এরপর থেকেই শোনা যাচ্ছিল দেশে ফিরবেন তিনি। আসি আসি করেও শাবনূর এলেন ২০১৪ সালের ১ লা অক্টোবর। ছেলে আইজানকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দেশে থাকলেও সন্তানকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় কোন ছবির শুটিং করতে পারেন নি শাবনূর। অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগে শাবনূর বেশকিছু ছবির কাজ অসমাপ্ত রেখে গিয়েছিলেন।
এর মধ্যে এম এম সরকারের ‘পাগল মানুষ’, মোস্তাফিজুর রহমান মানিকের ‘এমনও তো হয় প্রেম’ মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর ‘অবুঝ ভালোবাসা’ আর নজরুল ইসলাম খান পরিচালিত ‘স্বপ্নের বিদেশ’। কথা ছিলো অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেই এ ছবিগুলোর কাজ শেষ করবেন। কিন্তু বিয়ে করে সন্তান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সংসার জীবনে। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই আটকে আছে এই ছবি গুলোর কাজ। এদিকে অপেক্ষায় থাকা পরিচালকদের মধ্যে প্রয়াত এমএম সরকারের ‘পাগল মানুষ’ ছবির কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেন বদিউল আলম খোকন।
কয়েক মাস আগে এ ছবিটির শুটিংয়ে শাবনূরের অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি অংশ নিয়েছেন ১লা আগস্ট। টানা তিনদিন শুটিং করেন শেষ করেন ছবির অসমাপ্ত একটি গানের কাজ। এদিকে শুটিং স্পটেই সাংবাদিকদের শাবনূর জানিয়েছেন আগামী মাসে তিনি আবার অস্ট্রেলিয়ায় চলে যাবেন। আসবেন কোরবানীর ঈদের পরে। বাকী ছবিগুলোর অসমাপ্ত কাজ শেষ না করেই চলে যাওয়ার বিষয়টি হতাশ করছে সংশ্লিষ্ট পরিচালক ও প্রযোজকদের। শুধু তাই নয়, বেশকিছু নতুন ছবিতেও শাবনূরকে নিয়ে কাজ করার কথা ভেবেছিলেন পরিচালক-প্রযোজকরা।
কিন্তু সেসব সম্ভাবনাও এবার নাকচ হয়ে যাচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হয়েছেন তারা। এর মধ্যে সালাউদ্দীন লাভলুর একটি ছবিতে অভিনয় করার কথা ছিলো শাবনূরের। কিন্তু এই ছবিটাও করবেন করবেন বলে করা হচ্ছে না তার। এবার সবাই আশার আলো দেখলেও শুটিং শুরু করার আগেই শাবনূর চলে যাচ্ছেন আবারো অস্ট্রেলিয়ায়। শাবনূর যদিও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি স্লিম হয়ে আবার দেশে ফিরে আসবেন। এসেই নতুন ছবি শুরু করবেন। কিন্তু আসলেই কি তিনি ফিরবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শাবনূর বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি অবশ্যই ফিরবো।
এই মুহূর্তে সবাই আমাকে নিয়ে ছবি বানাতে চাইলেও নিজের মুটিয়ে যাওয়া শরীর নিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে চাই না। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিচালক বলেন, ‘শাবনূর তো এর আগেও বলেছিলেন যে মাত্র কয়েক মাসের জন্য অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছি, ফিরেই কাজ শেষ করবো কিন্তু ফিরলেন তো প্রায় দুই বছর পরে। এবারও মনে হচ্ছে তাই হবে। যাই হোক না কেন শাবনূরকে নিয়ে ছবি বানাতে ইচ্ছুক পরিচালকরা সাময়িকভাবে হতাশই হয়েছেন।
এই ফাঁকে বলে রাখি প্রায় তিন বছর ধরে আটকে আছে মোস্তাুফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘এমনও তো হয় প্রেম’ ছবির কাজ। শুধুমাত্র শাবনূরের একটি গানের দৃশ্য করলেই শেষ হয়ে যায় ছবির শুটিং। অপরদিকে মোস্তাফিজুর রহমান বাবু’র ‘অবুঝ ভালবাসা’ ছবিটিও আটকে আছে প্রায় চার বছর ধরে। প্রয়াত প্রযোজক মো. নাজিমউদ্দিন চেয়ারম্যান প্রযোজিত এ ছবিতে শাবনূরের নায়ক হিসেবে আছেন ইমন। আর পাঁচ বছর ধরে আটকে আছে নজরুল ইসলাম খান পরিচালিত ‘স্বপ্নের বিদেশ’ ছবির কাজ
চাঁদপুর টাইমস- ডিএইচ/২০১৫।