Home / বিশেষ সংবাদ / ও প্রথমে আমার বড় আপাকে, তারপর মেঝো আপা আর এখন আমাকেই…..
ও প্রথমে আমার বড় আপাকে, তারপর মেঝো আপা আর এখন আমাকেই…..

ও প্রথমে আমার বড় আপাকে, তারপর মেঝো আপা আর এখন আমাকেই…..

আমরা সব সময় বলে থাকি যে, জীবন থাকলে সমস্যা থাকবে,আর সমস্যা থাকলে উত্তরনের উপায় ও থাকবে,কিছু কিছু সমস্যা প্রকট অবার কিছু সমস্যা সামান্য। তবে সব সমস্যাই সমস্যা, আর এই সব সমস্যা মোকাবেলা করে জীবন কে এগিয়ে নিতে হবে আমি সোমা কামাল সবাইকে এটাই বলে থাকি সব প্রশ্নের উত্তরে। প্রতিদিন আমরা অগণিত মেইল ও মেসেজ পেয়ে থাকি পাঠকের নির্বাচিত কিছু প্রশ্নের উত্তর আমরা দেবার চেষ্টা করি।

ঠিক তেমনি আজকেও আমাদের একজন অসহায় বোনের চিঠি ছোট করে প্রকাশ করে সেটার উত্তর দিচ্ছি..…

দীর্ঘ সময় থেকে আপনাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনে আমরা পরামর্শ দেবার চেস্টা করছি, আশা করছি এই ধারা অব্যাহত থাকবে, আপনিও চাইলে আপনার যেকোন সমস্যার কথা আমাদেরকে মেইল করতে পারেন কিংবা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

ইশিতা (ছদ্মনাম) এবারের লেখাটি পাঠিয়েছেন মাস্টার্স পড়ুয়া এক বোন মাগুরা থেকে, আপু জীবন টা নিয়ে এক দুর্বিষহ যন্ত্রনায় আছি। আমার জীবন এমন হলো কেন সেটার আপনি কি ব্যাখ্যা দিবেন? আমি ক্লাস নাইনে থাকাকালীন একটি ছেলেকে প্রচন্ড ভালোবাসতাম, তাকে ছাড়া অন্য কাওকে বিয়ে করবো সেটা কল্পনা করিনি কখনো। কিন্তু নিয়তি খুব খারাপ, আমার সম্পকের কথা জেনে যায় আমার পরিবার। জোর করে এক রাতে আমাকে বিয়ে দেওয়া হয় আমার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে। আমার সাথে উনার বয়সের গ্যাপ ষোল বছরের। বাসার অন্য কেও বিয়েতে রাজি ছিলো না, কিন্তু আমি বিয়ে না করলে বাবা বিষ খাবে সেই ভয়েই বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম। বিয়ের পর আমাকে ঢাকায় নিয়ে আসে। বিয়ের কিছুদিন পরেই আস্তে আস্তে প্রকাশ পাই উনার আসল রুপ। উনার মুখ থেকেই জানতে পারলাম আমার বড় বোনের সাথে তার সম্পর্ক ছিলো। কিছু নগ্ন ছবিও আমাকে দেখায়, শুধু তাই নয় বড় আপার সাথে সম্পর্ক ব্রেকাপ হবার পরেই মেঝো আপাকে টার্গেট করে কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেঝো আমার সাথে বিয়ে হয়নি। এটা আমি উনার মুখ থেকেই শুনলাম, বড় আপা নাকি উনাকে ঠকিয়েছে সেই প্রতিশোধ আমার উপর দিয়ে নিয়েছে। কিছুদিন না যেতেই উনি আমাকে বিভিন্ন কথা তুলে অযথা শারিরীক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। বিয়ের ছয় মাস পার না হতেই উনি আরো ভয়ংকর রুপ ধারণ করে।

একদিন উনার এক বসকে আমাদের বাসায় দাওয়াত করে। রাতে উনার বসকে আমাদের পাশের রুমে থাকতে দেয়। আমাকে উনি সেই বসের রুমে থাকার জন্য পাঠাতে চাই। একথা শুনে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পড়ে। আমি রাজি না হওয়ায় আমাকে ব্যাপক মারধর করে। অনেক কস্টের আমি নিজেকে সেভ করি, আমি আমার আম্মাকে সব কিছু খুলে বলি আম্মা আমাকে ধর্য্য ধারণ করতে বলে। দিনের পর দিন এসব অত্যাচার বাড়তে থাকে, একসময় বাসায় চলে আসি পালিয়ে। এই কথাগুলো বাসার সবাই বিশ্বাস করলেও আব্বা বিশ্বাস করে না। আব্বার চিন্তা এগুলো বিশ্বাস করে মেয়ের পক্ষে আসলে আব্বার সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে যাবে, আমি বাড়িতে চলে আসার দুই মাস পরে ওই মুখোশধারী নরপিশাচ আমাকে আবারো নিতে আসে। আমি যেতে চাইনি তবুও বাবার কারণে যেতে হয়, কিছুদিন পর থেকেই আমার উপর আবারো চলতে থাকে অমানুষিক নির্যাতন। এবার আবারো না পেরে বাড়িতে চলে আসি, আব্বা আমাকে আর বাড়িতে রাখতে চায় না। আব্বা বাড়ি থেকে বলে হয় স্বামীর ঘর করতে হবে, না হলে বাড়ি ছাড়তে হবে। তখন সিদ্ধান্ত নিই বাড়ি ছাড়বো তবুও ওই নরপিশাচের কাছে ফিরে যাবো না। আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে আসি, সেই থেকে আজো বাড়িতে যাইনি। আমার আম্মা ছাড়া আর কেও আমার খোঁজ নেয় না। ঢাকার একটি কলেজে পড়ছি, পাশাপাশি টিউশনি করে চলি। প্রতিনিয়ত আছে স্বামি নামধারী ওই নরপিশাচের হুমকি, আমাকে পেলে নাকি খুন করবে। আপু উনি আমাকে এখনো তালাক দেইনি, আমি সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকি কারণ আমার পাশে কেও নেই। এই শহরে আমি একা, আমি নিজের মতো করে বাচতে চাই, আমি চাই আমার অধিকার। আমি কিভাবে তালাক দিব ওই ভন্ডকে, আমি কিভাবে আইনি সহায়তা পাবো?

পরামর্শ: প্রতিনিয়ত আমরা বিচিত্র সব ঘটনার সম্মুখীন হই, আমরা ভিন্ন ডট কমের মাধ্যমে সবাইকে যথাযথ পরামর্শ ও সাহায্য করার চেস্টা করি। তোমার বড় আপুর উপর প্রতিশোধ নিতে যেয়ে তোমার স্বামী যেটা করেছে সেটা নিতান্তই অনাকাঙ্ক্ষিত। মনুষ্য সমাজে এমন কিছু জানোয়ার আছে এইসব জানোয়ারদের দ্বারা সবকিছুই সম্ভব, আর তোমার বাবা যেটা তোমার সাথে করেছে সেটা একদম উচিত হয়নি।তোমার অবশ্যই তালাক দেবার অধিকার আছে চাইলেই সেটা করতে পারো। আর হুমকি মোকাবেলা করার জন্য আইনি সহায়তা নিতে পারো, আমরা ভিন্ন ডট কমের পক্ষ থেকে তোমাকে যথাযথ সাহায্য করার চেস্টা করবো, পাশাপাশি অন্য কেও তোমার দুরাবস্থার কথা শুনে এগিয়ে আসতে চাইলে সেটা তোমাকে জানিয়ে দিবো, ভালো থেকো, ভেংগে পড়ো না, তোমার জীবনের গতি অবশ্যই পরিবর্তিত হবে।

বি:দ্র:আমরা শুধুমাত্র মানুষিক শক্তির জ ন্য পরামর্শ দিয়ে থাকি। আইনগত সহযোগীতার জন্য অবশ্যই বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও আদালত আছে। সমস্যা অতি গুরুতর হলে সেখানে গেলে আপনি অবশ্যই আইনি সহায়তা পাবেন।

এই লেখাটি ভূক্তভোগী শুধু মাত্র পাঠিয়েছেন, এই লিখাটি কেউ অন্য কোথাও প্রকাশ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

|| আপডেট: ০৫:৫৫ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০১৬, বুধবার

এমআরআর