চট্টগ্রামে প্রতি ঘণ্টায় ভাঙছে তিনটি সংসার। চলতি বছর গত আট মাসে সংসার ভেঙেছে ৮ হাজার ৪২টি। সংশ্লিষ্টদের মতে, অর্ধেকের বেশি সংসার ভেঙেছে পরকীয়ার জেরে। এছাড়া যৌতুক, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, অভাব-অনটন, কাবিননামা বাণিজ্য, মাদকাসক্তি, বাল্যবিবাহ, সন্দেহসহ নানা কারণেও সংসার ভাঙছে। বিয়ে বিচ্ছেদে পুরুষের চেয়ে এগিয়ে নারীরা। ৭০ শতাংশ বিচ্ছেদের আবেদন করছে নারীরাই।
পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা সরকারি চাকরিজীবী আরিফুর রহমান (২৮) সম্প্রতি কক্সবাজার মহেশখালীর এক মেয়েকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। মাত্র ১৬ দিনের মাথায় ভেঙে যায় তাদের সংসার। অভিযোগ, বিয়ের আগে আরিফুরের সঙ্গে অন্য এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পর বিষয়টি স্ত্রী জানতে পারলে ভেঙে যায় সংসার।
একইভাবে নগরীর কোতোয়ালি থানার ব্যাটারি গলি এলাকার মুরগি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের সংসারও ভেঙে গেছে গত সপ্তাহে। একে অপরকে পরকীয়ায় জড়িত বলে সন্দেহ করায় তাদের সংসার ভেঙেছে। এ দম্পতির সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া একটি মেয়ে আছে।
এদিকে রাউজান উপজেলার পাহাড়তলীর ওসমান গণি জানান, দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে গত সপ্তাহে তার স্ত্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠিয়েছেন তাকে। কাবিননামার ১০ লাখ টাকার জন্যই সংসার ভেঙেছে বলেই দাবি ওসমানের।
সম্প্রতি মিনু আকতার নামে এক নারীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন কাতার প্রবাসী ইমাম হোসেন। অভিযোগ, তাকে বিয়ে করার পর বিচ্ছেদ না হওয়া সত্ত্বেও মিনু এ পর্যন্ত ৫টি বিয়ে করেছেন। তিনি দাবি করেন, বিয়ের পর মামলার ভয় দেখিয়ে কাবিননামার টাকা নিয়ে মিনু অন্যজনকে বিয়ে করেন। তার কাছ থেকে ১২ লাখ টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছেন মিনু।
চট্টগ্রাম জেলা লিগ্যাল এইডের সহকারী এরশাদুল ইসলাম বলেন, লিগ্যাল এইডে শুধু বিচ্ছেদের জন্য প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৬০টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে কারও কারও সংসার টিকেও যায়। সংসারে উভয়পক্ষ অসম্মত থাকলে সেক্ষেত্রে ঠেকানো সম্ভব হয় না।