জাতীয়

সংসদে কান্নাজড়িত কণ্ঠে করোনা মুক্তিতে তওবা ও মোনাজাত

করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য জাতীয় সংসদে মোনাজাত করা হয়েছে। মোনাজাতে এ ভাইরাসকে গজব‍ উল্লেখ করে এর থেকে মুক্তির জন্য তওবা করা হয়েছে। বাংলাদেশের মাটি থেকে করোনা নির্মূলে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা হয়েছে।

মোনাজাতে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেছেন, ‘আমাদেরকে তুমি করোনাভাইরাসের হাত থেকে সুরক্ষা দান কর। বাংলাদেশের মাটি থেকে আল্লাহ তুমি করোনাভাইরাসকে নির্মূল করে দাও। তোমার গজব, আজাব তুমি তুলে নাও মাওলা। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তুমি তোমার রহমত বর্ষণ কর। তুমি তোমার রহমতের শামিয়ানা দিয়ে আমাদের বাংলাদেশকে ঢেকে দাও। তুমি সবই পার। আমাদেরকে হেফাজত কর। তুমি আমাদের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের হেফাজত কর। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে তুমি হেফাজত কর। তিনি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন, সেই চলার পথকে তুমি সুগম করে দাও।’

রোববার (১৪ জুন) সংসদে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুতে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় এই মোনাজাত করা হয়। এ সময় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত ছিলেন। মোনাজাতে বার বার কেঁদে ফেলেন ডেপুটি স্পিকার।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, ‘আমার ছোটবেলার খেলার সাথী মোহাম্মদ নাসিম, এছাড়া ধর্মমন্ত্রী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আল্লাহ তুমি যে করোনাভাইরাস দিয়ে আমাদের ওপরে আজাব-গজব নাজিল করেছ, আল্লাহ তুমি আমাদের আর কত পরীক্ষা করবে? আমাদের তো ঈমানের জোর খুব কম। আমাদের আর পরীক্ষা নিও না। আমাদের দেশ থেকে করোনার এই গজব এবং আজাব তুমি তুলে নাও। সারা পৃথিবী থেকে এই করোনাভাইরাসকে তুমি নির্মূল করে দাও। আল্লাহ তুমি তোমার খাস রহমত ও বরকত দিয়ে আমাদের দেশটাকে ভরপুর করে দাও। আল্লাহ তোমার রহমতের শামিয়ানা দিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঢেকে রাখ।’

তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বকে এই করোনাভাইরাস ওলট-পালট করে দিয়েছে। আমাদের দেশ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছিল। আমাদের দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ ছিল না। আমরা মধ্য আয়ের দেশে সিঁড়িতে পাড়া দিয়েছিলাম। ২০২১ সালের মধ্যে আমাদের দেশ মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরিত হবে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের হোঁচট খাওয়া লাগল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে তোমার শাহি দরবারে হাত তুলেছি। আমাদের কারও হাত যদি পছন্দ হয় তাদের উছিলায় তার দোয়া তুমি অবশ্যই কবুল করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতের উছিলায় তুমি আমাদের সবার দোয়া কবুল কর। এই মহামারির সময় তুমি আমাদের অনেককেই তুলে নিয়েছ। আমাদের নাসিম ভাই, আব্দুল্লাহ ভাইসহ সব সহকর্মী বাংলাদেশের যত নারী-পুরুষ ইন্তেকাল করেছেন তুমি তাদের সকলকে বেহেশত নসিব কর।’

তিনি বলেন, ‘আমরা তোমার কাছে তওবা করেছি। আল্লাহ তুমি বলেছ, তুমি তওবা পছন্দ কর। আমরা তওবা করছি- আমরা আর গুনাহ করব না। আমরা নিজেরা ভালোভাবে চলাফেরার চেষ্টা করব। তারপরও কি তুমি আমাদের প্রতি রহমত করবে না?’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছে আরও প্রার্থনা করে বলেন, ‘দয়া করে তুমি আমাদের প্রতি রহমত কর। তুমি যদি আমাদের খালি হাতে ফিরিয়ে দাও তাহলে তোমার নামের অমর্যাদা হবে। আমাদের খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়ে তোমার কী লাভ?’

Share