জাতীয়

সংরক্ষণ করা হচ্ছে বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারতের দেয়া ভ্যাকসিন

ঢাকার তেজগাঁওয়ে ইপিআই সেন্টারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে ভারতের দেয়া করোনা ভাইরাসের ২০ লাখ চার হাজার ডোজ ভ্যাকসিন।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ ফ্লাইটে করে বেলা ১১ টা ২০ মিনিটের দিকে উপহার হিসেবে দেয়া ভ্যাকসিনের চালান ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। পরে সেখান থেকে বিশেষ ভ্যানে করে ভ্যাকসিন ইপিআইয়ের সংরক্ষণগারে নিয়ে আসা হয়।

ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন আবু হোসেন মো.মইনুল আহসান বলেন,‘ তেজগাঁওয়ের ইপিআইয়ের সংরক্ষণাগারে টিকা সংরক্ষণ করা হবে। আমাদের ৫০ লাখ ভ্যাকসিন রাখার সক্ষমতা আছে। ইতোমধ্যে দু‘টি ফ্রিজার খালি করা হয়েছে। প্রতিটি ফ্রিজারে ২০ লাখ ভ্যাকসিন রাখা যাবে।’

ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা রক্ষায় ইপিআই সংরক্ষণাগার ও আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা.রওশন জাহান আক্তার আলো বলেন, ১৬৭টি কার্টনে করে ভ্যাকসিনের ডোজ এসে পৌঁছেছে। প্রতি কার্টনে আছে ১২০০ ভায়াল ভ্যাকসিন। এক ভায়ালে ১০ জনকে টিকা দেয়া যাবে। ২০ লাখ ৪ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন আছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

ভ্যাকসিন ইপিআই সেন্টারে সংরক্ষণের সময় উপস্থিত ছিলেন ইপিআই প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা.মাওলা বক্স,স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা.সাইফুল ইসলাম,তেজগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.বুলবুলসহ অন্যরা।

এদিকে দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামী এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে টিকা হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন,স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক,পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ শাহরিয়ার আলমসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিনা অর্থে উপহার হিসেবে টিকা দেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন,‘বাণিজ্যিক চুক্তি অনুযায়ী এ মাসের শেষে ৫০ লাখ টিকা আসার কথা এবং সে অনুযায়ী টিকা আসবে। ফ্লাইট শিডিউল হাতে পেলে জানিয়ে দেবো কবে থেকে টিকা পাচ্ছি। এখনও ফ্লাইট শিডিউল পাইনি। এরপর প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে টিকা আসার কথা রয়েছে। টিকা আসার একটি শিডিউল আছে।’

ভ্যাকসিন দেয়া কবে শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘আমরা আজ টিকা গ্রহণ করেছি। এ নিয়ে আমরা পরিকল্পনা করছি। পরিকল্পনা শতভাগ তৈরি হয়ে গেছে তা কিন্তু নয়।’

টিকার ট্রায়াল রানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগামি ছয়-সাত দিনের মধ্যে টিকার একটি ট্রায়াল রান করার চিন্তাভাবনা আছে। সেই তারিখটি আপনাদের জানিয়ে দেবো। তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। চূড়ান্ত দিনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। কারণ ভিডিও কনফারেন্সের মধ্য দিয়ে টিকার ট্রায়ালে যুক্ত হতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

ভ্যাকসিন দেয়া নিয়ে বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে কোনও গুজব না ছড়ানোর জন্য তিনি আহ্বান জানান। তিনি বলেন,‘ভ্যাকসিন মানুষের জীবন রক্ষাকারী ওষুধ। যারা মানুষের জীবন নিয়ে ষড়যন্ত্র,রাজনীতি করে তারা সঠিক লোক নয়। আমরা করোনা মোকাবিলায় আছি, জীবন রক্ষায় আছি। এ মোকাবিলায় ভ্যাকসিন একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। ”

এর আগে গত ১১ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়,আগামি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে করোনাভাইরাসের টিকা জাতীয়ভাবে শুরু হবে।

ঢাকা ব্যুরো চীফ , ২১ জানুযারি ২০২১
এজি

Share