Home / বিশেষ সংবাদ / সংঘাত বাড়ার শঙ্কায় এবার ইউপিতে একদিন বেশি থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
সংঘাত বাড়ার শঙ্কায় এবার ইউপিতে একদিন বেশি থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

সংঘাত বাড়ার শঙ্কায় এবার ইউপিতে একদিন বেশি থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

আগামী ৩১ মার্চ ৭১০টি ইউনিয়ন পরিষদে, তৃতীয় ধাপে ২৩ এপ্রিল ৭১১টিতে, চতুর্থ ধাপে ৭ মে ৭২৮টিতে, পঞ্চম ধাপে ২৮ মে ৭১৪টিতে এবং ষষ্ঠ ধাপে ৪ জুন ৬৬০টিতে ভোট হওয়ার কথা

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবার গতবারের চেয়ে একদিন বেশি মাঠে থাকতে পারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ভোট এবারই প্রথমবারের মতো দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

২২ মার্চ শুরু হতে যাওয়া ছয় ধাপের এই নির্বাচন নিয়ে সংঘাত বাড়ার শঙ্কা প্রকাশ করে আসছে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী নবম সংসদের বিরোধীদল বিএনপি।

এমন প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা উপলক্ষে ভোটের আগে দু’দিন, ভোটের দিন ও পরের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাখার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

কর্মকর্তারা জানান, মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবার ২০১১ সালের চেয়ে একদিন বেশি থাকলেও কেন্দ্র প্রতি নিরাপত্তা সদস্য কম দেওয়া হচ্ছে। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স বরাবরের মতো রাখা হলেও নির্বাহী হাকিম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে ইসি সচিবালয়।

বৃহস্পতিবার ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ সচিব সামসুল আলম স্বাক্ষরিত আইনশৃঙ্খলা সভার কার্যপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার-ভিডিপি, কোস্ট গার্ড, স্পেশাল ব্রাঞ্চ, গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের ৪২৭৫টি ইউনিউয়ন পরিষদে নির্বাচনের নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে এনইসি মিলনায়তনে শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে ৩ মার্চ বৈঠক করবে ইসি। এতে সার্বিক পরিকল্পনা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গতবার ইউপি ভোটে তিনদিন মাঠে (ভোটের আগের দিন, ভোটের দিন ও পরের দিন) ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রতি কেন্দ্রে ২০ জন করে নিরাপত্তা সদস্য ছিল।

উপ সচিব সামসুল আলম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভোটের নিরাপত্তা পরিকল্পনায় উপজেলাভিত্তিক মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে তিন প্লাটুন করে বিজিবি রাখার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সঙ্গে থাকবে র‌্যাবের তিনটি টিমও।

উপকূলীয় এলাকায় বিজিবির পরিবর্তে কোস্ট গার্ড থাকবে। প্রতি ইউনিয়নে পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসার সমন্বয়ে একটি করে মোবাইল এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।

“ভোটের আগে দু’দিন, ভোটের দিন ও পরের দিন তারা দায়িত্ব পালন করবে। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ছাড়াও ভোটকেন্দ্রের বাইরে র‌্যাব-পুলিশের ‘স্ট্যাটিক’ (রিজার্ভ ) ফোর্স নিয়োগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।”

এ উপ সচিব জানান, ভোটের সময়কার পরিস্থিতি ও গোয়েন্দা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনে সার্বিক সিদ্ধান্ত নেবে ইসি। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করবে।

গত ইউপি নির্বাচনে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে একজন করে নির্বাহী হাকিম ছিলেন।

ইসির আইন শাখার কর্মকর্তারা জানান, এবার প্রতি ধাপে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর থেকে উপজেলাভিত্তিক একজন নির্বাহী হাকিম নিয়োগ করা হচ্ছে; যিনি আচরণবিধি তদারকি করবেন।

এছাড়া ভোটের আগে-পরে চার দিন প্রতি উপজেলায় আরও দু’জন করে নির্বাহী হাকিম ও একজন করে বিচারিক হাকিম নিয়োগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

২০১১ সালে ইউপি ভোটে সীমিত পরিসরে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর টহল থাকলেও এবার তা থাকছে না।

৩ মার্চ অনুষ্ঠেয় সভায় সাতটি বিষয়কে এজেন্ডাভুক্ত করা হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে ৪২৭৫টি ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, নির্বাচনপূর্ব শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে করণীয় নির্ধারণ, সন্ত্রাসী, মাস্তান ও চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনী মালামালের নিরাপত্তা, আচরণবিধি সুষ্ঠুভাবে প্রতিপালনের পরিবেশ সৃষ্টি, কেন্দ্রের নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ডের সমন্বয় করা।
এবার ছয় ধাপে সারা দেশে ইউপি ভোট হবে। প্রথম ধাপে ৭৩৮ ইউপিতে ভোট হবে ২২ মার্চ।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, প্রথম ধাপে ১৬টি দল প্রার্থী দিয়েছে। ৭৩৮ ইউপিতে চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৩৯ হাজার ৪৩০টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩ হাজার ৫৬৮টি, সাধারণ সদস্য পদে ২৭ হাজার ৯৪৭ টি ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭ হাজার ৯১৫টি।

তফসিল অনুসারে দ্বিতীয় ধাপে আগামী ৩১ মার্চ ৭১০টি ইউনিয়ন পরিষদে, তৃতীয় ধাপে ২৩ এপ্রিল ৭১১টিতে, চতুর্থ ধাপে ৭ মে ৭২৮টিতে, পঞ্চম ধাপে ২৮ মে ৭১৪টিতে এবং ষষ্ঠ ধাপে ৪ জুন ৬৬০টিতে ভোট হওয়ার কথা।