শ্রদ্ধা অনিঃশেষ

সকলের মোরা নয়ন ফুটাই, আলো জ্বালি সব প্রাণে
নব নব পথ চলিতে শেখাই-জীবনের সন্ধানে।
পরের ছেলেরে এমন করিয়া শেষে
ফিরাইয়া দেই পরকে আবার অকাতরে নিঃশেষ । – গোলাম মোস্তফা ।।

অন্যের কথা জানিনা, তবে আমার জীবনে আমার জন্মদাতা-জন্মদাত্রীর পরেই যাদের স্থান ছিল, আছে এবং রইবে তারা নিঃসন্দেহে আমার শিক্ষকমন্তলী । সেই তালপাতা আর কালির দোয়াতের অ, আ থেকে শুরু করে আজকের পর্যন্ত এবং এমনি করে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত যাদের কাছ থেকে দিক্ষা লাভ করেছি এবং করবো সবার প্রতি আমার হৃদয়ভরা শ্রদ্ধার অর্ঘ্য ।

অনেকেই প্রিয় শিক্ষক বাছাই করে ফেলেন, যেটা আমি কোনদিন পারিনি কিংবা পারবোও না । সব শিক্ষকই আমার কাছে সমান প্রিয় । কার ওপরে কাকে স্থান দেই ? কোন শিক্ষক যদি শিক্ষাদানের ব্যাপারে সামান্য কার্পণ্য করতো তবে তো আমি জ্ঞানান্ধ হয়েই বেড়ে উঠতাম । সেই পাঠশালার মোটা চশমাওয়ালা গুরুগম্ভীর গুরুমহাশয় থেকে আজকের এই সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে শিক্ষকরূপী যে সকল বিশাল বটগাছের ছায়ায় আশ্রয় পেয়েছি-সকলের কাছে অজস্র কৃতজ্ঞচিত্তে আমি দাঁড়িয়ে রয়েছি । আজ এ বিশেষ দিবসে তাদেরকে কি দিয়ে শ্রদ্ধা জানাই-আমি যে রিক্ত-শুণ্য । তবুও অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে অজস্র শুভ কামনা সেই সকল মানব-মানবীদের জন্য যারা আমাকে মানুষের সংজ্ঞা শিক্ষিয়েছেন, জীবনের স্বরূপ বুঝিয়েছেন ।

অনন্তকাল বেঁচে থাকুক আমার শিক্ষক আমার প্রাণে, সবার গুরু সবার মনে । দোয়ার অবারিত ঝাণ্ডা আজ উম্মুক্ত করে দিলাম; যা শ্রদ্ধাপূর্ণ আশীর্বাদ হয়ে আমার সকল শিক্ষকের পদচুম্বন করে আমার জন্য তাদের স্নেহপূর্ণ ভালোবাসার নিরব বার্তা নিয়ে আয় । সবাই আমৃত্যু ভালো থাকুন । প্রাণের মানুষদের মধ্যে যারা গত হয়েছেন তাদের যেন স্রষ্টা সর্বোচ্চ সম্মানের আসনে আসীন করেন । যদিও জানি, গুরুজনদের কাছে দোয়া চেয়ে নিতে হয়না তবুও তাদের কাছ থেকে আরো বেশি দোয়ার লোভ করি ।

আজ এই বিশেষ দিনে শ্রদ্ধাবনত হচ্ছি আমার পিতৃপুরুষের প্রতি কেননা তার কাছ থেকে শুধু আমি বর্ণজ্ঞান পাইনি বরং নীতিজ্ঞানও পেয়েছি । সকল শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের দিনে আমার বাবাকেও বিশেষভাবে স্মরণ করছি ।

রাজু আহমেদ । কলামিষ্ট ।
facebook.com/rajucolumnist/

চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৭:৪৮ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০১৫, সোমবার

ডিএইচ/২০১৫।

Share