শ্বাসরুদ্ধ পরিস্থিতিতে হাত গুটিয়ে থাকতে পারি না: খালেদা জিয়া
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘শ্বাসরুদ্ধকর’ আখ্যায়িত করে এই অবস্থায় হাত গুটিয়ে বসে থাকা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দেশে গণতন্ত্র নেই, গুম-খুনের মহোৎসব চলছে মন্তব্য করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নেতাকর্মীদের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
বুধবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। আগামীকাল বিএনপির ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের চেয়ারপারসন এই বিবৃতি দেন।
দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘১ সেপ্টেম্বর দিনটি আমাদের সবার জন্য আনন্দ ও প্রেরণার। ১৯৭৮ সালের এই দিনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বাকশালী একদলীয় দুঃশাসনের জের ধরে সেসময়ে দেশে বিরাজমান চরম জাতীয় সংকটের কারণে যে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল তা পূরণ করতে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’
বিবৃতিতে খালেদা বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া বিএনপি বিগত ৩৮ বছরে বারবার সবার অংশগ্রহণমূলক জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে এবং দেশ ও জনগণের সমৃদ্ধি ও কল্যাণে কাজ করে গেছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের এই প্রিয় দল অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি ৯ বছরের স্বৈরাচার বিরোধী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি আপসহীন অগ্রণী ভূমিকা পালন করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।’
দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপির ভূমিকার কথা তুলে ধরে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার লক্ষ্যে বিএনপি ১৯৯১ সালে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনকালে সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশসহ দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বিএনপির বলিষ্ঠ ভূমিকা জনগণ কর্তৃক সমাদৃত হয়েছে।’
বিএনপি এখন সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অক্ষুণ্ন রেখে দেশ ও জনগণের সেবায় বিএনপি আগামী দিনগুলোতেও বলিষ্ঠ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ।’
দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচনের পর গণতন্ত্র এখন মৃতপ্রায়। দেশবিরোধী নানা চুক্তি ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বর্তমান সরকার জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে চলেছে। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দেশব্যাপী পথে-ঘাটে শুধু লাশের মিছিল। বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি নিয়ে হাহাকার চারদিকে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দেশজুড়ে গণহত্যা. গুম, গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, নিপীড়ন ও নির্যাতনের মহোৎসব চলছে। এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না।’
নেতাকর্মীদের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘জনগণের অধিকার আদায়ে তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের আন্দোলন জনগণের হারানো অধিকার ও তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য।’প্রাইমনিউজ
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৩:৩৩ পি,এম ১৫ আগস্ট ২০১৬,বুধবার
ইব্রাহীম জুয়েল