গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নতুন পটকা গ্রামের রোকন ফকিরের মেয়ে রিতা আক্তার (২৩)। প্রায় তিন বছর আগে একই উপজেলার নারায়ানপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে কাতার প্রবাসী আসাদুলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের সঙ্গেই সংসার শুরু করে রিতা। চোখজুড়ে সুখের স্বপ্ন নিয়ে আসা রিতার জীবন প্রদীপ শ্বশুরবাড়ির লোকদের দেয়া আগুনেই নিভে গেল। রোববার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
এ ঘটনায় রিতার বাবা বাদী হয়ে ভাসুর বিপ্লব, এবাদুল্লাহ্, এমজা, শাশুড়ি হাজেরা, ননদ জান্নাত ও ননদের স্বামী কামালের নাম উল্লেখ করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন।
রিতার বাবা রোকন উদ্দিন জানান, তিন বছর আগে আসাদুল্লাহর সঙ্গে পারিবারিকভাবে রিতার বিয়ে দেন। বিয়ের পর থেকেই আসাদুল্লাহ্ প্রবাসী জীবন যাপন করছে। প্রায় এক বছর আগে পারিবারিকভাবে একই বাড়িতে আলাদা বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেয় রিতা। এরপর থেকে তার স্বামী বাড়িতে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুরবাড়ির তার ওপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার ও নির্যাতন শুরু করে।
এদিকে রিতার স্বামী আসাদুল দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় এবং আমাকে গাড়ি কেনার জন্য আড়াই লাখ টাকা দেয়। বাকি সাড়ে ছয় লাখ টাকা আমি যোগাড় করে গত ৫ মাস আগে আসাদুলের নামে একটি প্রাইভেটকারও কিনি। এতে স্বামীর বাড়ির লোকজন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে।
গত বুধবার (২৮ নভেম্বর) রাতে টয়লেট থেকে ফেরার সময় ভাসুর ও শাশুড়ি মারপিট করে রিতার গায়ে থাকা কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় সে চিৎকার করলেও শ্বশুরবাড়ির কেউ এগিয়ে আসেনি। পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে রোববার ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মারা যায় সে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় মামলা রুজু হয়েছে। ইতোমধ্যেই রিতার শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
বার্তা কক্ষ
০৩ ডিসেম্বর,২০১৮