আগামী কাল বাদে সোমবার ১৭ জুন পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদের আর মাত্র একদিন বাকী। ঈদকে কেন্দ্র করে শেষ মুহূর্তে জমজমাট হয়ে উঠেছে চাঁদপুরের মতলব উত্তরের কোরবানীর পশুর হাটগুলো। ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে প্রতিটি পশুর হাট। শনিবার (১৫ জুন) উপজেলার কয়েকটি হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সারা বছল পরম যত্নে লালন পালন করে কোরবানির পশুর হাটে তুলতে শুরু করেছেন খামারি ও গরু ব্যবসায়ীরা। ঠিক তখনই তাদের মাথায় হাত পড়েছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার শত শত খামারি ও গরু ব্যবসায়ীদের। খামারি ও গরু ব্যবসায়ীদের অভিযোগ এবারের বাজার খামারি ও বেপারীদেও অনূকুলে নেই। কারণ বাজারে বেচাকেনার অবস্থা ভালো না। প্রতি বছরই এই ঈদকে কেন্দ্র করে পশু প্রস্তÍুত কওে তারা। এই গরুই তাদের প্রধান অবলম্বন। কিন্তু এবার হাটে গরু উঠিয়ে খামারি ও ব্যবসায়ীরা প্রকৃত মূল্য না পেয়ে তাদের চোখে মুখে ছিলো হতাশার ছাপ।
উপজেলার সুজাতপুর পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, এই হাটটিতে শেষ মুহূর্তে কোরবানির পশু বিক্রির ধুম পড়েছে।সেখানে কথা হয় গরু ব্যবসায়ী উপজেলার দশানী এলাকার খামারী ছানা উল্লাহ। অনেক স্বপ্ন নিয়ে এবার কোরবানির । দিকে কেন্দ্র করে ১৬টি গরু প্রস্তুত করেছেন। আজ সুজাতপুর বাজারে ১৬টি গরু এনেছেন, বিক্রি করেছেন মাত্র তিনটি গরু। দাম কম পাওয়ায় তিনি এবার লোকশানের মুখে পড়েছেন। একদিকে গরুর খাদের দাম বেশি অন্যদিকে গরু বেশি ক্রেতা কম তাই বাজারে গরুর দাম কম। এই ১৬টি গরুর লোকশানে পরে সব শেষ হয়ে গেছে স্বপ্ন। অনেক লাভের আশায় গরু তৈরি করে ছিলাম।
সেখানে কথা হয় গরু আরেক ব্যবসায়ী আবদুল মান্নানের সাথে। তিনি মোট ৬টি গরু এনেছেন। গত দুই দিনে ৩টি গরু বিক্রি করেছেন। আজ একটি গরু বিক্রি করেছেন। কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও বাকি গরুটি বিক্রি করে দেবেন। দাম কম হওয়ায় গরুগুলো বিক্রি করে লাভবান হতে পারি নাই।
কোরবানির জন্য পশু কিনতে আশা সাংবাদিক নওফেল বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহার উদ্দেশ্যে সবাই যেহেতু সবাই আজকে সুজাতপুর বাজারে কোরবানির পশু কিনতে এসেছে। ঠিক তেমনি আমিও কোরবানির জন্য পশু কিনতে এসেছি। এ বাজারে প্রচুর গরু আছে। তবে এখনও পর্যন্ত দাম তেমন কমেনি। দাম বেশিও না, আবার কমও না, সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। গরু দেখছি পচ্ছন্দ মতো কিনে বাড়ি ফিরবো ইনশাল্লাহ।
সাইজ উদ্দিন নামে আরেক এক ক্রেতা বলেন, মাঝারি সাইজের গরু কিনতে এসেছি। বাজেট ৮০ থেকে ১ লাখ টাকার মতো। আজকে গরু নিয়েই বাসায় ফিরবো। গরুর দাম তুলনামূলকভাবে কম। হাটে ছোট গরুর তুলনায় বড় গরুর সংখ্যা বেশি। তবে চাহিদা বেশি ছোট গরুর।
তবে গরুর দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে বিক্রেতাদের দাবি ক্রেতারা দাম কম বলছেন। তিন লাখ টাকার গুরুর দাম তারা দুই লাখ টাকাও বলছেন না। আর ক্রেতাদের দাবী ব্যবসায়ীরা দাম বেশি চাইছে।
এদিকে হাটের ইজারাদার তামজি পাটোয়ারী রিয়াদ বলেন, ক্রেতাদের ঢল নেমেছে সুজাতপুর গরু বাজারে। বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। যার প্রমান মিলেছে হাসিল ঘরগুলোর সামনে। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে হাসিল দিতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। আর কম দামে বিক্রি করে মন খারাপ করে আছে বিক্রেতারা।
বিক্রেতাদের দু:খ কেউ না বুঝলেও বুজেছেন হাট ইজারাদার তামজি পাটোয়ারী রিয়াদ । তিনি কোন চাপ প্রয়োগ করছেন না হাসিল কাটতে। তিনি বলেন, যেহেতু ব্যবসায়ীরা লোকসানে গরু বিক্রি করছে তাই তাদের কোন ধার্য নেই। যা মন চায় দিয়ে যান। আবার অনেকের কাছ থেকে হাসিলও নিচ্ছেন না।
এদিকে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, কোরবানির পশুর সংকট দেখা দেওয়ার সম্ভাবনাও নেই। ফলে হুটহাট দাম বেড়ে যাওয়ার আতঙ্কও নেই। উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার পশু প্রস্তÍুত করেছেন খামারীরা। উপজেলায় প্রয়োজন ১০ হাজারের মতো পশু। বাকী পশুগুলো বাহিরের থেকে আসে। প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আরও জানান আজ এবং আগামী কাল রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মুখেই হাঁসি ফুটবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ১৫ জুন ২০২৪