জাতীয়

শেষ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ পাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন

শাহজাহান শাওন :

শেষ পর্যন্ত কি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ পাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া? সহসাই কোনো উত্তর মিলছে না বলে বাজারে এখন এটি কোটি টাকার প্রশ্ন। নরেন্দ্র মোদির সফর নিয়ে দু’দেশের জনগণ, গণমাধ্যমের যেমন উৎসাহ-উদ্দীপনার কোনো কমতি নেই, তেমনি মোদি-খালেদার সাক্ষাৎ নিয়েও কৌতূহলের শেষ নেই। শত জল্পনা-কল্পনার পাশাপাশি মোদি-খালেদার সাক্ষাতের বিষয়টি নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্যও দেয়া হচ্ছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা চলছে রাজনৈতিক মহলে।

শুক্রবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বৈঠক হচ্ছে না। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মোদি-খালেদার বৈঠকের কোনো সুযোগ নেই।

আবার একইদিন অর্থাৎ শুক্রবার দুপুরে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, বাংলাদেশে সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ পাচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। নয়াদিল্লিতে মোদির আসন্ন ঢাকা সফর উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম সাংবাদিকদের জানান, সফরের শেষ দিন অর্থাৎ ৭ জুন রোববার মোদি-খালেদার সাক্ষাৎ হবে।

একই দিনে মাত্র ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভারতের পররাষ্ট্র সচিব মোদি-খালেদার সাক্ষাৎকার নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিলেও ভারতীয় হাইকমিশন এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কিছুই জানায়নি। হাইকমিশন মোদির সফর শিডিউল জানালেও বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে কি হবে না তার কোনো স্পষ্ট তথ্য দেননি।

ঢাকা সফরে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি ব্যস্ততার কারণে খালেদা জিয়াকে সময় দিতে পারছেন না বলে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হলেও এর পেছনে অন্য কারণও থাকতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। মোদির সঙ্গে বিএনপি নেত্রীর সাক্ষাৎ হওয়া-না হওয়া নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে আগে থেকেই। মিডিয়াও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে আসছে। সাক্ষাতের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকেও দৌড়ঝাঁপের কমতি নেই। কিন্তু সফরের তারিখ ঘনিয়ে আসা অবস্থায় দুই দেশের পররাষ্ট্র দফতরের দুই ধরনের বক্তব্যে ধোঁয়াশা যেন আরো বাড়লো।

এদিকে আসন্ন বাংলাদেশ সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ হচ্ছে না, এমনটি ধরে নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে বেশ স্বস্তি বিরাজ করছে। নরেন্দ্র মোদি-খালেদার সাক্ষাৎ না হওয়ার ঘটনাকে আওয়ামী লীগ তাদের আরেকটি কূটনৈতিক বিজয় বলে মনে করে দলের নেতারা বেশ ফুরপুরে মেজাজে বক্তব্য দিয়ে আসছেন।

অন্যদিকে মোদি-খালেদার সাক্ষাতের বিষয় নিয়ে বিএনপি এখনো মুখ খোলেনি। সাক্ষাতের বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য না দেয়ার বিষয়টিও রহস্যজনক বলে অনেকে মনে করছেন। মোদির সফরের আগে বিএনপি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তাব দিলেও মোদির সঙ্গে বৈঠক হবে কি হবে না, বৈঠক হলেও তাতে কোন কোন বিষয় গুরুত্ব পাবে সে ব্যাপারে কোনো কথা বলেনি। কেউ কেউ মনে করছেন বিএনপি যদি মোদি-খালেদার বৈঠক নিয়ে বেশি উৎসাহ দেখায় তাহলে সরকার ভিন্ন কৌশল নিতে পারে। আবার শেষ পর্যন্ত যদি মোদির সঙ্গে খালেদার দেখা না মেলে এবং তা নিয়ে যেন বিরোধী পক্ষ বিশেষ রাজনীতি করতে না পারে সে কারণেই হয়তো বিএনপির এই নীরবতা।

তবে জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটছে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই। ৬ জুন শনিবার সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে পা রাখলেই মোদি-খালেদার সাক্ষাতের বিষয়ে ধূম্রজাল কেটে যাবে।

শুক্রবার ০৫ জুন ২০১৫ :  ১১:৪৪

চাঁদপুর টাইমস : এবিআর/ এমআরআর/২০১৫

চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Share