Home / জাতীয় / শেখ হাসিনার সেঞ্চুরি
শেখ হাসিনার

শেখ হাসিনার সেঞ্চুরি

দেশ ছেড়ে ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর একের পর এক হত্যা মামলা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। সবগুলো মামলাই হয়েছে জুলাই হত্যাকাণ্ড নিয়ে। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে পতন হয় হাসিনার। এরপর বেরিয়ে আসে মৃত্যুর সংখ্যা। এখন পর্যন্ত ১ হাজারেরও বেশি মানুষ হাসিনা সরকারের হাতে নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম হত্যা মামলা করা হয় ১৩ আগস্ট রাজধানীতে। আর শততম মামলাটি করা হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এ সব মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক মন্ত্রী, সচিব, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিককেও আসামি করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা হত্যা মামলাগুলোর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গণহত্যার অভিযোগে আটটি মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় জমা পড়েছে। আর ৯৪টি মামলা করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায়। সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ১০১টি হত্যা মামলা করার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া অপহরণ করে গুমের অভিযোগেও একটি মামলা করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

দেশের বিভিন্ন থানায় করা হত্যা মামলাগুলোর মধ্যে ১৩ আগস্ট একটি, ১৪ আগস্ট একটি, ১৫ আগস্ট তিনটি, ১৬ আগস্ট দুটি, ১৭ আগস্ট তিনটি, ১৮ আগস্ট আটটি, ১৯ আগস্ট চারটি, ২০ আগস্ট ১০টি, ২১ আগস্ট ১০টি, ২২ আগস্ট ১০টি, ২৩ আগস্ট ১৪টি, ২৫ আগস্ট বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দুটি ছাড়াও ১০টি, ২৬ আগস্ট একটি, ২৭ আগস্ট চারটি, ২৮ আগস্ট চারটি এবং গতকাল ২৯ আগস্ট ছয়টি মামলা করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গতকাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ৫ আগস্ট রাজধানীর শ্যামলীর রিং রোডে নিহত হয় মিরপুরের বিসিআইসি কলেজের শিক্ষার্থী নাসিব হাসান (১৭)। তার বাবা গোলাম রাজ্জাকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম গতকাল অভিযোগটি করেন। 

হাসিনার উত্থান ও পতন

এরশাদ সরকারের পতন হলে ১৯৯১ সালে প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে আসে আওয়ামী লীগ। ‘স্বৈরাচার পতন আন্দোলনের’ নেতৃত্ব দেন হাসিনা। সেই সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া।

১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা উল্লেখ করেন হাসিনা। ১৯৯৬ সালে জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করেন তিনি। ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন হাসিনা। তবে সেই বছর ভোটে হেরে যান তিনি। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই হাসিনা তার বাসভবন ‘সুধা সদন’ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেফতার হন। ২০০৮ সালের ১১ জুন প্যারোলে মুক্তি পান হাসিনা। সেই বছরই চিকিৎসাজনিত কারণে আমেরিকায় যান। 

২০০৮ সালে জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ  জয় লাভ করে। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণ করেন হাসিনা। পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ‘বিতর্কিত’ ভোটে আবার জয়লাভ করেন । ২০১৯ এবং ২০২৪ সালের পর পর দু’বারের নির্বাচনে জেতেন হাসিনা। তবে দুটি নির্বাচনই ‘প্রহসন’ বলে দাবি করে বিরোধীরা। 

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ৩৬ দিন আগে শিক্ষার্থীদের যে আন্দোলন শুরু হয়, তা ক্রমে সরকার পতনের দাবি-আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়ে পড়ে। বিষয়টিকে কিছুটা গুরত্ব দিয়ে নির্বিচারে পাখির মতো গুলি করে মানুষকে হত্যা করে হাসিনা। এবার আর রেহায় হয়নি তার। ৫ আগস্ট সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যায় ভারত। এরপরই শুরু হয় মামালা। যা বর্তমানে ১০০ ছাড়িয়ে।