গত কয়েক যুগ থেকেই জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়ে আসছে সিলেট থেকে। বিশেষ করে প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা সিলেটে মাজার জিয়ারত শেষে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে থাকেন। সেই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত শেষে দোয়া করে এবারের নির্বাচনী প্রচরণায় নামবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, এ দিন বিকালে সিলেটের সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রথম নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেবেন শেখ হাসি। তিনি জনগণের কাছে নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট চাইবেন।
দলীয় সূত্র জানায়, বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেখান থেকে হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরান (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করবেন। পরে সিলেট সার্কিট হাউজে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেবেন। এরপর বেলা তিনটার দিকে তিনি আলিয়া মাঠে বক্তব্য দেবেন।
এদিকে, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সফর ও আওয়ামী লীগের প্রথম নির্বাচনী জনসভা ঘিরে সিলেটে উজ্জীবিত আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সিলেটজুড়ে বইছে উৎসবের আমেজ। তোরণ, ব্যানার-ফেস্টুনে সেজেছে নগরী। জনসভাকে জনসমুদ্রে রূপ দিতে নেতা-কর্মীরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন মাইকে দেশাত্মবোধক গান চলছে।
গতকাল মঙ্গলবার জনসভাস্থল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় সিলেটবাসীর প্রতি আন্তরিক। তার কাছে কিছু চাইতে হয় না, চাওয়ার আগেই তিনি দিয়ে থাকেন। প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে এবারও সিলেটের সব আসন সিলেটবাসী শেখ হাসিনাকে উপহার দেবে।
অন্যদিকে, ভোরের কুয়াশা ভেদ করে সূর্যেও তাপ নগরীকে যেন চাঙ্গা করে করে দিয়েছে। ঝলমলে আলোয় সভা মঞ্চ, সমাবেশস্থল, আশপাশ এলাকায় উতসবের পরিবেশ বিরাজ করছে। সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে গাড়ি করে স্লোগান দিতে দিতে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী সিলেট নগরীতে প্রবেশ করছেন। সমাবেশস্থলের চারপাশে বাঁশ দিয়ে শক্ত বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। নেতা-কর্মীদের সমাবেশস্থলে ঢোকার জন্য পৃথক লেন রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে নগরীর প্রতিটি ব্যস্ততম সড়কে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হয়েছে। বিশেষ করে নগরীর চৌহাট্টা, রিকাবিবাজার, লামাবাজার, দরগাহ গেইট, আম্বরখানা ও বিমানবন্দর সড়ক সংস্কার করা হয়েছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে আলোকসজ্জা করা হয়। সারি সারি ফুলের গাছ শোভা পাচ্ছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমরা নির্বাচনের আচরনবিধি মেনে কাজ করছি। জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্ঠা করছি।
সিলেট নগরীর ওয়ার্ডসমূহ ছাড়াও জেলার সকল উপজেলা, এমনকি পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলা থেকেও নেতা-কর্মীরা জনসভায় অংশ নেবেন।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সিলেটবাসী। সিলেটবাসীর প্রতি শেখ হাসিনা সবসময় আন্তরিক। জনসভায় সিলেটের উন্নয়নের কথা বলবেন। তাছাড়া নির্বাচনে নৌকায় ভোট চাওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেবেন।
চার স্তরের নিরাপত্তা
কড়া নজরদারিতে রয়েছে নগরী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে নগরজুড়ে ৪ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। বৃদ্ধি করা হয়েছে পুলিশের টহল। সাদা পোশাকে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। জনসভা মঞ্চ ও আশপাশ এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা।
টাইমস ডেস্ক/ ২০ ডিসেম্বর ২০২৩