রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে ঐক্যফ্রন্টের আরেক নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
রংপুরে দায়ের করা মানহানির একটি মামলায় সোমবার (২২ অক্টোবর) রাত ৯টা ৫৬ মিনিটে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্মকমিশনার মাহবুব আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ব্যারিস্টার মইনুল ইসলাম রংপুরের একটি মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তাকে সেই পরোয়ানায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে এখন ডিবি অফিসে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ব্যারিস্টার মইনুলকে গ্রেফতারের পর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখান থেকেই আজ (মঙ্গলবার) ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে নেয়া হতে পারে। আদালত অনুমতি দিলে জিজ্ঞাসাবাদও করবে ডিবি পুলিশ।
আ স ম আবদুর রবের ব্যক্তিগত সহকারী সাইফুল নিশ্চিত করেন, সোমবার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে আটটার দিক থেকে উত্তরায় আ স ম আবদুর রবের ৩ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর সড়কের ১৪ নম্বর বাসাটি ঘিরে রাখা হয়। বাসাটির ভেতরে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন আছেন এমন খবর নিশ্চিত হয়েই পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘একটু ব্যস্ত আছি। পরে কথা হবে।’
গত ১৬ অক্টোবর একটি টকশোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে অশালীন, আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে নারী সাংবাদিক ও সম্পাদকরা বিবৃতি দিয়ে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে ক্ষমা চাইতে বলেন। তিনি এরপর দুঃখপ্রকাশ করে লিখিত ক্ষমা চাইলেও তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান তারা।
রবিবার তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন মাসুদা ভাট্টি। এরপর দেশের বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা দায়ের হয় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে। তবে মাসুদা ভাট্টি ও জামালপুরের মামলায় তিনি হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন। কুড়িগ্রামে দায়ের করা মামলায় আগাম জামিনের জন্য আবেদন করেন। এর বাইরেও রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা দায়ের হয়েছে।
উত্তরায় আ স ম আবদুর রবের বাসা। এখান থেকেই ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে, সোমবার গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রসঙ্গটি ওঠানো হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ব্যারিস্টার মইনুলের এমন আচরণের কড়া সমালোচনা করেন। এসময়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি এমন একটা জঘন্য কথা বললেন একজন নারী সাংবাদিককে এবং প্রকাশ্যে, সারা বাংলাদেশ কেন, সারা বিশ্ব দেখেছে, কীভাবে তিনি একজন নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একথা বললেন।
এখন কোর্ট যেখানে তাকে জামিন দিয়েছেন, সেখানে আমার কিছু বলার নেই। সেক্ষেত্রে আমি বলবো, আমাদের নারী সাংবাদিক যারা আছেন, তারাই বা কী করছেন? একজন (ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন) নারীর বিরুদ্ধে বলেছেন, একটা মামলা না হয় হয়েছে, আরও তো মামলা হতে পারে। এর প্রতিবাদও আপনারা করতে পারেন। আপনারা প্রতিবাদ করুন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যা করার করবে।’ (বাংলা ট্রিবিউন)