জাতীয়

নীতির প্রশ্নে আপোস নাই। এটাই হচ্ছে আমার কথা : প্রধানমন্ত্রী

শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে আটক আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের মু্ক্তির দাবিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বক্তব্য-বিবৃতির বিষয়ে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নীতির প্রশ্নে আপোস নাই। এটাই হচ্ছে আমার কথা।’

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে গণভবনে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা কথা দেশে-বিদেশে সবার মাথায় রাখা উচিত– আমি স্কুলজীবন থেকে রাজনীতি করি। বৈরী পরিবেশে, আইয়্যুব খানের আমল, আইয়্যুব খান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ছিলো। আমাদের বইয়ে একটা চ্যাপ্টার ছিলো, পাকিস্তান চ্যাপ্টার। ২০ নম্বর। আমি মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছি ওই ২০ নম্বর বাদ দিয়ে। কারণ আইয়্যুব খানের প্রশংসা আমার হাত দিয়ে আমি লিখবো না। আমি সেই মানুষ।’

তিনি বলেন, ‘আমার ওই ২০ নম্বরের জন্য ফেলও করতে পারতাম বা থার্ড ডিভিশনও পেতে পারতাম। কিন্তু আমি তা পরোয়া করিনি। নীতির প্রশ্নে আপোস নাই। এটাই হচ্ছে আমার কথা।’

কারও নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছোট শিশুরা– একটা অ্যাকসিডেন্ট হয়েছিলো, রাস্তায় নেমেছে- ওই শিশুদের যে ক্ষোভ, বিক্ষোভ, তাদের যে বিক্ষুব্ধ মন সেটাকে কাজে লাগিয়ে, ছোট ছোট শিশুদের ঘাড়ে পা দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য একদল নেমে পড়লো।’

‘এদের মধ্যে অনেকেই খুব জ্ঞানী, গুণী, অনেকে আতেঁল, অনেকে একেবারে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘খ্যাতিসম্পন্নরা কী করেছে – ডিজিটাল বাংলাদেশ আমি করে দিয়েছি। আর তারই সুযোগ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়, বিভিন্ন জায়গায় তারা অপপ্রচার চালালো। মিথ্যা কথা বলে বলে মানুষকে উসকানি দেওয়া, তাদের এই উসকানির কারণে কতো শিশুর জীবন যেতে পারতো, কতো শিশুর ক্ষতি হতে পারতো, সেটা তারা একবারও চিন্তা করেনি। বরং শিশুদের বিক্ষুদ্ধ মনকে ব্যবহার করে নিজেরা ফায়দা লুটতে চেয়েছিলো।’

‘তাদের বিরুদ্ধে যখন ব্যবস্থা নিলাম, তখনই চারদিকে যেন হাহাকার। আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও বিভিন্ন চাপ।’

স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র এখনো চলছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘খুবই দুর্ভাগ্য, এখনো দেখছি কতোগুলো প্রেতাত্মা ঘুরে বেড়ায়। যারা আমাদের স্বাধীনতা চায়নি। যারা আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিলো। যারা সবসময় স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করেছিলো। ১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলো। যারা ১৫ আগস্টের পর ইতিহাস বিকৃত করেছিলো।’

বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। স্বাধীনতার পরপরই তার বিরুদ্ধে শুরু হয়ে গিয়েছিলো অপপ্রচার, ষড়যন্ত্র। এটা হলো না, ওটা হলো না। এটা পেলো না। এই ধরনের কথা বার্তা। কারা লিখেছিলো, কারা বলেছিলো?’

‘পঁচাত্তরের পর দেখা গেলো তারা দ্বিগুণ উৎসাহে তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো। তাদের সেই ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি।’

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। (বাংলানিউজ)

Share