Home / উপজেলা সংবাদ / কচুয়া / শুনে শুনে দু’বছরে পুরো কোরআন মুখস্থ করলেন আশেক এলাহী
হাফেজ আশেক এলাহী

শুনে শুনে দু’বছরে পুরো কোরআন মুখস্থ করলেন আশেক এলাহী

দৃষ্টি প্রতিবন্ধি আশেক এলাহী। ছোটবেলা কুরআন শিখতে পারেনি। শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে ১৭ বছর বয়সে এসে ২ বছর শুনে শুনেই পুরো কুরআনুল কারিম মুখস্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। আশেক এলাহীর জন্য এটা আল্লাহ তাআলার এক মহা অনুগ্রহ। চাঁদপুরের কচুয়ার তেতৈয়া গ্রামে জন্ম নেয়া আশেক এলাহী। পরিবারে বাবা ও মা রয়েছে, পাশাপাশি ৪ সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে হলেন আশেক এলাহী ।

ছোট বেলায় তার পবিত্র কুরআন মুখস্ত করার সুযোগ হয়নি। কুরআন শিক্ষায় আগ্রহ থাকলে দারিদ্র কষাঘাতে তেমন একটা সুযোগ হয়নি তার। ২ বছর পূর্বে তার বাবা আলী আশ্রাফ ও মা হোসনেয়ারা বেগম কচুয়া জামিয়া ইসলামিয়া আহমাদিয়া মাদরাসায় ভর্তি করেন। সেখানে ওস্তাদের কুরআন পড়া শুনে এখন পুরো পবিত্র ৩০ পাড়া কুরআন মুখস্থ করে ফেলেন আশেক এলাহী।

জানা যায়, বাংলাদেশ কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডর অধীনে হিফজ ফাইনাল পরীক্ষায় আশেক এলাহী ২০২৪ সালে কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। এরপর বেশ কয়েক বার তিনি পবিত্র কুরআনুল পুরোপুরি পড়ে শুনিয়েছেন। এদিকে মাদ্রাসার শিক্ষকদের কুরআন শুনে শুনেই মুখস্ত করতে থাকেন পবিত্র কুরআন। ২ বছরে পবিত্র কুরআন মুখস্ত করতে সক্ষম হন সে। এদিকে আশেক এলাহী অন্ধ হলেও সহপাঠিদের সাথে নিয়মিত খেলাধুল করেন এবং পুরো কুরআন মুখস্ত করায় খুশি তার সহপাঠিরা।

আশেক এলাহীর বাবা আলী আশ্রাফ ও মা হোসনেয়ারা বেগম জানান, আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল ছেলেক হাফেজ বানাব। কিন্তু দারিদ্র্য ও অন্ধ হওয়ার কারনে কিছুটা বিলম্বিত হয়। চেষ্টা ও ইচ্ছার কারনে আজ আমার ছেলে শুনে শুনে পুরো কুরআন মুখস্ত করেছেন। আল্লাহর দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া জানাই।

মাদ্রাসার শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, দুই বছর পূর্বে সে এ মাদ্রাসা ভর্তি হন। সকলের সহযোগিতায় আশেক এলাহী শুনে শুনে কুরআন মুখস্ত করেছেন। আসলে সে একজন অন্ধ হয়েও নিজেকে কখনো দমিয়ে রাখতে শিখেনি। নিজেকে কুরআন শিক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন তিনি।

মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক হাফেজ মো. মোস্তফা বলেন, বর্তমান যুগে অনেকেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও কুরআন শিখতে চান না, আশেক এলাহী তার ব্যতিক্রমী উদাহরন। ইচ্ছা ও চেষ্টা থাকলে কুরআন শিক্ষা সম্ভব। তার সফলতা ও উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করেন তিনি।

প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ২৬ মার্চ ২০২৫