শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সফল অংশীদার হতে চাই আমরা। যদি তা আমাদের সফলভাবে করতে হয় তবে আমাদের শিক্ষার্থীদের কিছু বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে হবে। শুধু ডিগ্রির সনদই যথেষ্ট নয়।
২৬ জানুয়ারি রোববার রাজধানীতে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) ১৯তম সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এআইইউবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নাদিয়া আনোয়ার ও উপাচার্য ড. কারমেন জেড ল্যামাগনা।
সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের মোট চার হাজার ৫০৪ জন ছাত্র-ছাত্রীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শিতা ও সর্বোত্তম ফল অর্জনকারী মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মননা পদক দেয়া হয়।
দীপু মনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের শিক্ষার্থীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ও জাতির উন্নয়নের জন্য আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে আপনাদের অর্জিত জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে কাজে লাগাবেন এটিই আমাদের প্রত্যাশা। যুগের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সফল অংশীদার হতে হলে পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি কিছু বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, আপনারাই গড়তে পারেন সুখি ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। তবে আত্মতুষ্টিতে আমাদের বসে থাকার সুযোগ নেই। আমাদের উন্নয়নের মহাসড়কে আরও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। আপনাদের প্রতি আহ্বান দেশ গড়ার মহান ব্রত নিয়ে আপনারা আপনাদের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখবেন।
নবীন গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকারের ডিজিটাল শিক্ষার আলোকে বিংশ শতাব্দীর প্রতিযোগিতায় কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। শিক্ষার্থীদের সনদ অর্জনের পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। একই সঙ্গে কর্মমুখী শিক্ষা গ্রহণ করে নিত্যনতুন দক্ষতা অর্জন করে দেশের উন্নয়নে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয় হলো নতুন জ্ঞান সৃষ্টির সুতিকাগার।
সমাবর্তন বক্তৃতায় আবুল মাল আবদুল মুহিত তার শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে উপস্থিত গ্র্যাজুয়েটদের উদ্বুদ্ধ করেন। ১০৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তার অধ্যায়নের বিষয় উল্লেখ করে উপস্থিত সকলকে দেশপ্রেমিক, জনসেবক হয়ে ওঠার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সাফল্যের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।
উপাচার্য ড. কারমেন জেড ল্যামাগনা গ্র্যাজুয়েটদের জীবনে প্রতিটি সমস্যা ধৈর্য সহকারে এবং প্রাপ্ত শিক্ষা দ্বারা নিজ নিজ মেধা দিয়ে মোকাবিলা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সনদ প্রাপ্তিই শেষ নয় বরং এখন জীবনের পথচলা শুরু। যেই পথচলায় প্রতিকূলতাকে জয় করে সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে জীবনকে গড়ে তুলতে হবে।
চেয়ারম্যান নাদিয়া আনোয়ার বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছিল তার বাবা ডা. আনোয়ারুল আবেদীনের স্বপ্ন, যা আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বাবার আদর্শ ধরে রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এবং এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
এছাড়া সমাবর্তনে এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা ড. হাসানুল এ হাসান, ইশতিয়াক আবেদীনসহ ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য ডা. আব্দুস সামাদ আলীম, সাবরিনা আবেদীন, ডুলসে ল্যামাগ্না মজুমদারসহ সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বার্তা কক্ষ,২৭ জানুয়ারি ২০২০