শীর্ষ সংবাদ

শীতের পিঠার স্বাদ নিতে দোকানে উপচে পড়া ভীড়

গাছের পাতায় ঘরের চালায় টুপ টাপ কুয়াশা বৃষ্টি। শীত মৌসুমে নানা জাত ও স্বাদের পিঠা পুলি আর মণ্ডা মিঠাই শীতের কদর বাড়ায় নিঃসঙ্কোচে। শীতের সকালে কিংবা রাতে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে চলে উষ্ণতার আয়োজন।

উষ্ণতার এ আয়োজনের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে শীতের রকমারী পিঠা। শীতকে বরণ করতে আবহমান কাল থেকেই রেওয়াজে পরিণত হয়েছে গ্রামের ঘরে ঘরে পিঠা পুলির উৎসব।

গ্রামের এই রেওয়াজী উৎসবকে বাঁচাতে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় বসেছে মৌসুমি পিঠার দোকান। এসব দোকানগুলোতে হরেক রকমের পিঠা না পাওয়া গেলেও মিলে শীত মৌসুমের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও স্বাদের পিঠা ভাপা ও চিতল পিঠা। স্বাদ ও সাধ্যের সমন্বয় থাকায় সকলেই স্বাদ নিতে চান এ সকল পিঠার। সকলের চাহিদা থাকায় ছোট দোকানীরা এ সময় ব্যস্ত হয়ে ওঠেন চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে। তৈরি হচ্ছে পিঠা। পাশে বসেই ক্রেতারা গরম গরম স্বাদ নেন পিঠার। পড়ন্ত বিকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত জমজমাট পিঠার ব্যবসা। পিঠার দোকানের চারপাশ ঘিরে চলে পিঠা খাওয়ার উৎসব।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা ছেংগারচর পৌর বাজারে চৌরাস্তা পয়েন্টের পশ্চিম দিকে রাস্তা পাশে নতুন পিঠার দোকান খুলেছেন দু’জন মৌসুমি ব্যবসায়ী। কথা হলো পিঠা বিক্রেতা ও কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে। পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত বিক্রেতা মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচরের আদুরভিটি গ্রামের মোঃ মিলন হোসেন কাজের ফাঁকে ফাঁকে জানালেন তার এই মৌসুমি ব্যবসার আদ্যোপান্ত।

জানালেন এ ব্যবসাই তার সারা বছরের পরিবারের রুটি রুজির মূল ভরসা। যদিও এটা মৌসুমি ব্যবসা তারপরও এটাই তার সব। তার পরিবারের মোট সদস্য ৭ জন।

এ আয় দিয়েই চলেন তারা। ২ ছেলে ১ মেয়ে, স্ত্রী আর বৃদ্ধ মা বাবা নিয়েই তার ছোট সংসার। চার থেকে পাঁচ বছর হলো তার এই ব্যবসার। প্রতিদিন বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত একটানা চলে তার এ দোকান। প্রতি পিস পিঠা বিক্রি করেন পাঁচ টাকা। বিক্রি হয়ও ভালো।

জানালেন প্রতিদনই তিনি ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকার পিঠা বিক্রি করেন। নারিকেল, গুড়, আর চালের গুঁড়া এই হলো মূলধন। কম পুঁজিতে লাভ বেশি কিন্তু পরিশ্রমটা শক্ত। তিনি জানালেন এখনো পুরোপুরি শীত মৌসুম আসেনি তার পরও তিনি আগাম এ ব্যবসায় নেমেছেন।

আজ থেকে প্রায় ১০ দিন আগেই শুরু করেছেন এ ব্যবসা। চলছে ভালো হাসি মুখে জানালেন লোকজন শীতের পিঠার আগাম স্বাদ নিতে ভিড় জমাচ্ছেন তার দোকানে। বাস্তবে দেখা গেল তাই।

ক্রেতা ডা.ওবায়দুর রহমান সবুজ, মোঃ মোহসিন মিয়া মাস্টার, মোঃ সালাউদ্দিন মাস্টার,বদিউল আলম বদু, বাড়িয়া ডায়াগস্টিক মেন্টারের পরিচালক মোঃ দেলোয়ার হোসেন, মফিজুল ইসলাম খান, সোহরাব হোসেন, নুর মোহাম্মদ খান, মোঃ শাহ্রুখ খান, কলেজছাত্র মুকুল খান, সুমন সিকদার, তসাব্বির খান ও আবু হানিফ জানালেন শীত আসছে নিতে হবে ভাপা পিঠার স্বাদ।

শীতের পিঠার আগাম স্বাদ নিতে তারা ওখানে এসেছেন। পৌর শহরের স্কুল রোড পয়েন্ট, বারআনী রোড, মাছ বাজার ও কলেজ মোড় (এলাকার রাস্তার পাশে) বসেছে পিঠার দোকান ।

ওই সকল স্থানের পিঠা বিক্রেতারা জানালেন সপ্তাহ দিন আগে বসেছে এ সকল মৌসুমি পিঠার দোকান। গরম গরম শীতের পিঠা সন্ধ্যায় চায়ের সঙ্গে বেশ মানায়।

তাই স্বাদে ভিন্নতা আনতে বাসা বাড়িতেও নেন গৃহিণীরা। তারা জানালেন, এসব দোকানিরাই ধরে রাখেন গ্রামীণ সেই শেকড়ের সংস্কৃতি।

খান মোহাম্মদ কামাল : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৫:০০ এএম, ১ ডিসেম্বর ২০১৬, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Share