চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসসভার আদুরভিটি গ্রামের একজন সফল কৃষক নূরনবী। প্রতি বছরই নূরনবী শীতকালীন শিম, ফুলকপি, লালশাক, ধনেপাতা, মুলা, বেগুন, টমেটোহর শীতকালীন সবজি চাষ করে থাকেন।
এ বছরও তিানি শীতকালীন সবজি শম, টমেটো, বেগুন, ধনেপাতা ও মূলা চাষ করেছেন। এ সবজি চাষ করে তিনি লাভের মূখ দেখেন। বর্গা জমিতে সিম চাষ করে জীবন-জীবিকায় স্বচ্ছলতা এসেছে।
তার এ সাফল্য দেখে আশে-পাশের কয়েকজন কৃষক তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সিম চাষসহ অন্যান্য শীতকালীন আবাদে ঝুঁকছেন।
চলতি শীতকালীন শিমচাষে নূরনবীী দেড়কানি জমিতে সিম আবাদ করেছেন। প্রতিদিন ভোরে তিনি ছুটে যান তার সিম ক্ষেতে। তার সিম ইতিমধ্যে শিসম ধরা শুরু করেছে,বাড়ছে তার স্বপ্নপূরণের আশা।
একইসঙ্গে স্বপ্নপূরণের আশা নিয়ে ফসল ঘরে তোলার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি বাজারে বিক্রি করে লাভের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। বর্গা জমিতে শিম চাষ করে জীবন-জীবিকায় স্বচ্ছলতা এসেছে তার পরিবারের। গত বছরের তুলনায় এবার বেড়েছে তার চাষের হার।
সরেজমিনে মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজার- উপজেলা পরিষদ রোড মেইন রাস্তার পাশে তার শিসম খেতে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শিম ক্ষেত। কয়েকজন কৃষকের শিম চাষের দৃশ্য দেখা যায়। শিম চাষি নূরনবী ব্যস্ত শিম খেতের যতœ নিচ্ছেন।
কোনো কোনো গাছে ইতোমধ্যেই ফুটেছে সিমের ফুল। আবার কোনো গাছে শিম ধরাও শুরু করেছে। তাইতো সে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরেজমিনেন গিয়ে আরো দেখা যায়,শুধু শিম আবাদ নয়, পাশপাশি নানা ধরনের সবজির আগাম চাষ বদলে দিচ্ছে চাষি নূরনবীর ভাগ্য। তিনি শিমের পাশাপাশি একই জমিতেই লাল শাক, মুলা শাক ও পাট শাক আবাদ করে বিঘা প্রতি আয় করছেন ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।
কৃষক নূরনবী জানান, এরইমধ্যে আমি অন্যের ৮৫ শতাংশ (দেড়কানি) জমি ১০ হাজার টাকায় পোষানি নিয়ে শিম চাষ করেছি। এতে সব খরচ বাদ দিয়ে তার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভ হয়। এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এ বছরও ৭৫ শতাংশ জমি পোষষানি নিয়ে শিম চাষ করেছেন তিনি।
এ পর্যন্ত তার কীটনাশক ও বদলি মিলে ১০ হাজার টাকা টাকা খরচ হয়েছে। শিম ওঠান পর্যন্ত তার আরও ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। ক্ষেত রোগ মুক্ত ও আবহাওয়া অনুকূলসহ ভালো দাম থাকলে তার ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার শিম বিক্রি করা যাবে। পুরো খরচ বাদ দিলে বিঘা প্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব।
তবে এ উপজেলায় শুধু শিমই নয়, পাশপাশি নানা ধরনের সবজির আগাম চাষ বদলে দিচ্ছে চাষিদের ভাগ্য। তারা শিমের পাশাপাশি একই জমিতেই বেগুন,লাল শাক, মুলা শাক ও পাট শাক আবাদ করে বিঘা প্রতি আয় করছেন ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র দাস বলেন, মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের যেসকল জমিতে ধান বা অন্য ফসল আবাদ করা সম্ভব নয়, সেকল জমিতে শিম ও বেগনি,টমেটোসহ অন্যান্য সবজি আবাদ করা সহজতর। এ অঞ্চলের মাটি সবজি চাষের উপযোগি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমরা সবসময় মাঠ পর্যায়ে কৃষতদের তদারকি ও বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গত বছর শীতকালীন সবজিচাষে বাম্পার ফলন হয়েছিলো। এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন জানান, চাষিদের শিম ও বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সহযোগিতাও দেওয়া হয়েছে। ফলশ্রুতিতে উপজেলার এই অঞ্চলের কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি শিম ও বেগুন চাষ করছেন।
এ অঞ্চলের মাটি বেগুন ও শিম চাষের উপযোগী হওয়ায় চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা আগাম শিম চাষ করেছেন। শিম চাষ ও বিভিন্ন সবজি চাষের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
আরো পড়ুন-
মতলবে চাষীদের শীতকালীন সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, মতলব উত্তর