‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের এ কথাটির যথার্থতা মিলেছে এবার টাঙ্গাইলের নাগরপুরে।
সংসারের যাঁতাকলে পিষ্ট হতদরিদ্র মা-বাবা অভাবের তাড়না আর ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে মাত্র বিশ হাজার টাকায় বেঁচে দিয়েছেন তাদের নাড়ি ছেঁড়া ধন ১০ দিনের শিশু পুত্রকে। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ঘিওর কোল গ্রামে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নাগরপুর উপজেলার উপকণ্ঠ ঘিওরকোল গ্রামের হতদরিদ্র মো. মাজেদ আলীর পালিত ছেলে মো. লুৎফর মিয়া (৩৫)। সহায় সম্বল বলতে মাথা গুজার জন্য মাত্র ৩ শতাংশ জমি রয়েছে লুৎফর মিয়ার। ফরিদা বেগম ও লুৎফর মিয়ার সাংসারিক জীবনে তিন ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে। বড় সংসারে অভাব ছিল তাদের নিত্য সঙ্গী।
প্রিয় সন্তানদের বুকে আকড়ে ধরে নতুন করে বাঁচার চেষ্টা করেন। দুই বেলা দুই মুঠো ভাত সন্তানদের মুখে তুলে দিতে উপায়ান্তর না পেয়ে বাবা-মা কর্মের সন্ধানে গাজীপুর চলে যান। সেখানে নিজে রিকশা আর স্ত্রী ফরিদা বেগম পোশাক কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু বিধি বাম। ৬ সদস্যের সংসার চালাতে গিয়ে অনেকটা নিরুপায় লুৎফর মিয়া।
অভাব-অনটন ডানা মেলে আরো প্রকট হয়ে ওঠে। চোখের সামনে নেমে অাসে ঘোড় অন্ধকার। অনাহার অর্ধাহারে চলতে থাকে তাদের জীবন।
এভাবে আর কতদিন। ছোট ছোট ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাদের মুখে অন্ন তুলে দিতে অবশেষে ১০ দিনের শিশু পুত্রকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তারা। যেমন কথা তেমন কাজ।
সোমবার বিকেলে দেলদুয়ার উপজেলার তাতশ্রী গ্রামের নিঃসন্তান মো. রতন মিয়ার কাছে নাড়ি ছেঁড়া ধন দশ দিনের শিশু পুত্রকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন লুৎফর মিয়া।
রতন মিয়া ১৫ হাজার টাকা নগদ লুৎফরকে দিয়ে আর পাঁচ হাজার টাকা চুক্তিপত্রের সময় পরিশোধ করার অঙ্গীকার করে শিশু পুত্রকে তার বাড়িতে নিয়ে যান।
এ ব্যাপারে রতন মিয়া জানান, বিবাহিত জীবনে নিঃসন্তান তিনি। সন্তানের অভাব পূরণের জন্য ওই শিশুপুত্রকে কেনা হয়েছে। তবে তার লালন পালনে কোনো প্রকার অযত্ন অবহেলা হবে না বলেও তিনি জানান।(জাগো নিউজ)
নিউজ ডেস্ক ।।আপডটে, বাংলাদশে সময় ০৮৬:১২ পিএম,৩০ আগস্ট ২০১৬ মোঙ্গলবার
এইউ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur