প্রবাস

শিশুসহ সৌদির জেলে স্ত্রী : দেশে ফিরে বিয়ে করে আত্মগোপনে সাইফুল

সৌদি আরবের জেলে শিশু সন্তান ও স্ত্রীকে ফেলে দেশে এসে আবারও বিয়ে করে আত্মগোপনে রয়েছেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের মনগোজ গ্রামের কবির মিয়ার ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম। স্বামীর স্বীকৃতি ও সৌদির জেল থেকে মুক্তি পেতে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছবি এবং ভিডিও পোষ্ট করে মুক্তির আকুতি জানিয়েছেন প্রবাসী স্ত্রী জেসমিন আক্তার। এদিকে স্ত্রীর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে স্বামী সাইফুল ইসলাম গাঁ ডাকা দিয়েছেন।

জানা গেছে, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মনগোজ গ্রামের সাইফুল ইসলাম গত তিন বছর পূর্বে সৌদি আরবের রিয়াদে যান। সেখানে গিয়ে নোয়াখালী জেলার জেসমিন আক্তার সাথে তার পরিচয় হয় এবং এক পর্যায়ে তারা প্রেমের সম্পের্কে জড়িয়ে ২০১৮ ইং সালের জুন মাসের ৩ তারিখে ১২ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যে জেসমিন আক্তার অন্তঃসত্ত্বা হলে তার স্বামী সাইফুল ইসলাম তাকে ফেলে বাংলাদেশে চলে আসে।

সাইফুল দেশে ফিরে আসার সময় স্ত্রী জেসমিন আক্তারের পাসপোর্ট ও বিয়ের সকল প্রকার প্রমানাদি সাথে করে নিয়ে আসে। এরপর জেসমিন আক্তারের কাছে কোন বৈধ কাগপত্র ও পাসপোর্ট না থাকায় সৌদির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। ৯মাস অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কারাবন্দি থেকে করাগারে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয় জেসমিন। বর্তমানে তার পুত্র সন্তান মোহাম্মদ আব্দুর রহমান রবিউল ইসলাম এর বয়স ৯ মাস।

এদিকে দেশে এসে সাইফুল জেসমিনের সাথে সৌদি আরবে বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে বাবা মায়ের পছন্দের এক মেয়েকে বিয়ে করে দেশেই থেকে যায় সাইফুল। এই বিষয়টি জেসমিন আক্তার জানতে পেরে ওই দেশের কারাগার থেকে বিভিন্নভাবে স্বামী সাইফুল ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে এবং তাদের সাথে যোগাযোগ হলে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে সাইফুল ও তার পরিবার। পরে উপায়ান্তর না পেয়ে স্বামীর স্বীকৃতি পেতে ও সৌদির কারাগার থেকে মুক্তি পেতে জেসমিন আক্তার ওই দেশের কারাগার থেকে একটি ভিডিওতে তার সকল বক্তব্য রেকর্ড করেন এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আকুতি জানিয়ে ফেইসবুক ও বিভিন্ন মাধ্যমে ভিডিওটি প্রচার করে।

জেসমিন আক্তারের ভিডিও থেকে জানা গেছে, সে তার ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরতে চায়, তবে সৌদিতে আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার বাংলাদেশের ফেরত আসা খুবই কষ্টকর। এ দিকে স্বামী সাইফুল ইসলাম এবং তার বাবার সাথে যোগাযোগ করলে তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন। স্ত্রী জেসমিনের ভিডিওটি বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর সাইফুল এলাকা থেকে গাঁ ডাকা দিয়েছেন।

জেসমিন আক্তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও দিয়ে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাছে আমার আবেদন যেভাবে হোক আমি এবং আমার পুত্র সন্তানকে নিয়ে সৌদির জেল থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরতে পারি সে ব্যবস্থা করে দিন। সাইফুলকে দেশে আইনের আওতায় আনা ও শিশ সহ জেসমিনকে মুক্ত করে দেশে আনার ব্যবস্থা করার জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।

বার্তা কক্ষ,৯ ডিসেম্বর ২০১৯

Share