লাইফস্টাইল

শিশু খাবার খেতে না চাইলে খাওয়াতে মায়ের করণীয়

একজন মা হিসেবে আপনি অনেক হতাশ হতে পারেন যখন কোনও একটি সুস্বাস্থ্যকর খাবার আপনি অনেক যত্ন ও ভালোবাসা নিয়ে তৈরি করলেন এবং আপনার বাচ্চাটি এসে সেই খাবার টি দূরে সরিয়ে দিয়ে বলে “ এই খাবার আমার পছন্দ না। আমি খাব না”

মাঝে মাঝে এই খাবার সম্পর্কে আপনি আপনার শিশু কে অনেক বুঝিয়ে থাকেন, এর গুণাগুন গুলো বলেন, কিন্তু একটি শিশুর সন্তুষ্টির জন্য এটি পর্যাপ্ত নয়।

তবে ইচ্ছে করলেই সেটা খাওয়ানোর বাহানা খুঁজতে পারেন আপনারা। তার কিছু আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

ছুটির দিন গুলোকে হাতে রাখুন। আপনার বাচ্চাটাকে সাথে নিয়ে চলে যান কোনও মল কিংবা সবজি বাজারে এবং তাকে প্রাধান্য দিন যে সে কোনটি কিনতে চায়? কোন সবজি বা ফল সে কিনতে চায় বা খেতে চায় তাকে জিজ্ঞেস করুন, সেই সাথে প্রত্যেকটি খাবারের সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দিন এবং গুনাগুণ গুলো জানান। সেই খাদ্য গুলোকে বাসায় এনে রান্না করে দিন আপনার শিশুকে।

আপনার শিশু যদি একটু বড় হয় তবে তাকে শিক্ষার অংশ হিসেবে খাদ্যের রং, জমিন, আকৃতি এবং খাদ্য গুলো কোথায় জন্মে তা সম্পর্কে ধারণা দিন। আরো একটু বড় বেবি হলে তাদের কে সুযোগ দিন যেন তারা নতুন কোন রেসিপি শিখে এবং বাচ্চা কে সাথে নিয়ে রান্নাটি করুন। মনে রাখবেন খাবার সময় তাকে খাবারেরে জন্য তার প্রশংসা করতে ভুলবেন না একদম।

ছোট বাচ্চা, যাদের ৬মাস-১বছর বয়স তাদের জন্য খাবার খাওানোর ধরন একটু ভিন্ন হলেও ব্যাপারটা কিন্তু একই। আপনার শিশু কে রঙ বেরঙ এর খাবার সামনে দিন। বাচ্চারা এই সময়ে রঙ এর প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। তাই বাচ্চার সামনে কয়েক রঙ এর খাবার ফেলে রাখুন। তবে তাকে জোর করবেন না। দেখবেন কোনও না কোনও টাতে বাচ্চা মুখ দিবেই।

বাচ্চারা অনুকরণ প্রিয়। তাই তাদের কে খাওয়াতে হলে আগে নিজেকে খেয়ে দেখাতে হবে। বাচ্চা আপনাকে অনুকরণ করবে।

খাবার যেন সুস্বাদু হয়, একটু মিষ্টি খাবার শিশুরা পছন্দ করে। খাবার বাচ্চা কে দেয়ার আগে নিজে চেখে দেখুন। খাবারের সময় মজার গল্প শুনাতে ভুলবেন না কিন্তু।

শিশু কে সব সময় একই খাবার দিবেন না, এতে করে বাচ্চার খাবারে একঘেয়েমি চলে আসে। তবে বেশি ছোট বাচ্চার জন্য একটি খাবার ২-৩ দিন খাওয়ান।

সবকিছুর পরও অনেক বাচ্চা কিছুই খায় না, তাদের কে বলছি-অনেক সময় বাচ্চার পেটে কৃমি হলে তারা খেতে চায় না, বমি করে। তাই সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তাছাড়া এমন সব খাবার বাচ্চা কে দিন যা তার জন্য যেমন পুষ্টি গুণ সম্পন্ন তেমনি মজাদার, তেমনি বাড়ন্ত শিশুদের প্রয়োজনীয়।

মাছঃ
অনেক বাচ্চারা মাছ খেতে চায় না, কিন্তু একই বাচ্চাকে ফিশ কাটলেট করে দিন ঠিকই পছন্দ করে খাবে। সমস্যা কোথায়? দিয়ে দিন আপনার পছন্দের খাবার টি তার পছন্দ মত চেহারা দিয়ে। ফিশ কাটলেট, চিংড়ি দিয়ে নুডুলস ইতাদি।

ডিমঃ
বচ্চা ডিম খায় না। ঠিক আছে, তার সুজির সাথে ডিম টা মিলিয়ে দিন। বাচ্চা বুঝবেও না। খিচুরির সাথে মিশিয়ে দিন। একটু বড় বাচ্চাদের কে স্যান্ডউইচ বানিয়ে দিতে পারেন, কিংবা ডিম চপ। খাবার ভিন্ন ভাবে পরিবেশন করুন।

সবজিঃ
সবচেয়ে বড় সমস্যা সবজি নিয়ে। আসলে এই ১ টা জিনিসের আসলে কোন স্বাদ নেই। বাচ্চা কেনই বা খাবে? নুডুলস এর সাথে দিন, পাকোড়া বানিয়ে দিন, সবজি রোল বানিয়ে দিতে পারেন। কোনও ১ টা খাবার তো নিশ্চয়ই পছন্দ করবে। সাথে চিজ মিলিয়ে দিলে তো সোনায় সোহাগা।

শিশু ভাত খায় না?
রুটি খাওয়ান, ফ্রাইড রাইস করে দিন স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে। বার্গার তৈরি করে দিন নিজ বাসায়। ডিম, রুটি, সবজি, পনির, মাংস সব কিছু দিয়ে তৈরি করে দিন, বাচ্চা পছন্দও করবে আবার আপনার চিন্তাও কমে যাবে।

আরও অনেক রকম খাবার তৈরি করে করেই খাওয়াতে হবে শিশুকে। মা হয়েছেন, এখন ভালো একজন রাঁধুনি হয়ে যান নিজের ছোট্ট বাচ্চার জন্য।

ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৬:৫০ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০১৬, রোববার
ডিএইচ

Share