মতলব দক্ষিণ উপজেলার ১৩৫নং বকচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তারের বিরুদ্ধে স্কুলে অনুপস্থিতি থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি তার খাম খেয়ালিমত বিদ্যালয়ে আসেন এবং যান। বিদ্যালয়ে রীতিমত না এসে মাসের পর মাস বেতন উত্তলণ করছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। এছাড়া তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে হাজিরা খাতায় পুরো সপ্তাহের স্বাক্ষর দেন বলেও এলাকার বেশ ক’জন অভিভাবক সাংবাদিকদের জানান।
বিদ্যালয়টিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ ৪ শিক্ষক বর্তমানে থাকলেও রাবেয়া আক্তারকে প্রায় অনুপস্থিতি থাকতে দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যালয়ে ৪ শিক্ষকের মধ্যে ২জন শিক্ষক অনুপস্থিত। তার মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলম, সহকারী শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তারকে বিদ্যালয়ে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করতে দেখা যায়।
অপর দু’শিক্ষক শিশির কুমার নন্দী ও রাবেয়া আক্তার বিদ্যালয় অনুপস্থিত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সহকারী শিক্ষক শিশির কুমার নন্দী ডিপিএড ট্রেনিং এ রয়েছেন। রাবেয়া আক্তার স্কুলে না এসে তার নিজ বাড়িতে তার ব্যক্তিগত কাজ করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, রাবেয়া ম্যাডাম এই স্কুলে যোগদানের পর থেকেই তিনি তার খাম খেয়ালিমত স্কুলে আসা যাওয়া করেন। সপ্তাহে ২/১ দিন এসে পুরো সপ্তাহের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেন।
এব্যাপারে স্থানীয় অভিভাবকসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা একাধিক বার তাকে স্কুলে অনুপস্থিতির বিষয়ে সর্তক করে দিলেও কোন কর্ণপাত করেন এই শিক্ষিকা। বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাজিরা খাতায় দেখা যায়, ২০মে শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তার বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিল। তারপর ২১মে থেকে ২৫মে পর্যন্ত তিনি স্কুলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
এব্যাপারে শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তারের সাথে তার ব্যবহৃত মোবাইলে অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ তাই আজকে স্কুলে আসতে পারিনি।’
এব্যাপারে আপনি ছুটি নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি প্রধান শিক্ষকের নিকট ছুটি চেয়ে ছিলাম, কিন্তু তিনি আমার ছুটি মঞ্জুর করেননি। আমি সহকারি শিক্ষা অফিসার সমীরন স্যারকে অবগত করলে তিনি আমাকে একটি ডাক্তারি প্রেসকিপশন দেখালে চলবে বলে জানান।’
এছাড়া বিগত ২২,২৩,২৪ মে অনুপস্থিত কেন এবং কোন ছুটি নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি স্কুলে গিয়েছি কিন্তু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেইনি।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহ আলম জানান, ‘শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তার আমার কাছ থেকে কোন ছুটি নেননি এবং তিনি যে অসুস্থ তাও তিনি আমাকে জানায়নি।’
গত ২০মের পর অনুপস্থিতির বিষয়টি স্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, ‘তিনি প্রায় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন।’
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম মিয়াজী জানান, ‘আমি নিজেও বিদ্যালয়ে এসে দেখেছি শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তার অনুপস্থিত রয়েছে। আমি সাথে সাথেই শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেছি।’
সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সমীরন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ‘সহকারি শিক্ষিকা রাবেয়া আক্তার বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি রয়েছেন, বিষয়টি আমাকে অবগত করেছে। আমি এব্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেব।’
প্রতিবেদক-মাহফুজ মল্লিক, মতলব দক্ষিণ
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০ : ১৫ পিএম, ২৫ মে ২০১৭, বৃহস্পতিবার
এইউ