৪৮ বছর ধরে নারী শিক্ষা বিস্তারে সেনগাঁও উ.বি অসামান্য অবদান রাখছে

চাঁদপুর সদরের পূর্বাঞ্চলে আশিকাটি ইউনিয়নের সেনগাঁও গ্রামে ৪৮ বছর ধরে নারী শিক্ষা বিস্তারে সেনগাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া কথা নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে অবদান স্থানীয় অধিবাসীরা সন্তান উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সিদ্দিকুর রহমান ১৯৭২ সালে এর প্রতিষ্ঠা করেন।

বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা অবস্থা প্রতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের আমলে নারী শিক্ষার প্রসারে দেশের প্রতিটি গ্রাম-অঞ্চলে একটি করে জুনিয়র গালর্স স্কুল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে উদার নীতি গ্রহণ করে । সেই সুবাধেই তৎকালীন সমাজের সকলের সার্বিক সহযোগিতায় কুমিল্লা রোড থেকে প্রায় দেড় কি.মি.উত্তরে অজ পাড়াগাঁয়ে ১৯৭২ সালে এ স্কুলটি প্রতিষ্ঠা লাভ করার সুযোগ পেয়ে যায়। ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরীর আন্তরিকতায়, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সাহাতলী এলাকার শিক্ষাবিদ এটিএম আহমেদ হোসাইন রুশদীর প্রচেষ্টায় নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

২০১২ সাল পর্যন্ত এর প্রতিষ্ঠাতা প্রধানশিক্ষক ছিলেন শান্তিরঞ্জন তহশীলদার প্রায় এক বছর পর এর দায়িত্ব নিয়ে পরিচালনা করেন অর্ধেন্দু বিকাশ চন্দ্র। ২০১৫ সাল পর্যন্ত বছর জুনিয়র বালিকা বিদ্যালয় শিক্ষার আলো ছড়িয়েছেন।

২০১৩ সালের জুনিয়র বিদ্যালয়টির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ প্রধানিয়া তার উদ্যোগে স্থানীয় গণ্যমান্যব্যক্তি,অভিভাবক ম্যানেজিং কমিটির সার্বিক সহায়তায় এ যুগের চাহিদার প্রয়োজনে এবং নারী শিক্ষার প্রসার লাভ করতে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে কুমিল্লা বোর্ড নবম শ্রেণির পাঠ দানের অনুমতি প্রদান করে। তখন এটির নাম পরিবর্তন হয়ে সেনগাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হয়ে যায়। বর্তমানে এর শিক্ষক সংখ্যা ৭ জন ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩শ’। বর্তমানে ঢাকাস্থ ওভারসিস রিক্রুটিং এজেন্সির চেয়ারম্যান মো.বেলাল হোসেন পাটোয়ারী স্কুল ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্ব পালন করছেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চাঁদপুরের উন্নয়নের রূপকার শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনির একান্ত ইচ্ছায় একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করার সুযোগ করে দেন। এত রয়েছে আরও প্রধান শিক্ষক কক্ষ , শিক্ষক মিলনায়তন,সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও আইসিটি ল্যাবসহ একটি দৃষ্টিনন্দন স্কুল ভবন । ২০১৮ সালে তিনি এর ৪তলা একাডিমিকভবনের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।

প্রধান শিক্ষক মো.আব্দুল আজিজ প্রধানিয়া বলেন, শিক্ষার মান বাড়াতে এবং দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্য ও অভিভাবকদের সার্বিক সহযোগিতায় স্কুলটি দিন দিন উন্নয়নের দিকে এগুচ্ছে । তিনি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

৪৮ বছর ধরে নারী শিক্ষা বিস্তারে সেনগাঁও উ.বি অসামান্য অবদান রাখছে

শিক্ষা ব্যব¯থা ও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মান বাড়াতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কর্ণেল অব.আবু ওসমান চৌধুরী,বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওসমান গনি পাটওয়ারী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইউসুফ গাজীর অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, স্কুলটির উন্নয়নে এ স্বনামধন্যব্যাক্তিগণ নারী শিক্ষার হার বাড়ানোর জন্য সার্বিক সহযোগিতা করেছেন।’ স্কুল কমিটির চেয়ারম্যানও সকল প্রকার সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন বলে জানান। তিনি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে নবম-দশম শ্রেণির এমপিওভ’ক্তকরণের আবেদন জানান।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বলেন , শিক্ষার মানোন্নয়ন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি স্কুলটির উন্নয়নে সব রকম সহায়তা করেন। ফলে ছেলে-মেয়েরা আজ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার গৌরব অর্জন করতে পারছে।

এর চার পাশে রয়েছে সাত-আটটি গ্রামের ছেলে মেয়ে। মেয়েদের সাথে যদি ছেলেরাও এখানে পড়াশোনার সুযোগ পায় তাহলে শিক্ষার হার আরও বাড়বে। অভিভাবকদের আর্থিক খরচ হ্রাস হবে এবং আমাদের সন্তানরা একই স্কুলে পড়ে স্বাচ্ছন্দে বাড়ি ফিরতে পারবে। তাই তিনি এটিকে এলাকার ছাত্র ভর্তির অনুমতি দান করে সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু করার দাবি জানান ।

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বলেন,‘ আমরা আমাদের প্রিয় নেত্রী চাঁদপুরের এমপি ডা.দীপু মনির নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছ্।ি পাশাপাশি এলাকাবাসীর ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়াশোনা কওে উচ্চ শিক্ষায় মিক্ষিত হতে এবং শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধে সহ-শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে দাবি জানান্্। স্থানীয় গণ্যমান্য ও অভিভাবকগণ শিক্ষার মান উন্নত করতে এটিতে সহশিক্ষা চালু জরুরি।

কেননা এর ৭ মি. উত্তর পাশে রয়েছে শাহাজালাল উ”্চ বিদ্যালয়,৮ কি.মি.দক্ষিণে সাহাতলী জোবায়েদা বালিকা, ৫ কি.মি. পূর্বে জোহরা বালিকা এবং ২ কিমি. দক্ষিণ-পশ্চিমে নুরুল হক উচ্চ রয়েছে। এর মাঝখানে এ বিশাল গ্রাম্য এলাকার হতদরিদ্র ছেলে-মেয়েদের মাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়ার সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ছাত্রদের ভর্তির অনুমতির প্রয়োজন। আমি এলাকার সকল অভিভাবকদের দাবির বিষয়টি জানালাম। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি সহানুভূতির সহিত বিবেচনা করবেন বলে আশা করি।

প্রধানশিক্ষক পরিচিতি
প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ প্রধানিয়া ১৯৭৭ সালের ১৫ জানুয়ারি শরীয়তপুর জেলার সখিপুরের দুলারচর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন্। ছোটবেলা থেকেই তাঁর খেলাধুলা ও কো-কারিকুলাম এক্টিভিটিজ এর প্রতি আর্কষণ ছিল।

তিনি ১৯৯২ সালে এসএসসি, ১৯৯৪ সালে এইচএসসি, ১৯৯৭ সালে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন ্। এরপর তিনি ১৯৯৯ সালে তিনি শরীরচর্চা প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও ২০০৯ সালে এমএ লাভ করেন। ১৯৯৮ সালের ১০ ডিসেম্বর রাজরাজেস্বরের ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মহান পেশায় প্রবেশ করেন । পরবর্তীতে ২০০১ সালের ৪ মাচ সদরের সফরমালী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শরীরচর্চা হিসেবে যোগদান করেন।

২০১৩ সালের এপ্রিলে থেকে তিনি চাঁদপুর সদরের সেনগাঁও জুনিয়র বালিকা স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও স্কুলের বার্ষিক খেলাধুলা,জাতীয় দিবস সমূহ আয়োজন ও বাস্তবায়নে পরিচালনা করেন ।

তিনি স্বুলের সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ কওে যাচ্ছেন। কুমিল্লা টিটি কলেজসহ চাঁদপুরে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন বিষয়ে তিনি পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন্। জনাব আব্দুল আজিজ ব্যক্তিগত জীবনে দু’সন্তানের পিত্ াতাঁর সহধর্মিনী শামীমা বেগম স্নাতক ডিগ্রিধারী।

আবদুল গনি , ৫ অক্টোবর ২০২১

Share