শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধ্যান ও যোগব্যয়াম চর্চার আহবান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ধ্যান চর্চাটা যদি হয়, তাহলে সমাজের সব স্তরে সেটাকে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ হবে।
সোমবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর আইডিবি ভবনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পোস্ট-কোভিড টোটাল ফিটনেস চালুকরণ প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ধ্যান ও যোগব্যায়ামের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘ধর্ম চর্চায় ধ্যান মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের অঞ্চল ধ্যান, যোগব্যায়ামের জন্যের উর্বর স্থান। স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে এখন পাশ্চাত্য যা বলছে, ঘুরেফিরে তা প্রাচ্যের কথা। এগুলো হাজার হাজার বছর থেকে আমরা চর্চা করে আসছি।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ধ্যান ও যোগব্যায়ামসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়গুলো আমরা শতবছর থেকে পালন করে আসলেও মাঝখানে ভুলে যেতে বসেছিলাম। পাশ্চাত্যের দেশগুলো যখন ফলাও করে তা বাস্তবায়ন করছে, বিভিন্ন পাঠ্যবইয়ে এর উপকারিতা নিয়ে লেখা হচ্ছে, আমরাও আবার সেখানে ফিরে আসছি। এটা সুখবর। চিকিৎসা বিজ্ঞানে আছে— ধ্যান হৃদরোগ থেকে শুরু করে বহু রকমের রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, আমাদের শিক্ষার্থীরা মানবিক মূল্যবোধ শিখে আলোকিত মানুষ হোক। আজকে যে আলোচনা হয়েছে, তাতে আমরা দেখেছি— ধর্ম চর্চা, আত্মিক উন্নয়ন, শারীরিক-মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য ধ্যান। সব হতাশা-নেতিবাচকতা দূর করবার জন্য, সব আসক্তি থেকে মুক্ত থাকবার জন্য, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়বার জন্য, লক্ষ্য স্থির করে জীবনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ধ্যান, শুদ্ধাচার চর্চার জন্য, অর্থাৎ যা কিছু আমাকে এগিয়ে দেবে, জীবনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে এবং একটা উন্নত, সুখী সমৃদ্ধ জীবন দিতে পারবে, তার সব কিছুর জন্য ধ্যান একটা বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।’
দীপু মনি বলেন, ‘আমরা বলছি, শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান মনস্ক, প্রযুক্তির ব্যবহারে দক্ষ, মানবিক ও সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সব চেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করবে ধ্যান। আমাদের সন্তানকে সেভাবে তৈরি করবে, যাতে আমরা যা শিখছি তা নিতে পারি, অনুধাবন করতে পারি, আত্মস্থ করতে পারি, যেন প্রয়োগ করতে পারি, সে জন্য ধ্যানটা জরুরি।’
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধ্যান চর্চা ছড়িয়ে দেওয়ার উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টোটাল ফিটনেস কর্মসূচি নিয়ে আমি আশা করবো— সবার মধ্যে যদি ধ্যানের চর্চাটা যদি ছড়িয়ে পড়তো, তাহলে খুব ভালো হতো। এখানে কোয়ান্টাম দীর্ঘদিন ধরে কাজটি করছে। আরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা কোয়ান্টাম ব্যাপকভাবে করছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার সুযোগ হয়েছে কোয়ান্টামে কোর্স করার, কয়েক বছর আগে। আমি নিজে তার উপকারভোগী। অনেক ধরনের অসুস্থতা থেকে নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য ধ্যান চর্চা। আমি মনে করি, সব মানুষের মধ্যে ধ্যান চর্চা ছড়িয়ে দেওয়ার দরকার রয়েছে। সমাজে অন্যায়, অস্থিরতা যারা তৈরি করছে, তাদের সততা ও অস্থিরতা দূর করবার জন্য ধ্যান চর্চা দরকার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টোটাল ফিটনেসের যে কথা বলছি— সেখানে যদি ধ্যান চর্চাটা হয়, তার মাধ্যমে সমাজের সব স্তরে সেটাকে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ হবে।’
বার্তা কক্ষ, ৩ অক্টোবর ২০২২
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur