বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। শিক্ষার্থীরা বই-পুস্তক হীন হয়ে নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অভিভাবকরা দিশেহারা সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এ পরিস্থিতিতে দেশের সকল ধরনের প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, যানবাহন চালু হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে চলছে নানা ধরনের টালবাহানা।
সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ বেতন-ভাতা পাচ্ছেন নিয়মিত কিন্তু বেসরকারি, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ মানবেতর জীবন যাপন করছেন বেকার হয়ে অর্থাভাবে। সাংসারিক টানাপোড়েন ও চরম অর্থাভাবে অনপক শিক্ষক আত্মহত্যার পথে বেছে নিয়েছে দায়মুক্তির জন্য। এতোকিছুর পরেও সরকারের শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দায়িত্ববানরা নির্বিকার, নিশ্চুপ। তাদের এহেন নিরবতা দেখে জাতি কিংকর্তব্যবিমূঢ়। অসহায় পিতার দরিদ্র সন্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ভবিষ্যৎ নিয়ে দিশেহারা। বইপুস্তক হীন অনলাইন নির্ভর শিক্ষা-কার্যক্রম কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তিসহ চরম নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
শিক্ষা, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিয়ে সরকারের এমন টালবাহানা দেখে জাতি চরমভাবে ক্ষুদ্ধ। অনিশ্চিত অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা, নানান অপরাধে জড়িয়ে ধ্বংস করছে শিক্ষাজীবনের মূল্যবান সময়কে। সরকারের উচিৎ অনতিবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থী, শিক্ষকমন্ডলী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রান সঞ্চার ফিরিয়ে আনা। জাতিকে শিক্ষিত, আদর্শিকভাবে গড়ে তুলতে শিক্ষাঙ্গন খুলে শিক্ষা-কার্যক্রম চালুর বিকল্প নেই।
৩ জুন বৃহস্পতিবার ১১ টার দিকে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কাযালয়ের সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চাঁদপুর জেলা শাখার আয়োজনে “দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবীতে” দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপরিউক্ত কথা বলেন জেলা নেতৃবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা সভাপতি জননেতা শেখ মোঃ জয়নাল আবেদিন বলেন, দেশে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খেলা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চুপ রয়েছে নিয়মিত বেতন-ভাতা গ্রহণ করে। অপরদিকে বেসরকারি ও প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ ধুঁকে ধুঁকে মরছে আয় রোজগার বন্ধ থাকায়। অনেক শিক্ষক আত্মহত্যার পথে বেছে নিয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খেলা নিয়ে সরকারের টালবাহানা ও শিক্ষকদের বেতন ভাতা বন্ধ থাকায়।
তিনি আরো বলেন, দেশে বিগত লকডাউন শেষে নিয়ম মেনে কওমী মাদরাসা খোলা থাকলেও কোন প্রকার আক্রান্ত কিংবা আতঙ্কের খবর আসেনি। সরকার যদি শিক্ষাবান্ধব হোন তাহলে অনতিবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে আগামীর কান্ডারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত ও আদর্শিক করে গড়ে তোলার পথকে উন্মুক্ত করে দিবেন।
তিনি সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, করেনা কালে সবধরনের প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ থাকবে?
শিক্ষা খাতকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে, শিক্ষার্থীদের নৈতিক ও চারিত্রিক অধ্বঃপতন ঠেকাতে বেসরকারী ও প্রাইভেট শিক্ষকদের কর্মে ফেরাতে অবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবী জানান।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা ইসলামী আন্দোলন এর সহ-সভাপতি গাজী মুহাঃ হানিফ, জয়েন্ট সেক্রেটারী বেলাল হোসাইন, অর্থ সম্পাদক মামুনুর রশিদ বেলাল, আইন সম্পাদক এডভোকেট শফিক উদ্দিন মিঞা, জেলা সদস্য মাওলানা যোবায়ের আহমাদ, শ্রমিক আন্দোলন সভাপতি মাওলানা আফসার উদ্দিন, সদর সভাপতি ডাঃ বেলাল হোসাইন, জেলা কিন্ডার গার্টেন সভাপতি মুহাঃ ওমর ফারুক, যুব আন্দোলন সাধারণ সম্পাদক নিজামউদ্দিন ইশা ছাত্র আন্দোলন সভাপতি সেলিম হোসাইন ।
উপস্থিত ছিলেন জেলা আন্দোলন সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজামাল গাজী সোহাগ, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাহবুব ইমরান মাসুম, শ্রমিক আন্দোলন সেক্রেটারী আবুল বাশার, যুব আন্দোলন সভাপতি হেলাল আহমাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক নেছার উদ্দিন প্রমুখ।
সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট