সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাউশিতে ১২ হাজার ৫১৫টি পদ শূন্য। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণির ২ হাজার ৪৯১টি, দ্বিতীয় শ্রেণির ৪ হাজার ৪৫৯টি, তৃতীয় শ্রেণির ২ হাজার ২৮২টি এবং চতুর্থ শ্রেণির ৩ হাজার ২৮৩টি পদ। শূন্যপদে জনবল নিয়োগ শেষ না করা গেলেও পদ সোপান তৈরির প্রস্তাবসহ প্রভাষক থেকে অধ্যাপক পর্যন্ত আরো ১২ হাজার ৫১৯টি পদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।
এ নিয়ে ক্ষুব্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা ৯৫৮ অফিস সহকারীদের মধ্যে। পাশাপাশি সরকারি কলেজের সাড়ে ১২ হাজার বেসরকারি কর্মচারী নিয়োগ নিয়েও চাপের মধ্যে অধিদফতর।
অপেক্ষায় থাকাদের দাবি, চতুর্থ শ্রেণির এসব পদ পূরণে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই সংস্থাটির। সঠিক সময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ না করা এবং মৌখিক পরীক্ষার ফল এক বছরেও প্রকাশ না করায় ৪৮টি রিট মামলা হয়েছে। অফিস সহকারী পদে মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা ৯৫৮ পদের ফল প্রকাশ করা হয়নি। এই পদে নিয়োগের বিরোধিতা করে সরকারি কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারিরাও রিট করেছেন।
মাউশি’র পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামছুল হুদা বলেন, আমরা স্থায়ী পদের বিপরীতেই অফিস সহায়ক নিয়োগ দিতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। ৪৮টি রিট মামলার কারণে সব আকটে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এক সময় সরকারি কলেজ নিজেরাই কর্মচারী নিয়োগ দিতে পারতো, এখন সে সুযোগ নেই। তাদের হাতে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা না থাকায় সারাদেশে বেসরকারি কর্মচারীদের কলেজ ফান্ড থেকে বেতন দেওয়া হয়। আমাদের হাতে এখন ক্ষমতা নেই।
চাকরিপ্রত্যাশী রফিকুল ইসলাম বলেন, মাউশির অবহেলার কারণে নিয়োগ দিতে দেরি হওয়ায় ৪৮টি রিট মামলা হয়েছে। এখন এর কোনো সুরাহা করতে পারছে না মাউশি। ফলে আমাদের চাকরি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, মাউশি ২০১৩ সালের ৭ মার্চ ২২ টি পদে ১ হাজার ৯৬৫ জনবল নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা নিয়ে তা বাতিল করে। ২০১৭ সালের ৭ জুলাই চতুর্থ শ্রেণির অফিস সহায়কসহ কয়েকটি পদে লিখিত পরীক্ষা নেয়। পরীক্ষায় ৩ হাজার ৮৭৮ জন উত্তীর্ণ হন।
২০১৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশে বিলম্ব করেন অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ছয় বছর এবং মৌখিক পরীক্ষা শেষের এক বছরের বেশি সময়েও ফল প্রকাশ হয়নি।
মাউশি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চতুর্থ শ্রেণির শূন্যপদ রয়েছে ৩ হাজার ২৮৩টি। এসব পদের বিপরীতে ৯৫৮ অফিস সহকারী নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
রিট প্রসঙ্গে সরকারি কলেজের বেসরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও ঢাকা কলেজের অফিস সহায়ক দুলাল সরদার বলেন, ` আমাদের নিয়োগ না দিয়ে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দেওয়ার সব প্রক্রিয়া শুরু করে অধিদফতর।
এছাড়া নতুন করে যে ১৯৬টি বেসরকারি কলেজ সরকারি হয়েছে কলেজে, সেসব কলেজের অফিস সহায়করা এখন সরকারি চাকরি করবে। অথচ আমরা বছরের পর বছর সরকারি কলেজে চাকরি করে সেরকারি কর্মচারীই থেকে যাবো, এটা অন্যয়। সে কারণে আমরা ৪৮টি রিট করেছি উচ্চ আদালতে।’
তিনি আরো বলেন,‘মশিউর রহমান কর্মচারীদের দাবি আদায়ে ২০১৩ সালে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন তারা। এ রিটের আগে একটি এবং পরে আরও দায়ের করা রিট নিয়ে ৪৮টি রিট মামলা রয়েছে। যেকোনও একটি শেষ হলেই এ সমস্যা মিটবে।’
বার্তা কক্ষ
৪ মার্চ ২০১৯