রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, আদর্শ শিক্ষক, গবেষক জাতির মূলবান সম্পদ। শিক্ষক-গবেষকদের জ্ঞান, দক্ষতা ও প্রজ্ঞা ভবিষ্যত জাতি গঠনের অন্যতম নিয়ামক শক্তি। তাই শিক্ষার মান উন্নোয়নে প্রয়োজন দক্ষ অভিজ্ঞ ও জ্ঞানের প্রতি গভীর অনুরাগী শিক্ষক মণ্ডলী। যারা নিরন্তন জ্ঞান চর্চায় রত থাকবেন এবং তা শিক্ষার্থীদের মধ্য বিতরণ করবেন।
বুধবার বিকেলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষক যখন তার মহান আদর্শ থেকে দূরে সরে যান, তখন শিক্ষার্থীদের মধ্য তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে জ্ঞান অর্জন ও বিতরণে শিক্ষক মণ্ডলী নিবেদতি থাকবেন এটাই জাতি প্রত্যাশা করে।
তিনি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান সিমাবদ্ধ না রেখে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি আরো মনযোগী হবার জন্য শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, তরুন প্রজন্ম আমাদের মূল্যবান মানবসম্পদ। তাদের হাত ধরে দেশ আগামীতে এগিয়ে যাবে। এই যুব সমাজ ছিলো মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় শক্তি। আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পর দীর্ঘদিন ধরে পরাজিত শক্তি তরুনদের নানাভাবে বিপথগামী করার চেষ্টা করেছে। তরুন প্রজন্ম যাতে মুুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে সেদিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবার আহ্বানও জানান তিনি।
সুন্দরবন এবং বঙ্গোপসাগর নিয়ে গবেষণা করার জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
একই সঙ্গে দেশে শিক্ষিতের হার বাড়রেও শিক্ষার গুণগত মান বাড়েনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শিক্ষার মান বাড়াতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করে বলেন, তবেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা আরও এগিয়ে যাবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, খুলনা অঞ্চলে রয়েছে জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগর। এ দুটি নিয়ে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান, বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান, বক্তৃতা করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ফায়েক উজ্জামান।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার খান আতিয়ার রহমান।
এর আগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তনে যোগ দিতে বেলা আড়াইটার দিকে হেলিকপ্টারযোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করেন রাষ্ট্রপতি।
এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের উদ্বোধনফলক উন্মোচন করেন।
বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি কনভোকেশন শোভাযাত্রাসহ মূল সমাবর্তন অনুষ্ঠানের প্যান্ডেলে আসেন। রাষ্ট্রপতির মঞ্চে উপস্থিতির পরপরই জাতীয় সঙ্গীত ও পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠ করা হয়।
বেলা তিনটা আট মিনিটে রাষ্ট্রপতি সমাবর্তন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরবতীতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য কর্মসূচি পালিত হয়।
সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এর আগে তিনি গ্রাজুয়েটদের মাঝে ডিগ্রি প্রদান করেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের ২৫ বছর পূর্তিতে রজত জয়ন্তীর বছরব্যাপী উৎবের উদ্বোধন করেন।
নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৫:৫৭ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৫, বুধবার
এমআরআর
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur