সারাদেশ

শিক্ষকদের হাতে অভিভাবক মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন

কক্সবাজার সদর উপজেলায় এক ছাত্রের অভিভাবকের হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছেন শিক্ষকরা। ওই অভিভাবকের অপরাধ সন্তানের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়া, পূর্ব ঘোষণা ছাড়া ভর্তি ফি ও মাসিক বেতন বৃদ্ধির কারণ জানতে চাওয়া। এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এদিকে, এই ঘটনায় সদরের খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পরে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় তিন শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে।

সোমবার নির্যাতনের শিকার অভিভাবক আয়াত উল্লাহর স্বজন বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় এ মামলাটি করেন। তবে সুনির্দিষ্ট করে বাদীর নাম জানায়নি।

মামলায় যাদের নাম এসেছে তারা হচ্ছেন, খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক, শিক্ষক নজিবুল্লাহ, নুরুল হক, স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি এনামুল হক ও সদস্য মুস্তাক। এছাড়া আর ১০-১২ জনকে করা হয়েছে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার আয়াত উল্লাহর ছেলে শাহরিয়ার নাফিস আবির খরুলিয়া কেজি অ্যান্ড প্রি-ক্যাডেট স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র। সে প্রথম শ্রেণিতে এ-প্লাস না পাওয়ার বিষয়ে জানতে রবিবার সকাল ১০টার দিকে প্রধান শিক্ষক বোরহান উদ্দিনের কাছে যান আয়াত উল্লাহ।

এসময় পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভর্তি ও মাসিক বেতন কেন বাড়ানো হয়েছে সে বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জানতে চাইলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে পাশের খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হককে ডেকে আনেন বোরহান উদ্দিন।

একপর্যায়ে জহিরুল হক এসব প্রশ্ন কেন করা হচ্ছে বলে আয়াত উল্লাহকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর দড়ি দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালান শিক্ষকরা।

খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক বলেন, আয়াত উল্লাহ আমাদের স্কুলের ছাত্র ছিলেন। বেয়াদবি করায় তাকে এমন শাস্তি দেয়া হয়েছে। এমনকি আর কোনো দিন ‘বেয়াদবি করবে না’ মর্মে মুচলেকায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অন্য অভিযুক্ত শিক্ষক বোরহান উদ্দিনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

সদর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রঞ্জিত কুমার বড়ুয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ওই অভিভাবকের বাড়ি যায় এবং পরে তারা থানায় মামলা করেন।

অন্যদিকে, কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নোমান হোসেন প্রিন্স ঘটনাস্থল ও অভিভাবকের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। (বিডি প্রতিদিন)

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৬:০৫ পিএম, ৮জানুয়ারি ২০১৮, সোমবার
এএস

Share