Home / সারাদেশ / শিক্ষকদের কষ্ট দেখার কি কেউ নেই?
শিক্ষকদের কষ্ট দেখার কি কেউ নেই

শিক্ষকদের কষ্ট দেখার কি কেউ নেই?

আমরা করব জয়, আমরা করব জয়… একদিন…। আহা বুকের গভীরে আছে প্রত্যয়, আমরা করব জয়..একদিন…। গানটি ভেসে আসছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে। কুয়াশা মোড়া পৌষের শীতের সকাল, মিঠে রোদ খেলছে পুরো শহীদ মিনার জুড়ে। সেখানেই খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন হাজার হাজার শিক্ষক। দাবি আদায়ে তারা অনড়, পালন করছেন আমরণ অনশন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গতকাল (শনিবার) থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা। গতকাল প্রথম দিন শেষে আজ (রোববার) দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে এ অনশন।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে গান, স্লোগান। ‘আমাদের দাবি, আমাদের দাবি, মানতে হবে, মানতে হবে’-এমন স্লোগানের সঙ্গে গলা মেলাচ্ছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। তেমনি একজন গোপালগঞ্জ থেকে এসে অনশন করছেন কান্তিবানিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবাদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘শীত ও কুয়াশার মধ্যে রাত কাটিয়েছি এখানে (শহীদ মিনারে)। সারারাত ঠান্ডা লেগেছে। কুয়াশার মধ্যে শুধু পলিথিন বিছিয়ে আমরা ঘুমিয়েছি। দাবি আদায়ে অনশন পালনে ক্ষুধায়, ঠান্ডায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। খোলা আকাশের নিচে অবস্থানরত এসব শিক্ষকদের কষ্ট দেখার কি কেউ নেই?’

পলিথিন বিছিয়ে শহীদ মিনারের পাশে তখনও শুয়ে ছিলেন পূর্ণবতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়কজন শিক্ষক। তাদের মধ্যে ওলিউল্লাহ রহমান, বাইজিদ আহমেদ, কামল হোসেন, মনির হোসেনসহ আরও ককেজন শিক্ষক বলেন, ‘না খেয়ে, শীতের রাতে খোলা আকাশের নিচে রাত্রি যাপন করায় আমাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। এখানে হাজার হাজার শিক্ষক খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন। দাবি আদায়ে আজ আমরা বাধ্য হয়েছি অনশনে। আমাদের এমন করুণ দৃশ্য কি সংশ্লিষ্টদের চোখে পড়ছে না?’

বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের উদ্যাগে এই অনশন কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার শিক্ষকরা যোগ দিয়েছেন। তারা এক দফা দাবি আদায়ের এ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।

শিক্ষকরা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন। আগের বেতন স্কেলগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা বেতন পেতেন। কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ব্যবধান তিন ধাপ। এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। আর প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১০তম গ্রেডে। সহকারী শিক্ষকরা এই বৈষম্য নিরসনে প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ পরের গ্রেডে ১১তম গ্রেডে বেতন চান তারা।

এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক ফ্রন্টের সভাপতি খালেদা আক্তার বলেন, সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে আমাদের দাবির কথা জানিয়েছি। আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, কিন্তু তা পূরণ করা হয়নি। দাবি পূরণ করা ছাড়া আমরা শহীদ মিনার ছেড়ে যাব না।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১ : ৩০ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭, রোববারs
এইউ