Home / উপজেলা সংবাদ / শাহরাস্তি / শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জে কৃষি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি করে মাছের ঘের তৈরি
কৃষি

শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জে কৃষি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রি করে মাছের ঘের তৈরি

শাহরাস্তি হাজিগঞ্জ উপজেলায় কৃষি জমি মাটি বেকু দিয়ে কাটার মহাউৎসব চলছে বিক্রি হচ্ছে ইটভাটায় অন্যদিকে ফসলি জমি নষ্ট করে মাছের খের তৈরি করছে অবৈধ ভাবে কিছু অসাধু লোক। এরা প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়েই প্রতিনিয়তই কৃষি জমির মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি করে যাচ্ছে আর অন্যদিকে বড় বড় প্লট কয়েক একর নিয়ে ফসলে জমি নষ্ট করে মাছের ঘের তৈরি করছে অসাধু লোকেরা। আর দেশে এর কারণে দিন দিন কৃষি জমির ফসল করার আবাদ কমে যাচ্ছে। এদিকে শাহারাস্তি উপজেলার কাচাঁমাল কৃষি জমির টপ সয়েল খ্যাত এ মাটি। এ সকল কৃষি জমির মাটি কেটে নেয়ায় উল্লেখযোগ্য হারে ধান উৎপাদনকৃত শত শত একর কৃষি জমি অনাবাদি পড়ে আছে। স্থানীয় ক্ষুদ্র কৃষক ও জমির মালিকরা জানায়, একশ্রেনীর মাটি খেকো দালালরা কৃষি মাঠের মাঝখানে ২/১ জন জমির মালিককে মোটা অংকের অর্থের লোভ দেখিয়ে জমির মাটি বিক্রি করছে । অনেক অসাধু ব্যবসায়ী দিনের বেলা বেকু বন্ধ করে রাখে আর রাতে চালায় এসব বেকু যেন প্রশাসন না বুঝতে পারে তাদেরকে ফাঁকি দিয়েই এসব বেকু দিয়ে চালায় এবং মাটি বিক্রি করছে ইটভাটা অন্যদিকে কয়েক একর ফসলি জমি বিনষ্ট করে মাছের ঘের তৈরি করছে ওই অসাধু ব্যবসায়ীরা সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় শাহারাস্তি উপজেলার পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড চিকোরিয়া মাস্টার বাড়ির পাশে এক একর কৃষি জমি খনন করে মাটি বিক্রি করছে ইট বাটায় আর তৈরি করছে মাছের অসাধু ব্যবসায়ী বেকর মালিক মোহাম্মদ মাসুদ বেপারী , ও মোঃ শাহাদাত ভূঁইয়া এরা ফসলি জমি নষ্ট করে প্রতিনিয়ত মাটি বিক্রি করছে ইট বাটায় আর খনন করে মাছের ঘের তৈরি করছে । এদিকে এলাকার কয়েকজন কৃষক জানিয়েছে তারা অবৈধ ট্রাক্টর দিয়ে প্রতিনিয়ত মাটি বিক্রি করছে যদিও শাহাদাত মাস্টারের জমি এই ফসলি জমিতে ধান উৎপাদন হত।

অত্যাধুনিক ভেকু মেশিনের সাহায্যে এ সকল কৃষি জমির মাটি কেটে নেয়ায় জমিগুলো বড় বড় গর্তে পরিনত হয়। মাটি খেকো দালালরা পাশ্ববর্তী জমির মালিকদের বলেন, আপনারা এ জমির সমভাবে মাটি না কাটলে কৃষি জমির পানি থাকবেনা, ফসল উৎপাদন হবেনা। এভাবেই বুঝিয়ে যায় কৃষকদের। এভাবে শাহারাস্তি উপজেলায় সমানভাবে মাটি কাটার হিড়িকে একে একে সকল কৃষি জমির মালিক তাদের কৃষি জমির মাটি বিক্রি করে ফসলি কৃষি জমিগুলো ধ্বংস করছে।

শাহরাস্তি উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় শতাধিক কৃষি মাঠে মাটি খেকো দালালরা ভেকু মেশিন, টাক্ট্রর ও আইসার গাড়ীর সাহায্যে কৃষি জমি নিধন অভিযান অব্যাহত রেখেছে। দেখার যেন কেউ নেই, মাঝে মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকলেও মাটি খেকো দালালদের কৃষি জমির মাটি কাটা নিধন কমছে না।

এদিকে কৃষি মাঠ থেকে মাটি নিয়ে রাস্তায় উঠার জন্য, এ সকল মাটি খেকো দালালরা গ্রামীন সড়ক কেটে ড্রাইব্রেশন করে গ্রামীন জনপদের রাস্তাগুলো ধ্বংস করছে। সরকারের কোটি কোটি টাকা বরাদ্দকৃত গ্রামীন জনপদের এ সড়কগুলো মাটি খেকো দালালদের অভয়ারন্য ধ্বংসে পতিত হয়। স্থানীয় জনসাধারন সড়কের বেহাল দশার কারনে জনদুভোর্গ পোহাতে হয়।

এ সকল কৃষি জমির মাটি পারাপারে মাটি খেকো দালালরা সড়কে নিষিদ্ধ ঘোষিত ট্রাক্টর ও যন্ত্রদানব আইসার ব্যবহারে সড়কে ধুলাবালি, ভযাবহ দুর্ঘটনা ও প্রানহানির মত ঘটনা ঘটছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, কৃষি জমির মাটি কেনা কয়েকজনের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, কৃষি জমিগুলো ধান ক্ষেতের জন্য উপযোগী না হয়ে, বেশী উচুঁ হয়ে যাওয়ায়, জমির মালিকগণ আমাদের কাছে, জমির মাটি বিক্রি করছেন। পরবর্তী বৎসর ফসল করতে পারছেনা কৃষক । এ বিষয়ে শাহারাস্তি উপজেলার সহকারী ভূমি কমিশনার বলেন আমরা কৃষি জমি যেখানে খনন হচ্ছে একু দিয়ে এবং মাটি বিক্রি করছে সেখানেই আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি বেকু কৃষি জমি খনন করে যাচ্ছে এসব ভেকু আমরা জব্দ করেছি এবং গত রাতে একটি বেকু জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জরিপানা ও মামলাও করা হয়। কেউ যদি অন্যায় ভাবে এভাবে ফসলে জমি নষ্ট করে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা নিবো।

এদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলার পৌরসভার শেষ সীমানা শাহারাস্তি টামটা দুই সীমানার বরাবরে কুমিল্লা চাঁদপুর মহাসড়কের পাশে কয়েক একর নিয়ে অবস্থিত বেকু দিয়ে ফসলি জমি বিনিষ্ঠ করে এবং তৈরি করছে মাছের ঘের । সরা জমিনে গিয়ে দেখা যায় এসব ফসলের জমি নষ্ট করে মাছের ঘের তৈরি করছেন টামটাউন ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মানিক তিনি জনপ্রতিনিধি হয়েও নিজেই অবৈধভাবে বেকু লাগিয়ে মাছের ঘের তৈরি করছে কয়েক একর জমির ভিতরে ভেকু দিয়ে ফসলি জমি নষ্ট করে তৈরি করছে মাছের ঘের আর পুরো দায়িত্ব পালন করছে ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ রহিম। তারা দুজনে জনপ্রতিনিতি বেশি প্রভাব খাটিয়ে সরকারি লোকদের ম্যানেজ করে কৃষি জমি বিনষ্ট করে তৈরি করছে মাছের ঘের এ বিষয়ে ওয়ার্ড মেম্বার বলেন পুরো জমিটাই চেয়ারম্যানের মাছের ঘের তৈরি চেয়ারম্যান করছে। এটা আমার বিষয় না আমি দেখাশোনা করছি এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের ইউপি পরিষদে না থাকলেও তাকে ফোন দিল তার মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। জানা যায় চেয়ারম্যান পরিষদে আসেনি তেমন কারণ আওয়ামী লীগের সময় তিনি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের করায় পরিষদে দেখা যায়নি অনেকে জানিয়েছে। এলাকার অনেকে জানিয়েছে তারা তো সবাই বুঝে তাছাড়া সবকিছু ম্যানেজ করেই মাটি কাটছে বেকু দিয়ে তবে এই জমিতে ধান হত। তারা কৃষি জমি নষ্ট করে কেন যে মাছের ঘাড় তৈরি করছে জানিনা। এই জমি থেকে অনেক ফসল উঠতো। এদিকে শাহারাস্তি উপজেলা ও হাজিগঞ্জ উপজেলায় প্রতিনিয়তই বেকু দিয়ে ফসলে জমি নষ্ট করে মাটি কেটে কেউ মাছের ঘের তৈরি করছে আবার কেউ এসব মাটি বিক্রি করছে ইটভাটায়।
বেশ কয়েকজন ইটভাটার মালিকের সাথে আলাপকালে তারা জানায়, কিছু মাটিওয়ালা মাটি বিক্রি করছে, আমরা কিনছি, তারা মাটি কোথায় থেকে আনলো আমাদের কিছু যায় আসেনা। সচেতন মহল মনে করেন অচিরেই এ মাটি কাটার মহাউৎসব বন্ধ না হলে, খাদ্য সংকট, পরিবেশ বিপর্যয়, দরিদ্রর হার বৃদ্ধি সহ নানামুখী সংকটে পড়বে জনসাধারন। অনেকে জানিয়েছে সরকারি কিছু অসাধু লোকদের ম্যানেজ করে এসব বেকু চলছে এবং ফসলে জমি নষ্ট করছে।

এইসব অসাধুদের প্রশাসনিকভাবে আরো কঠোর হওয়া দরকার বলে মনে করেন এলাকার স্থানীয় কৃষকরা প্রশাসনের আরো কঠর হওয়া দরকার বলে মনে করেন সচেতন এলাকাবাসী।

প্রতিবেদক: এমকে এরশাদ, ১৯ মার্চ ২০২৫