চাঁদপুরের শাহরাস্তির লোটরা বাজার ইজারায় প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছেন এক ইজারাদার।
জানা যায়, নিজমেহার গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে ইজারা বঞ্চিত মোঃ ফারুক হোসেন, ইজারা প্রাপ্ত রাগৈ গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দীনের ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলামকে মূল বিবাদী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তারসহ ৮জনকে মোকাবিলা বিবাদী করে গত ১১ মার্চ তারিখে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৫৭/২০২২নং একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলা দায়ের করার পর তিনি ওই মামলায় নালিশী হাটের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রার্থণা করলে সহকারী জজ, শাহরাস্তি কোর্ট তা মঞ্জুর করেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার ১৪২৯ বাংলা সনের জন্য হাট-বাজার ইজারা আইনে লোটরা বাজারের গরুর হাট ইজারা দেয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর গত ১৩ মার্চ তারিখে ইসলামী ব্যাংক শাহরস্তি শাখায় ৭৫ হাজার টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে উক্ত ইজারায় দরদাতা হিসেবে অংশ গ্রহন করেন এবং ১৬ মার্চ তারিখে উক্ত পে-অর্ডারটি সিডিউলের সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে জমা প্রদান করেন।
এবিষয়ে বাদী মোঃ ফারুক হোসেন বলেন, আমি উক্ত সিডিউলে ২লক্ষ ৫০ হাজার টাকা লিপিবদ্ধ করে ৭৫ হাজার টাকা পে-অর্ডার করি। অন্যদিকে ২য় দরদাতা হিসেবে উক্ত মামলার মূল বিবাদী ২লক্ষ ৬ হাজার ২শত ৭৫ টাকা দর হিসেবে ৬৫ হাজার টাকার পে-অর্ডার করে সিডিউল জমা দেন। মামলার প্রথম মোকাবিলা বিবাদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার আমাকে না দেয়ার নিমিত্তে আমার দেয়া সিডিউল ফরমে ঘষামাজা করে আড়াই লক্ষের ৫কে শুন্য বানিয়ে ২ লক্ষ করেছেন। যা অত্যন্ত জালিয়তি ও প্রতারণার সামিল। একজন ইউএনও’র কাছে এতবড় দূর্নীতির শিকার হতে হবে তা কখনও বিশ্বাস করিনি। কিন্তু তিনি এই বিশ্বাসকে অবিশ্বাসে পরিনত করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, অবশ্যই তিনি মোটা অংকের ঘুষ গ্রহন করে এমন নেক্কারজনক কাজটি করেছেন। এই ধরনের দূর্নীতির জন্য তিনি জড়িতদের কঠোর বিচার প্রার্থণা করেন।
মূল বিবাদী মোঃ রফিকুল ইসলামের পক্ষে তার জামাতা সেন্টু মাষ্টার বলেন, আমরা সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে উক্ত ইজারা গ্রহন করি এবং গরুর হাটের হাসিল তুলেছি। নিষেধাজ্ঞার পত্র পেয়েছি কিন্তু ইউএনও আমাদেরকে হাসিল তোলার বিষয়ে না বলেন নি। যেকারনে আমরা গরুর হাটের হাসিল উত্তোলন করছি।
সরেজমিনে দেখা যায়, মামলার মূল বিবাদী গত ১৮ এপ্রিল রোববার সকালে লোটরা গরু বাজারে হাসিল তুলতে যায়। অন্যদিকে বাদী পক্ষ নিষেধাজ্ঞার পত্র নিয়ে হাজির হয় সেখানে। এতে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ উপস্থিত হন এবং উভয় পক্ষের কাগজ-পত্র দেখভাল করেন। এসময় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসীলদার শফিকুর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন এবং হাসিল গ্রহনের দায়িত্ব পালন করেন।
এবিষয়ে তহসীলদার শফিকুর রহমানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন এবং হাসিল গ্রহন করে তার অর্থ নিজ জিম্বায় রাখার অনুমোতি প্রদান করেছেন।
এসময় থানা পুলিশের কর্মরত অফিসার এসআই রোকনুজ্জামান বলেন, মামলা রয়েছে আদালতে। আপনারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি থেকে বিরত থাকুন। সরকারী কর্মকর্তার মাধ্যমে হাসিল উত্তোলন ও টাকা জমা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রদেয় মামলার রায় যিনি পাবেন তিনিই এই উত্তোলিত অর্থের মালিক হবেন। আইন-শৃংখলা বজায়ে রেখে গরুর হাটটি পরিচালিত করতে সহায়তা করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শাহরাস্তি প্রতিনিধি, ১৯ এপ্রিল ২০২২
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur