চাঁদপুরের শাহরাস্তির চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের পাথৈর গ্রামে মাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে তার ছেলে ও ছেলের স্ত্রী। এ ঘটনায় ছেলে সুমন মিয়াকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। ১৬ মার্চ মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় আহত মা সেনোয়ারা বেগম (৫৫) ও বাবা মো. আবুল হাশেমও (৬২) দুইজনই হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।
ইতোপূর্বে বেশ কয়েকবার পুত্র ও পুত্রবধূর হাতে মার খেয়ে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন এ দম্পতি। পরে সোমবার (১৫ মার্চ) শাহরাস্তি থানায় ভুক্তভোগী একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ছেলে সুমন মিয়া এবং ছেলের বউ জান্নাতের (২৫) বনিবনা হচ্ছিল না। গত শনিবার (১৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ৬টায় পারিবারিক বাদানুবাদের জেরে ছেলে তার মা সেনোয়ারা বেগমকে কিল ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন।
একপর্যায়ে সুমন দা দিয়ে মায়ের কপালের বাম পাশে আঘাত করলে তিনি আহত হন। এসময় সেনোয়ারা বেগম মাটিতে পড়ে গেলে ছেলের বউ তাকে রড দিয়ে পিটায় এবং গলা চেপে ধরে। স্ত্রীকে বাঁচাতে স্বামী মো. আবুল হাশেম এগিয়ে এলে তাকেও পিটানো হয়।
এ ব্যাপারে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেনোয়ারা বেগম বলেন, ‘ভরণপোষণ দেয়া তো দূরের কথা ছেলে ও ছেলের বউ প্রায়ই মারধর ও গালাগাল করে’।
সুমনের পিতা মো. আবুল হাশেম বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা থাকছে সে (সুমন)। আমার স্ত্রীর নামে থাকা জায়গা তাকে লিখে না দেয়ায় প্রায় সময়ই আমাকে ও তার মাকে মারধর করছে’।
তিনি আরোও বলেন, ‘২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর সুমন তার মা ও আমাকে মারধর করলে চিতোষী পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করি। চেয়ারম্যানের গ্রাম আদালতে উপস্থিত হয়ে সুমন প্রকাশ্যে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে হুমকি দেয়’।
এরপর ছয় মাস ধরে চেয়ারম্যান বিষয়টির কোনো সমাধান দিতে না পারায় ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি চেয়ারম্যান আমাদের ঊর্ধ্বতন আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে লিখিত প্রত্যয়নপত্র দেন। আল্লাহ যেন শত্রুকেও এমন সন্তান না দেন বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
শাহরাস্তি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মান্নান বলেন, মা সেনোয়ারা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে ছেলে সুমন মিয়াকে আটক করা হয়েছে। পরে আটককৃতকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চাঁদপুরে প্রতিনিধি,১৭ মার্চ ২০২১