শাহরাস্তিতে ব্যাংক এশিয়া গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে উধাও উদ্যোক্তা

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার মেহার কালীবাড়ি বাজারে অবস্থিত ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে উদ্যেগক্তা হৃদয় পাল।

সংবাদ পেয়ে ভুক্তভোগীরা এজেন্ট শাখায় এসে বিক্ষোভ করে। ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন জানান, তাদের সঞ্জয়পত্রের টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে এশিয়া ব্যাংকের কালিবাড়ী বাজারের শাখার এজেন্ট উদ্যোগক্তা হৃদয় পাল কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে।

এ বিষয়ে এশিয়া ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইতমধ্যে তদন্ত শুরু করেছেন।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, শাহরাস্তি ডিজিটাল পোস্ট অফিসের নতুন ভবনের কাজ শুরু হওয়ায় মেহার কালিবাড়ী বাজারে মহেন্দ্র পালের পাঁচ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় অস্থায়ীভাবে ব্যাংক এশিয়ার অফিসের একই কক্ষে বিগত কয়েক মাস ধরে শাহরাস্তি ডিজিটাল পোস্ট অফিসের কার্যক্রম চলে আসছে।

শাহরাস্তি ডিজিটাল পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মোঃ মজিবুর রহমান জানান, ব্যাংক এশিয়ার সাথে পোস্ট অফিসের উদ্যোক্তা চুক্তি রয়েছে সেই কারণে একই অফিসে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি জানান, আমার কাছে চেকের কোন কাজ নেই। সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে হলে (এম আই সি আর) অনলাইন চেক থাকতে হয়। ওই ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে আমাকে চেক জমা দিতে হয়। এই চেক কালেকশনের জন্য আমি প্রধান ডাক ঘরে পাঠাই।

তিনি জানান, ব্যাংক এশিয়া এমআইসিআর চেক দিতে পারে তাই এজেন্ট শাখায় গ্রাহকগন এ কাজটি করেছে। গ্রাহকদের অভিযোগ এজেন্ট হৃদয় পাল জালিয়াতির মাধ্যমে জাল রিসিটের মাধ্যমে টাকা গুলো তার নিজের একাউন্টে নিয়ে নেয়। পোস্ট অফিসের দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের গাফিলতিতে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে গ্রাহকরা অভিযোগ তোলেন।

বিষয়টি জানাজানি হলে গত বুধবার ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গ্রাহকদের ৪০ লাখ টাকা ২ ফেব্রুয়ারি ও ৫ ফেব্রুয়ারি ২০ লাখ টাকা করে ২ কিস্তিতে পরিশোধ করতে করবে বলে হৃদয় পাল অঙ্গীকার নামা দেয়। নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই হৃদয় তার স্বপরিবার নিয়ে উধাও হয়ে যায়।

বিষয়টি জানাজানি হলে ৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকাল থেকে গ্রাহকরা এজেন্ট শাখায় জড়ো হতে থাকে।

এসময় বেশ কয়েকজন দাবি করেন প্রায় কোটি টাকা অধিক অর্থ নিয়ে হৃদয় উধাও হয়ে যায়।

উপস্থিত গ্রাহকদের মধ্যে অফিস চিতোষীর মরিয়ম আক্তারের ১০ লাখ টাকা, নিজ মেহার গ্রামের আব্দুল মালেকের ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা, পদুয়া গ্রামের ইয়াছিনের ৫লাখ টাকা, কচুয়া উপজেলার সোরাইস গ্রামের সুচিত্রার ৬ লাখ টাকা, হাজেরা খাতুনের ৩ লাখ, ঝর্ণা আক্তারের ২ লাখ, রোজিনা বেগমের ২ লাখ, মামুন হোসেনের ১৫ লাখ, মোঃ জহির হোসেনের ৮ লাখ ২০ হাজার, সুরাইয়ার ২ লাখ ৫০ হাজার, সালেহা বেগমের ১৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে বলে তারা দাবি করেন।

এছাড়াও আরো কিছু সংখ্যক গ্রাহকের টাকা নিয়ে লাপাত্তা রয়েছে হৃদয়।

এশিয়া ব্যাংকের জেলা ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জানার পর তদন্ত চলছে। কতো টাকা নিয়ে হৃদয় জালিয়াতি করেছে তা তদন্ত শেষে বলা যাবে। গ্রাহকগন যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী প্রদক্ষেপ নেয়া হবে।

প্রতিবেদক: জামাল হোসেন,৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Share