শাহরাস্তি

শাহরাস্তিতে বৃদ্ধা আফিয়ার পাশে সাংসদ

শাহরাস্তিতে সুবিধা বঞ্চিত বৃদ্ধা আফিয়ার পাশে মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি, চৈত্রের রোদের সাথে বাড়ছে ক্ষুধার যন্ত্রণা। এদিক ওদিক তাকিয়ে শুধু অন্ধকার দেখেন আফিয়া। খাবারের সন্ধানে চাতক পাখির মতো চেয়ে আছেন। এমনি সময় একটি মুঠোফোন নিয়ে ছুটে আসেন শাহরাস্তি উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা মোঃ ইমরান মনির।

আফিয়ার দুর্দশার কথা জ্ঞাত হয়ে সাংসদ তাৎক্ষণিক সহায়তা পাঠিয়েছেন। চৈত্রের কাঠফাটা রোদ্রের মাঝে পরশ বুলিয়ে যাওয়া বৃষ্টির মতো অশ্রুর বান আফিয়ার দু’চোখে। শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জের অভিভাবক তার খোঁজ নিয়েছেন, এতেই আনন্দের অশ্রু প্রবাহিত হয় তার দু’চোখ বেয়ে।

শাহরাস্তি পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বাত্তলা গ্রামের হাজী বাড়ির আফিয়া (৬৩)। প্রতিদিনের মতো অনিশ্চয়তা নিয়ে যার দিনের শুরু। স্বামী গত হয়েছে প্রায় দেড় যুগ আগে। দারিদ্র্যপীড়িত সন্তানেরা নিজের ঘানি টানতেই হিমশিম খেতে হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ের মা তিনি। ছেলে ঢাকায় রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও এক দুর্ঘটনায় আজ সেও পঙ্গু। বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তার মেয়ে স্বামীর বাড়িতে। বছর কয়েক আগে মারা যান তার মেয়ের জামাই। বৃদ্ধ বয়সে সাংসারিক অনটনের সাথে যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিক করোনা সংকট।

ক্ষুধা-দারিদ্রক্লিষ্ট আফিয়ার প্রতিদিনের গল্প এটি। যা নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট দিলে বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অব.)রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের দৃষ্টিগোচর হয়। যে দেশের মানুষের মুক্তির জন্য জানবাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে, ৯ মাস যুদ্ধ করে উড়িয়েছিলেন লাল সবুজের পতাকা, সে দেশের মানুষের দুঃখ দুর্দশায় কেঁদে উঠে তার মন।

রাতেই উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা ইমরান মনিরকে খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দেন। সকালে নিজের ব্যক্তিগত তহবিল হতে নগদ ৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন ওই নেতার মাধ্যমে। নিজে ফোনে কথা বলেন আফিয়ার সাথে। সরকারি বরাদ্দে আফিয়ার ভিটায় নতুন ঘর করে দেয়ার ঘোষণা দেন। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি সব ধরণের ভাতার নিশ্চয়তা দেন আফিয়াকে।

জীবন সায়াহ্নে এসে এতো বড় প্রাপ্তিতে হু হু করে কেঁদে উঠে আফিয়া। তার কান্না কেউ থামাতে পারেনা। এলাকার সর্বোচ্চ অভিবাবকের এমন বদ্যান্যতার পর এ কান্না শুধুই প্রাপ্তির, শুধুই আনন্দের।

অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে বৃদ্ধা আফিয়া আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, দুনিয়ায় আমার পিতা-মাতা বেঁচে নেই। অভাবের কারণে আমার সন্তানরা আমার পাশে থাকতে পারছে না। আল্লাহ ফেরেশতার মতো স্যারকে আমার সাহায্যের জন্য পাঠিয়েছেন। তিনি যেন স্যারকে দীর্ঘায়ু করেন।

খবর পেয়ে ছুটে আসেন ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আঃ মমিন মোল্লা, সাবেক কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মোল্লা, সাবেক প্রচার সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা আবু সুফিয়ান প্রমুখ।

প্রতিবেদক:মোঃ জামাল হোসেন,৮ এপ্রিল ২০২০

Share