চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে ঘরের বাইরে মায়ের মরদেহ
তালা মেরে রেখেছে ঘরে, প্রবাসী ছেলের স্ত্রীকে ঢুকতে দেয়নি বাবাকে ।
ঘরের বাইরে শ্বাশুড়ির লাশ পরে থাকতে দেখেও দরজায় তালা মেরে শ্বশুরকে ঘরে ঢুকতে দিচ্ছেনা ছেলের স্ত্রী আফসানা।
এমন হৃদয় বিদাড়ক ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের দৈল বাড়ি গ্রামের প্রধানিয়া বাড়িতে।
স্থানীয়রা জানান, বাড়িতে স্ত্রী আফসানা আক্তার কে রেখে হাবিব উল্লার ছোট ছেলে মোঃ মীর হোসেন প্রবাসে পাড়ি দেয়। ১৭ ডিসেম্বর রোববার তার শ্বাশুড়ি মরিয়ম বেগম(৭৫) চাঁদপুর মারা যায়। পরের দিন ১৮ ডিসেম্বর সোমবার শ্বাশুড়ির লাশ নিয়ে বাড়ি আসলে মীর হোসেনর স্ত্রী আফসানা আক্তার শ্বশুরকে ঘরে প্রবেশ করতে না দিয়ে ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে ঘরের ভিতর অবস্থান করে।
বাড়ির আশেপাশের লোকজন ঘটনাটি শুনে এগিয়ে আসলে আফসানা কাহারো কথা না শুনে ঘর বন্ধ রাখে। এতে স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। ঘটনার সংবাদ পেয়ে শাহরাস্তি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো খায়রুল আলম ঘটনাস্থলে আসেন এবং একই সঙ্গে ইউনিয়ন চেযারম্যান মোঃ ফারুক দর্জি উপস্থিত হন। ঘটনা মীমাংসা করবে বলে স্থানীয়দের জানালে তারা শান্ত হন।
হাবিব উল্লাহ জানান, তার ৪ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। তিনি একমাত্র টিপ সই ব্যতিত পড়া লেখ জানেনা। তার মধ্য ছোট ছেলে মীর হোসেন ২০১৫ সালে তার নিকট হতে ৩ শতক ভূমি দাবি করে। সন্তানের কথা অনুযায়ী তিনি ৩ তিন শতক সম্পত্তি হেবা দলিলমুলে দান করেন। অক্ষর জ্ঞানহীনতার সুযোগে ছোট ছেলে মীর হোসেন বাবার সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি লিখে নেয়।
এই ঘটনার কিছু দিন যাওয়ার পর অপর তিন ছেলে ঘটনাটি জানতে পারে। এই ব্যাপারে ছোট ছেলে মীর হোসেনের বিরুদ্ধে সম্পত্তি নিয়ে জালিয়াতি করার দায়ে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেন।
মামলা নিষ্পত্তির জন্য ছোট ছেলে মীর হোসেন আমার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়ে পুনরায় আমাকে ২৩ শতক সম্পত্তি দলিল রেজিষ্ট্রির মাধ্য ফেরত দেয়। মীর হোসেন দলিল দিলেও মীর হোসেন ও তার স্ত্রী আফসানা আমাকে এবং তার মাকে ঘরে স্থান না দিয়ে বেদম মারদর করে বাড়ি থেকে বাহির করে দেয়।
অসহায় বৃদ্ধ বাবা মায়ের উপর এমন নির্যাতনের কথা শুনে অপর তিন সন্তান বাবা মাকে চাঁদপুরে নিয়ে আশ্রয় দেয়। এর মধ্যে ১৭ ডিসেম্বর রোববার রাতে মায়ের মৃত্যু হলে ১৮ ডিসেম্বর সোমবার সন্তানরা বাবাকে সহ মায়ের লাশ নিয়ে বাড়ি আসলে এমন মর্মাহত ঘটনা ঘটে। সন্তানরা মায়ের লাশ ঘরের বাহিরে রেখে প্রায় ৫ ঘন্টা অপেক্ষার পর দাফন শেষে বৃদ্ধ অসহায় বাবা হাবিব উল্লাহ (৮০) নিয়ে বাড়ি ছেড়ে অজানা স্থানে চলে যায়।
অপর দিকে প্রবাসীর স্ত্রী আফসানা জানান, এলাকার লোকজন ও তার অপরাপর ছেলেরা উত্তেজিত হয়ে তাড়িয়ে আসে। পরে আমি বাসার দরজা বন্ধ করে দিয়ে নিরাপত্তার আশ্রয় নিতে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ আসে।
প্রতিবেদক: মোঃ জামাল হোসেন,১৮ ডিসেম্বর ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur